ছবি: সংগৃহীত।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে বুধবার ম্যাচ নাইটদের। আর সেই ম্যাচের আগে বিশেষ ভাবে তৈরি হচ্ছেন সুনীল নারাইন। সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদকে হারানোর পরের দিন প্রথম একাদশের সদস্যেরা বিশ্রাম নিলেও নারাইনের ম্যাচ সিমিউলেশন ট্রেনিং চলে। যার অর্থ, ম্যাচের পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার অনুশীলন।
বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর থেকে নাইট জার্সিতে নামা হয়নি সুনীল নারাইনের। ১০ অক্টোবর শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। তার পরে আরও তিনটি ম্যাচ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ক্যারিবিয়ান স্পিনারকে খেলানোর ঝুঁকি নিতে পারেনি কেকেআর। তাঁর বিরুদ্ধে আরও এক বার অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের রিপোর্ট জমা পড়লে চলতি প্রতিযোগিতায় আর বল করতে পারতেন না তিনি।
তাই পুরনো কোচ কার্ল ক্রোর কাছে নিজের অ্যাকশন মেরামত করার পরে রবিবার তাঁকে ছাড়পত্র দেয় আইপিএলের ‘সাসপেক্ট বোলিং অ্যাকশন কমিটি’। তাঁর নাম তুলে নেওয়া হয় ‘ওয়ার্নিং লিস্ট’ থেকেও। রবিবার সকালে হায়দরাবাদ ম্যাচের আগেই নারাইনকে খেলানোর ছাড়পত্র পায় নাইট শিবির। কিন্তু অইন মর্গ্যান ম্যাচ শেষে জানিয়ে দেন, একশো শতাংশ ফিট ছিলেন না বিস্ময় স্পিনার।
আইপিএলে সুপার ওভারের নিয়ম
১) ম্যাচ টাই হলে সুপার ওভারের মাধ্যমে মীমাংসা হবে। ম্যাচে যে দল পরে ব্যাট করবে, তারা সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করতে নামবে।
২) লিগ পর্যাের ম্যাচে প্রথম সুপার ওভারও যদি টাই হয়, তা হলে দ্বিতীয় সুপার ওভার হবে। এ ভাবে মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত সুপার ওভার চলতে থাকবে। তবে ম্যাচ শেষ করার নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলে আর সুপার ওভার হবে না। দু’দলের মধ্যে পয়েন্ট ভাগ করে দেওয়া হবে।
৩) প্রথম সুপার ওভারে যে ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যাবেন, তিনি দ্বিতীয় সুপার ওভারে নামতে পারবেন না। একই ভাবে প্রথম সুপার ওভারে যে বোলাররা বল করবেন, তাঁরা দ্বিতীয় সুপার ওভারে বল করতে পারবেন না।
৪) প্লে-অফ ম্যাচের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সুপার ওভার টাই হলে যদি আর সুপার ওভার হওয়ার সময় না থাকে তা হলে লিগ পর্যায়ে দু’দলের মধ্যে যার বেশি পয়েন্ট ছিল, তাকে জয়ী ঘোষণা করা হবে।
নারাইনকে তাই ম্যাচ ফিট করে তোলার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে নাইট শিবিরে। অ্যাকশন পরিবর্তন করার কারণে প্রায় আট দিন ব্যাটে হাত দেননি নারাইন। কী করলে তাঁর অ্যাকশন বৈধতা পাবে অথচ বলের ধারও কমবে না, সেই উপায় খুঁজে গিয়েছেন স্পিন বোলিং পরামর্শদাতা ক্রোর সঙ্গে। সোমবার ফের ব্যাট হাতে আবির্ভাব ঘটে নারাইনের। আসন্ন ম্যাচগুলোয় তাঁকে বিস্ময় স্পিনারের পাশাপাশি ফিনিশারের ভূমিকায় দেখা যায় কি না, প্রশ্ন থাকছে।
আরও পড়ুন: বাটলারের ৭০, চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে দাপটে ৭ উইকেটে জিতল রাজস্থান
কিন্তু নারাইন খেলবেন কার জায়গায়? গত ম্যাচে মোট পাঁচ উইকেট পেয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিয়ে গিয়েছেন লকি ফার্গুসন। কিন্তু ছন্দে নেই প্যাট কামিন্স। মর্গ্যানের কপালে ভাঁজ ফেলতে পারে আন্দ্রে রাসেলের চোটও। আরসিবি-র বিরুদ্ধে তাঁর খেলা নিয়ে প্রশ্ন জোরালো হতে শুরু করেছে। ব্যাট হাতেও ব্যর্থ রাসেল। ৯ম্যাচে তাঁর রান ৯২। একমাত্র ডেথ ওভারে বল হাতে সফল। রাসেল যদি চোটের জন্য বল করতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে পরিবর্ত হিসেবে নারাইনকে খেলানোর সিদ্ধান্ত কেকেআর নেয় কি না, সেটাই দেখার। অন্য দিকে ফার্গুসনের মতো বৈচিত্রময় বোলারই খুঁজছিল কেকেআর। যাঁর হাত থেকে ধেয়ে আসবে বিষাক্ত ইয়র্কার, বাউন্সার ও স্লোয়ার। ম্যাচ শেষে ফার্গুসন জানিয়ে দেন, সুপার ওভারে ওয়ার্নারকে ফেরানোর ডেলিভারিই তাঁর কাছে ম্যাচের সেরা মুহূর্ত।
আরও পড়ুন: ধোনির ব্যক্তিগত রেকর্ডের দিনে এ বারের আইপিএলে লজ্জার রেকর্ড চেন্নাইয়ের
তিনি বলেছেন, ‘‘সুপার ওভারের শুরুতেই ওয়ার্নারকে ফেরানোর মুহূর্তটা আমার কাছে বিশেষ। এত দিন পরে ম্যাচ খেলতে নেমে ভাবতে পারিনি এতটা ভাল পরিসংখ্যান নিয়ে শেষ করব।’’ আরসিবি-র বিরুদ্ধে তাঁকে বসিয়ে নারাইনকে খেলানোর যৌক্তিকতাও নেই। তবে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বল হাতে প্যাট কামিন্সের ছন্দ। বিশ্বের এক নম্বর পেসারকে বসিয়ে নারাইনকে খেলানো হবে কি না, তা সময়ই বলবে।