IPL 2020

বিরাটদের বিদায়, সহজ জয় হায়দরাবাদের

২০ ওভারে ব্যাঙ্গালোর করে ১৩১ রান। ৬ উইকেট বাকি থাকতেই জয়ের রান তুলে নেয় হায়দরাবাদ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আবু ধাবি শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২০ ১৭:৫৪
Share:

উইলিয়ামসনের ব্যাটে জয় হায়দরাবাদের। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

আরও একটা প্লে অফ। আরও একবার ভাগ্য বিপর্যয় বিরাট কোহালির। এবারেও আইপিএল ট্রফি অধরাই থেকে গেল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের। এলিমিনেটরে ব্যাঙ্গালোরকে ৬ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে পৌঁছে গেল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। সেখানে তাদের সামনে দিল্লি ক্যাপিটালস। অথচ এক সময় টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল হায়দরাবাদের। সেখান থেকে তাদের ফিরে আসা। শেষ ম্যাচে জিতে লিগ টেবিলে ৩ নম্বরে উঠে এসেছিলেন তারা। ঋদ্ধিমান সাহার দুরন্ত ইনিংস এখনও তাজা ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে।

Advertisement

শুক্রবারের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে যদিও ঋদ্ধিকে ড্রেসিংরুমে রেখেই নামতে হয়েছিল ডেভিড ওয়ার্নারদের। ৪ ম্যাচে ২১৪ রান তুলে ওপেনিংয়ে বড় ভরসা হয়ে উঠেছিলেন দলের। কিন্তু ভাগ্য সহায় হল না তাঁর। চোটের জন্য ছিটকে যেতে হল এলিমিনেটরের ম্যাচ থেকে। তাঁর বদলে দলে জায়গা পান বাংলার আরেক উইকেটকিপার শ্রীবৎস গোস্বামী। এ দিন ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও তাঁর দলের জন্যই তোলা ছিল জয়ের হাসি।

আবু ধাবিতে টস জিতে ব্যাঙ্গালোরকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় হায়দরাবাদ। বড় রান করতে ব্যর্থ হয় ব্যাঙ্গালোর। শুরু থেকেই উইকেট পড়তে থাকে তাদের। ২০ ওভারে ব্যাঙ্গালোর করে ১৩১ রান। ৬ উইকেট বাকি থাকতেই জয়ের রান তুলে নেয় হায়দরাবাদ।

Advertisement

রান তাড়া করতে নেমে যদিও শুরুটা ভাল হয়নি ওয়ার্নারদের। ঋদ্ধির পরিবর্তে নামা শ্রীবৎসকে প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন মহম্মদ সিরাজ। কোনও রানই করতে পারেননি শ্রীবৎস। মণীশ পান্ডেকে নিয়ে ইনিংস গড়তে শুরু করেন ওয়ার্নার। তবে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই তাঁকেও ফেরান সিরাজ। শরীর ছুড়ে ক্যাচ নেন এবি ডি’ভিলিয়ার্স। তবে বল ওয়ার্নারের গ্লাভস ছুঁয়েছে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নিলে তিনি আউটের সিদ্ধান্ত জানান। ওয়ার্নার ফিরলে হায়দরাবাদের রান তোলার দায়িত্ব নেন মণীশ (২৪)। যদিও বেশিক্ষন সেই কাজ তাঁকে করতে দেননি অ্যাডাম জাম্পা। ১৪ বলে ৭ রান করে ফেরেন প্রিয়ম গর্গও।

দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন কিউয়ি অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। তাঁর সঙ্গী হন জেসন হোল্ডার। দু'জনে মিলে ধীর গতিতে হলেও রান তুলতে থাকেন প্রতি ওভারেই। যুজবেন্দ্র চহালের শেষ বলে ছয় মেরে ম্যাচের মোড় নিজেদের দিকে ঘোরান উইলিয়ামসন। রানের লক্ষ্য বড় ছিল না। ধীরে সুস্থে দলকে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে দিলেন তিনি। ৬৫ রানের পার্টনারশিপ গড়েন উইলিয়ামসন (৪৪ বলে ৫০ রানে অপরাজিত) এবং হোল্ডার (২০ বলে ২৪ রানে অপরাজিত)। ৪ উইকেট হারিয়ে ২ বল বাকি থাকতেই জয়ের জন্য ১৩২ রান তুলে নেয় হায়দরাবাদ।

