মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বনাম রোহিত শর্মা
টিম-গাইড: মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
রোহিতের নেতৃত্বে ব্যাটিং: উপরের দিকের ব্যাটিং খুবই শক্তিশালী। ‘মাসল্ম্যান’ না হয়েও ছক্কার রেকর্ড দুরন্ত রোহিতের। আইপিএলের ইতিহাসে সব চেয়ে বেশি ছক্কা মারার তালিকায় চতুর্থ তিনি। ক্রিস গেল, এবি ডিভিলিয়ার্স, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির পরেই স্থান। আইপিএলের সফলতম অধিনায়কও তিনি। চার বার ট্রফি জিতেছেন। রোহিত জানিয়ে দিয়েছেন, ওপেন করবেন। সম্ভবত তাঁর সঙ্গী হবেন দক্ষিণ আফ্রিকার সীমিত ওভারের নতুন অধিনায়ক কুইন্টন ডি’কক। নাইট রাইডার্স থেকে যোগ দেওয়া ক্রিস লিনের জন্য হয়তো এখনই দরজা খুলবে না। তিন নম্বরে সূর্যকুমার যাদবও বেশ সফল।
একাধিক অলরাউন্ডার: কুড়ির ক্রিকেটে এত সফল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কারণ তাদের দলে রোহিতের মতো ব্যাটসম্যান-অধিনায়কের পাশাপাশি সফল সব অলরাউন্ডার আছে। একই সঙ্গে কায়রন পোলার্ড (আইপিএলে বল হাতেও যথেষ্ট কার্যকরী), হার্দিক ও ক্রুণাল পাণ্ড্যকে পাওয়া স্বপ্নের সংগ্রহ। চোট সারিয়ে ফিরছেন হার্দিক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেরফানে রাদারফোর্ডও আছেন।
বুম বুম বোলিং: দুনিয়ার সেরা টি-টোয়েন্টি বোলার রয়েছে মুম্বইয়ের ঘরে। যশপ্রীত বুমরা। বিশেষ করে শেষের দিকে বুম বুম বুমরার ইয়র্কার দলের সম্পদ। লাসিথ ‘স্লিঙ্গা’ মালিঙ্গার অভাব অনুভব করবে দল। তবে ট্রেন্ট বোল্ট ভরসা দিতে পারেন। নিউজ়িল্যান্ডের বাঁ-হাতি সুইং বোলার শেষের দিকের ওভারেও কার্যকরী। ৮ কোটি টাকায় মুম্বই কিনেছে নেথান কুল্টার-নাইলকে। তিনি ব্যাটিংও করতে পারেন। গতির জন্য থাকছেন মালিঙ্গার পরিবর্তে আসা জেমস প্যাটিনসন, পুরনো সৈনিক মিচেল ম্যাক্লেনাঘান। ভারতীয় পেসারদের মধ্যে আছেন ধবল কুলকার্নি, উঠতি প্রতিভা মহসিন খান।
কী নেই: মুম্বইয়ের অস্ত্রাগারে নেই কোনও অভিজ্ঞ স্পিনার। ভরসা বলতে ক্রুণাল পাণ্ড্যর বাঁ-হাতি স্পিন এবং রাহুল চাহারের লেগস্পিন। আমিরশাহির পিচে স্পিন ধরলে এই খামতি রোহিতদের ভোগাতে পারে। এ ছাড়া ভারতের ২০১৯ বিশ্বকাপ ধাঁধার মতোই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের চার নম্বরে কে নামবেন, পরিষ্কার নয়। ঝাড়খণ্ডের তরুণ উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ইশান কিষানের মতো কাউকে চেষ্টা করা হতে পারে। অথবা ভারতীয় পেসার খেলিয়ে ক্রিস লিন এবং ডি’কক দু’জনকেই নামাতে হবে।
কোচের দলে কারা: মাহেলা জয়বর্ধনে (হেড কোচ), জাহির খান (পরামর্শদাতা), শেন বন্ড (বোলিং কোচ), রবিন সিংহ (ব্যাটিং কোচ), জেমস পামেন্ট (ফিল্ডিং কোচ)।
সম্ভাব্য দল: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), কুইন্টন ডি’কক, সূর্যকুমার যাদব, ইশান কিষান, কায়রন পোলার্ড, ক্রুণাল পাণ্ড্য, হার্দিক পাণ্ড্য, রাহল চাহার, জেমস প্যাটিনসন/মিচেল ম্যাক্লেনাঘান/নেথান কুল্টার-নাইল ও ট্রেন্ট বোল্ট।
আরও পড়ুন: অপেক্ষা এখন ক্রিকেট ফেরার, বলছেন সৌরভ
টিম গাইড: চেন্নাই সুপার কিংস
অভিজ্ঞ, বয়স্ক ব্যাটিং: চেন্নাই সুপার কিংসের জন্য বড় ধাক্কা সুরেশ রায়নার ফিরে যাওয়া। এখনও পর্যন্ত আইপিএলের সর্বোচ্চ রানস্কোরারের তালিকায় বিরাট কোহালির পরেই দ্বিতীয় স্থানে রায়না। উপরের দিকের ব্যাটিংয়ে যেমন অভিজ্ঞতা রয়েছে, তেমনই সব বয়স্ক ক্রিকেটার। যে কারণে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দলকে ‘ড্যাড্স আর্মি’ বলা হয়। মুরলী বিজয়, শেন ওয়াটসন, অম্বাতি রায়ডুরা আম্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে। এমনকি, ধোনিও শেষ ম্যাচ খেলেছেন গত বছর জুলাইয়ে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে। প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ম্যাচের বাইরে থাকা প্রভাব ফেলে কি না, সেটাই দেখার।
ধোনির অধিনায়কত্ব: এখনও সিএসকে-র ব্রহ্মাস্ত্র। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করা ধোনির উপরে সকলের নজর থাকবে। উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে মগজাস্ত্রের প্রয়োগে খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারেন। এই ‘ড্যাড্স আর্মি’ নিয়েই গত বারও ফাইনালে খেলেছেন তাঁরা। ব্যাট হাতে ফিনিশারের জাদুও দেখার অপেক্ষায় ভক্তরা।
বোলিং: চেন্নাইয়ের শক্তি তাদের স্পিন বোলিং বিভাগ। ৬.৫ কোটিতে কেনা পীযূষ চাওলা, দক্ষিণ আফ্রিকার ইমরান তাহির এবং নিউজ়িল্যান্ডের মিচেল স্যান্টনার। দুবাইয়ে সাতটি ম্যাচ খেলবে চেন্নাই, যেখানে স্পিনারেরা বেশি সুবিধা পেতে পারে। শেষের দিকের ওভারের বিশেষজ্ঞ ডোয়েন ব্র্যাভো থাকছেন। কোভিড সারিয়ে ফেরা দীপক চাহার নতুন বলের দায়িত্বে।
কী নেই: রায়না না থাকায় উপরের দিকে বাঁ-হাতির সুবিধা নেই। স্যাম কারেন বা রবীন্দ্র জাডেজাকে দিয়ে কাজ চালাতে হবে। হরভজন সিংহের অনুপস্থিতি স্পিন বিভাগে বড় ধাক্কা। ভাল বিদেশি পেসারও নেই। দীপক চাহার, শার্দূল ঠাকুরের মতো ভারতীয় মিডিয়াম পেসাররাই ভরসা। ধোনি এবং জাডেজাকে বাদ দিলে শেষের ওভারে ‘বিগ হিটার’ কম।
কোচের দলে কারা: স্টিভন ফ্লেমিং (হেড কোচ), মাইক হাসি (ব্যাটিং কোচ), এল বালাজি (বোলিং কোচ), এরিক সিমন্স (বোলিং পরামর্শদাতা), রাজীব কুমার (ফিল্ডিং কোচ)।
সম্ভাব্য দল: শেন ওয়াটসন, মুরলী বিজয়/ফ্যাফ ডুপ্লেসি, অম্বাতি রায়ডু, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, কেদার যাদব, রবীন্দ্র জাডেজা, ডোয়েন ব্র্যাভো, মিচেল স্যান্টনার/ইমরান তাহির, দীপক চাহার, পীযূষ চাওলা, শার্দূল ঠাকুর/স্যাম কারেন।