শারজা দেখল ব্যাঙ্গালোরের দাপট। ছবি-সোশ্যাল মিডিয়া।
শারজায় 'বিরাট' জয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের। কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ৮২ রানে হারাল বিরাট কোহালির দল।২০ ওভারে ব্যাঙ্গালোর করেছিল ২ উইকেটে ১৯৪ রান। রান তাড়া করতে নেমে কেকেআর থেমে গেল ১১২ রানে।
শারজার পিচ ছিল মন্থর। বল ব্যাটে এসেছে ধীরগতিতে। টাইমিংয়ে সমস্যা হচ্ছিল ব্যাটসম্যানদের। এ রকম পিচে এবি ডিভিলিয়ার্স খেললেন ৩৩ বলে ৭৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। তাঁর ইনিংসে সাজানো ছিল পাঁচটি চার ও ছটি ছক্কা। তিনি জ্বলে ওঠায় ব্যাঙ্গালোর স্কোর বোর্ডে লড়াই করার মতো রান তুলল। আর এই রানের জবাব দিতে নেমে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়ল কলকাতার। শুভমান গিল (৩৪), আন্দ্রে রাসেল (১৬) ও রাহুল ত্রিপাঠী(১৬) ছাড়া দু' অঙ্কের রান করতে পারলেন না কেউ। অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হল দু' বারের চ্যাম্পিয়নদের।
অন্য ব্যাটসম্যানরা যখন রান করতে বেগ পেয়েছেন, তখন ব্যতিক্রম ডিভিলিয়ার্স। এক সময়ে কলকাতার বোলারদের বিরুদ্ধে রানের গতি বাড়াতেই পারছিলেন না বিরাট কোহালিরা। পিচের সুবিধা নিচ্ছিলেন নাগারকোটি, বরুণ চক্রবর্তীরা।তখন মনে হয়েছিল ব্যাঙ্গালোর শিবির খুব বেশি রান তুলতে পারবে না। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা ক্রিজে আসার পরেই চিত্রনাট্য বদলে যায়। এবিডি খুব সহজেই নাগারকোটি-কামিন্সদের মাঠের বাইরে পাঠালেন। ব্যাঙ্গালোর অধিনায়ক ও এবিডি ৪৯ বলে ১০০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। আর ওই দুরন্ত পার্টনারশিপই ব্যাঙ্গালোরকে পৌঁছে দেয় ১৯৪ রানে।
কলকাতার জন্য রীতিমতো কঠিন চ্যালেঞ্জ। ম্যাচ জিততে হলে শুরু থেকেই দ্রুতগতিতে রান তুলতে হত নাইটদের। সুনীল নারিনের বদলে আজ নেমেছিলেন টম ব্যান্টন। আইপিএলে তাঁর প্রথম ম্যাচ। নবদীপ সাইনির বল তাঁর ব্যাটে লেগে উইকেট ভেঙে দিল। মাত্র ৮ রানে ফেরেন ব্যান্টন। তিন নম্বরে নেমে নীতীশ রাণাও (৯) ব্যর্থ। ওয়াশিংটন সুন্দর বোল্ড করেন তাঁকে। ক্রিজে জমে যাওয়া শুভমন গিল (৩৪) রান আউট হলেন। চহালের গুগলিতে ঠকে গিয়ে বোল্ড হলেন কার্তিক (১)। ওয়াশিংটন সুন্দর ফেরালেন মর্গ্যানকে (৮)।রাসেলের ক্যাচ ফেলেন পাড়িকল। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার জীবন ফিরে পাওয়ায় অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন ঝড় তুলবেন রাসেল। কিন্তু মাত্র ১০ বলে দ্রুত ১৬ রান করে আউট হন তিনি। ম্যাচ জেতার ক্ষীণ আশাও শেষ হয়ে যায় তখন।
আরও পড়ুন: আইপিএলের আঙিনায় বিহু নাচ, অহমিয়া রিয়ানের সেলিব্রেশন
ক্যাপ্টেন হিসেবে ধুরন্ধর ক্রিকেট মস্তিষ্কের পরিচয় দেন কোহালি। ম্যাচ যত গড়াবে পিচ হয়ে যাবে ততই মন্থর, টসের সময়ে শারজার ২২ গজ দেখে এই উপলব্ধি হয়েছিল কোহালির। সেই কারণে কোহালি প্রথমে ব্যাটিং নিয়েছিলেন। শুরুটা আক্রমণাত্মক মেজাজেই করেছিলেন ব্যাঙ্গালোরের দুই ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ও দেবদত্ত পাড়িকল। প্যাট কামিন্সের প্রথম ওভার থেকে ৮ রান নেয় ব্যাঙ্গালোর। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার প্রথম ওভার থেকে আসে ১১ রান। কামিন্স দ্বিতীয় ওভারে দেন ৮ রান। কৃষ্ণার দ্বিতীয় ওভারে ১০ রান ওঠে। কামিন্স অবশ্য নিজের তৃতীয় ওভারে রানের গতি কমান। মাত্র ৪ রান আসে সেই ওভারে।
ষষ্ঠ ওভারে আন্দ্রে রাসেল উইকেট নিতে পারতেন। অ্যারন ফিঞ্চের ক্যাচ ফেলেন নাগারকোটি। রাসেলই অবশ্য প্রথম আঘাত হানেন ব্যাঙ্গালোর শিবিরে। পাড়িকলকে (৩২) বোল্ড করেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। শারজার মন্থর পিচের সুযোগ নিয়ে ব্যাঙ্গালোরের রানের গতি কমান কলকাতার বোলাররা। অ্যারন ফিঞ্চকে (৪৬) ইয়র্কারে বোল্ড করেন কৃষ্ণা। কিন্তু ডিভিলিয়ার্স অন্য রকম কিছু ভেবেছিলেন। প্রথম ১০ বলে ১০ রান করেছিলেন তিনি্। তার পরেই গিয়ার পরিবর্তন করেন। নাগারকোটি, অভিজ্ঞ কামিন্সকে খুব সহজেই মাঠের বাইরে ফেললেন। কোহালি নিজের চেনা ছন্দে ধরা দেননি। কিন্তু বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেন। ডিভিলিয়ার্সকে স্ট্রাইক দিয়ে যান তিনি। কোহালি শেষ পর্যন্ত ২৮ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত থেকে যান। মাত্র একটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। তাতে অবশ্য ক্ষতি কিছু নেই। ম্যাচের রং বদলে দেন একা ডিভিলিয়ার্সই। চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে শূন্য রান করেছিলেন তিনি।মানসিক কষ্টে ছিলেন। এ দিন তার প্রায়শ্চিত্ত করলেন এবিডি।