কলকাতার উইকেট নেওয়ার পরে মুম্বই ক্রিকেটারদের উচ্ছ্বাস। ছবি- সোশ্যাল মিডিয়া।
প্রথম ম্যাচে হেরে গেলে কলকাতা নাইট রাইডার্স। এটাই প্রথম ম্যাচ কলকাতার। একাধিক বিভাগে উন্নতির এখনও দরকার রয়েছে কলকাতার। টুর্নামেন্ট যত গড়াবে, নাইটরাও খেলায় নিশ্চয় আরও উন্নতি ঘটাবে। এ দিন দেখা গেল না রাসেল-ম্যানিয়া। আকাশছোঁয়া দরে কলকাতা শিবিরে আসা প্যাট কামিন্সও ম্যাজিক দেখাতে পারলেন না। উল্টে ব্যাট হাতে কলকাতার বোলারদের শাসন করলেন মুম্বই অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তাঁর বিস্ফোরক ৫৪ বলে ৮০ রানের সৌজন্যে ২০ ওভারে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স করে ৫ উইকেটে ১৯৫ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে কলকাতা করে ৯ উইকেটে ১৪৬ রান। চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে প্রথম ম্যাচেই হেরে গিয়েছিল মুম্বই। এ দিন কলকাতাকে ৪৯ হারিয়ে প্রথম জয় পেল রোহিতের দল।
বুধবার আবু ধাবিতে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন কলকাতা অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক। একটা সময়ে মুম্বই এত মসৃণ ভাবে এগোচ্ছিল, তাতে মনে হচ্ছিল চার বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নরা হয়তো ২২০-র কাছাকাছি পৌঁছে যাবে। কিন্তু মাভির বলে রোহিত আউট হওয়ার পরে মুম্বইয়ের রান তোলার গতি কমে যায়। কিন্তু ১৯৫ রানও কম নয় টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে। আর এই রান তাড়া করার সময়ে শুরু থেকে যে গতিতে রান তুলতে হয়, তা পারেনি কলকাতা। কলকাতার ওপেনার শুবমান গিলকে (৭) শুরুতেই ফেরান বোল্ট।প্যাটিনসনকে মারতে গিয়ে আউট হন সুনীল নারিন (৯)।কার্তিক ও নীতীশ রাণা ইনিংস গোছানোর কাজ করছিলেন। রাহুল চহারের বলে এলবিডব্লিউ হন কার্তিক (৩০) । নীতীশ রানা ফেরেন ২৪ রানে।এক ওভারে লেগ কাটারে রাসেল (১১) ও অফ কাটারে মর্গ্যানকে (১৬) আউট করে ম্যাচের রাশ রোহিতের হাতে তুলে দেন বুমরাহ। বল হাতে হতাশ করলেও ব্যাট করতে নেমে প্যাট কামিন্স ১২ বলে ৩৩ রান করেন। মারেন চারটি ছক্কা। তিনি মারমুখী ব্যাটিং করায় কেকেআর-এর রান কিছুটা ভদ্রস্থ দেখায়।
মুম্বইও শুরুটা ভাল করেনি। ওপেনিংয়ে রোহিতের সঙ্গী কুইন্টন ডি কক (১) শুরুটা ভাল করতে পারেননি। দ্বিতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারায় মুম্বই। কিন্তু রোহিত শুরু থেকেই ছন্দে ছিলেন। কলকাতার হয়ে প্রথম ওভার করতে আসা সন্দীপ ওয়ারিয়রে্র শেষ বলে ছক্কা হাঁকান রোহিত। কুইন্টন ডি কক ফেরার পরে আবু ধাবি দেখে সূর্যের ঝলকানি।
তিনে নামা সূর্যকুমার যাদব ও রোহিত শর্মা মুম্বইয়ের ইনিংস গোছানোর কাজটা শুরু করেন। ওয়ারিয়রের দ্বিতীয় ওভারে আগ্রাসী ব্যাটিং করেন সূর্যকুমার যাদব। তিনটি বাউন্ডারি মারেন তিনি। অন্যদিকে রোহিত প্যাট কামিন্সকে পুল করে দু' বার মাঠের বাইরে পাঠান। নির্দয় হয়ে ওঠেন সুনীল নারিন, কুলদীপ যাদবদের উপরেও। ওভার যত গড়াতে থাকে রোহিত ও সূর্য ততই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন। কলকাতার বোলাররা সেই সময়ে কামড় বসাতে পারেননি। সেই সুযোগ নেন মুম্বইয়ের রোহিত ও সূর্যকুমার। সূর্যকুমার রান আউট হন ৪৭ রানে। দু' জনের ৯০ রানের পার্টনারশিপে মুম্বইকে শক্ত ভিতের উপরে দাঁড় করিয়ে দেয়। সূর্যকুমার ফেরার পরে রোহিত স্বমহিমায় ধরা দেন। কলকাতার বোলারদের ইচ্ছামতো মাঠের বাইরে ফেলেন।রোহিতের ইনিংসে সাজানো ছিল ছ'টি ছক্কা। আইপিএলে দুশোটা ছক্কা হাঁকানো হয়ে গেল হিটম্যানের।
মুম্বইয়ে মারকুটে ব্যাটসম্যানের আধিক্য। কিন্তু সৌরভ তিওয়ারি (২১),হার্দিক পাণ্ড্যরা (১৮) দ্রুত গতিতে্ রান তুলতে না পারায় মুম্বই দুশো রানের গণ্ডি পেরোতে পারেনি। কলকাতার বোলারদের মধ্যে মাভি নজর কাড়েন। চার ওভার হাত ঘুরিয়ে ৩২ রানের বিনিময়ে দুটি উইকেট নেন তিনি। প্যাট কামিন্স বল হতাশ করেছেন। অধিনায়ক কার্তিক অবশ্য কামিন্স ও মর্গ্যানের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, “মর্গ্যান ও কামিন্স আজই কোয়রান্টিন পর্ব শেষ করেছে। ফলে মাঠে নেমে এই গরমের মধ্যে দারুণ কিছু করে ফেলা ওদের পক্ষে সম্ভব নয়।’’ পরের ম্যাচগুলোর দিকে এখন তাকিয়ে কার্তিক।
আরও পড়ুন: প্রথম ম্যাচের আগে কেকেআরকে শুভেচ্ছা মমতার