মরণবাঁচন ম্যাচে জাম্পাকে দলে নিয়েছিলেন বিরাট। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে ১ উইকেট তুলে নেন তিনি। বেগুনি টুপির দৌড়ে থাকা চহাল তাঁর ৪ ওভারে নিলেন মাত্র ১ উইকেট। রান দিয়েছেন ২৪। সিরাজ ২ উইকেট নিলেও ডেথ ওভারে ব্যর্থ হন। তাঁর ৪ ওভারে সিরাজ দেন ২৮ রান।

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যাঙ্গালোরের দুই ওপেনারকেই শুরুতে ফিরিয়ে দিয়ে ধাক্কাটা দিয়েছিলেন হোল্ডার। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই বিরাটের উইকেট তুলে নেন তিনি। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিরাটের ক্যাচ নেন শ্রীবৎস গোস্বামী। মাত্র ৬ রানে ফিরতে হয় বিরাটকে। অ্যারন ফিঞ্চ এবং এবি ডি’ভিলিয়ার্স ছাড়া কোনও ব্যাটসম্যানই রান করতে পাননি।

অন্য ওপেনার দেবদত্ত পাড়িকলও এদিন ব্যর্থ। মাত্র ১ রান করেন তিনি। ব্যাঙ্গালোর দলে এদিন ফিরলেন ফিঞ্চ। যদিও তিনি ওপেন করেননি। বিরাট ফিরলে মাঠে নেমে ছিলেন তিনি। ডি’ভিলিয়ার্সকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন ফিঞ্চ (৩০ বলে ৩২ রান)। ফিঞ্চকে ফেরান শাহবাজ নাদিম। বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি মইন আলিও। ফ্রি হিটের বলে রান আউট হয়ে তিনি ফেরেন কোনও রান না করেই। রশিদ খানের ডিরেক্ট থ্রোয়ে ফিরতে হয় তাঁকে।

সেখান থেকে দলের হাল ধরে ছিলেন অভিজ্ঞ ডি’ভিলিয়ার্স। একদিকে যখন একের পর এক উইকেট পড়ছে, তখন ঠাণ্ডা মাথায় দলের খাতায় রান যোগ করতে থাকেন তিনি। ৩৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন ডি’ভিলিয়ার্স (৫৬)। ১৮তম ওভারে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করতে গিয়ে তিনি ফেরেন নটরাজনের বলে। রান পেলেন না শিবম দুবেও। তরুণ শিবম ফেরেন ১৩ বলে ৮ রান করে। ওয়াশিংটন সুন্দরও (৫) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ক্রিজে।

হায়দরাবাদের হয়ে বল হাতে একের পর এক উইকেট নিতে থাকেন হোল্ডার। তিনি শেষ করলেন ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে। এদিন উইকেট না পেলেও তাঁর ৪ ওভারে মাত্র ২২ রান দেন রশিদ। ২ উইকেট নিয়ে এদিনের ম্যাচে নজর কাড়লেন নটরাজন। তাঁর ৪ ওভারে তিনি দিলেন ৩৩ রান। ডি’ভিলিয়ার্সের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটও তাঁরই দখলে।

ইতিমধ্যেই প্রথম কোয়ালিফায়ার জিতে ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। অন্যদিকে হেরে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের দিল্লি ক্যাপিটালস। তাদের খেলতে হবে আজকের ম্যাচের জয়ী হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে। সেই ম্যাচের বিজয়ীর সঙ্গে ফাইনালে মুখোমুখি হবে মুম্বই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement