Dinesh Kartik

ছাঁটাই কার্তিক, কলকাতার অধিনায়ক এখন অইন মর্গ্যান

শুক্রবার রাতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে অধিনায়ক বদলে ফেলল কলকাতা নাইট রাইডার্স।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২০ ১৪:২৪
Share:

কেকেআরের ক্রমাণ্বয়ে ব্যর্থতার সময়েই কার্তিকের বদলে মর্গ্যানকে অধিনায়ক করার দাবি উঠেছিল।

শুক্রবার রাতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে অধিনায়ক বদলে ফেলল কলকাতা নাইট রাইডার্স। দীনেশ কার্তিককে ছাঁটাই করে নতুন অধিনায়ক করা হল ইংল্যান্ডের বিশ্বজয়ী দলের অধিনায়ক অইন মর্গ্যানকে। কেকেআরের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, কার্তিক নিজেই মর্গ্যানের হাতে অধিনায়কের ব্যাটন তুলে দিয়েছেন। তবে আইপিএলের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির ছাঁটাইয়ের যা অতীত ইতিহাস, তাতে এটা স্পষ্ট যে, দীনেশকে ‘বাধ্য’ই করা হয়েছে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিতে। এই সিদ্ধান্তের ফলে আরও একবার প্রমাণিত হল যে, ফ্র্যাঞ্চাইজিদের নির্মম এবং নির্মোহ দুনিয়ায় ব্যর্থতার কোনও জায়গা নেই।

Advertisement

টুর্নামেন্টের মাঝপথে অধিনায়ক বদলের উদাহরণ আইপিএলে আরও আছে। ২০১৮ সালে দিল্লির অধিনায়কত্ব থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছিল গৌতম গম্ভীরকে। সেই গম্ভীর, যিনি দু’বার কলকাতাকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। তাঁর জায়গায় দিল্লির অধিনায়ক করা হয়েছিল শ্রেয়স আইয়ারকে। গম্ভীরকে তার পর টিমেই রাখা হয়নি। অতঃপর ভারতের বিশ্বকাপজয়ী দলের এই সদস্য ক্রিকেট থেকেই অবসর নিয়ে নেন। ২০১৭ সালে আইপিএল শুরু হওয়ার মাত্রই একমাস আগে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে সরিয়ে রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টসের অধিনায়ক করা হয়েছিল অস্ট্রেলীয় স্টিভ স্মিথকে।

কেকেআরের ক্রমাণ্বয়ে ব্যর্থতার মধ্যেই কার্তিকের বদলে মর্গ্যানকে অধিনায়ক করার দাবি উঠেছিল। মর্গ্যান এই বছরেই আবার কেকেআরে ফিরেছেন। এর আগে তিনি ২০১০ সালে খেলেছিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর দলে। ২০১১ থেকে ২০১৩ খেলেছিলেন কেকেআরে। ২০১৪ সালে তিনি আইপিএল খেলেননি। ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে খেলেছিলেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে খেলেছিলেন কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে। ২০১৯ সালে তিনি আইপিএল খেলেননি। কিন্তু অধিনায়কত্ব করবেন এই প্রথম।

Advertisement

পক্ষান্তরে, কার্তিক কেকেআরের অধিনায়ক হয়েছিলেন ২০১৮ সালে। সেবার তাঁর নেতৃত্বে কেকেআর প্লে-অফ খেলেছিল। ২০১৯ সালে কেকেআর আইপিএল সারণিতে পঞ্চম স্থানে শেষ করে। এ বছর প্রথম থেকেই কার্তিকের নিজের ফর্ম এবং তাঁর অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বস্তুত, গতবছর দলের তারকা ব্যাটসম্যান আন্দ্রে রাসেলকে ব্যাটিং অর্ডারে পরে নামানো নিয়ে নাইটদের সংসারে যথেষ্ট অশান্তিও হয়েছিল। ক্ষুব্ধ রাসেল নিজেই ওই বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন। এ বারেও সুনীল নারাইনকে দেরিতে বল করতে আনা বা রাহুল ত্রিপাঠির ব্যাটিং অর্ডার ক্রমাগত বদলানো নিয়ে সমালোচনায় পড়েছেন কার্তিক। এ বার ব্যাটে তাঁর ফর্মও তেমন আহামরি নয়। লিগ টেবিলে আপাতত কেকেআর ৪ নম্বরে। এখনও পর্যন্ত ৭টি ম্যাচের ৬টিতে তিনি ব্যাট করেছেন। তার মধ্যে ৫টিতেই ব্যর্থ। একমাত্র পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ম্যাচে তিনি ৫৮ রান করেছিলেন। সেটিই আপাতত তাঁর সর্বোচ্চ। শেষ ম্যাচে ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে করেছেন ২ বলে ১ রান। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ২০২০-র আইপিএলে কার্তিকের মোট রান ১০৮। গড় ১৫.৪২। অন্যদিকে, মর্গ্যান এখনও পর্যন্ত করেছেন ১৭৫ রান। সর্বোচ্চ ৪৪। গড় ৩৫। স্ট্রাইক রেট ১২৯.৬২। যা সবদিক দিয়েই কার্তিকের চেয়ে এগিয়ে।

আরও পড়ুন: প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে নেমে গেল বোঝালেন তিনিই ‘বস’

নিছক অধিনায়কত্বের সাফল্যেও মর্গান কীর্তিকের চেয়ে কয়েক যোজন এগিয়ে। গতবছর তিনি ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন করেছেন। টি-২০ ক্রিকেটেও তিনি ইংল্যান্ডের অধিনায়কত্ব করেছেন। বিশ্বকাপ ফাইনালেও তুলেছিলেন। যদিও ইডেনে সে ম্যাচে ওযেস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে গিয়েছিল মর্গ্যানের দল। তবুও সবদিক দিয়ে বিচার করলে তিনি ধারে এবং ভারে কার্তিকের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। এখন দেখার, কেকেআরের দায়িত্ব নিয়ে মর্গ্যান কতটা সফল হন। আইপিএলে এখনও ৭টি ম্যাচ খেলা বাকি কেকেআরের। এর মধ্যে শুক্রবারই মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচ। যারা গতবারের চ্যাম্পিয়ন। এ বছরেও ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলছে। অতএব, প্রথম ম্যাচেই অধিনায়ক মর্গ্যানের অগ্নিপরীক্ষা।

আরও পড়ুন: ভারতে পা রাখলেন লাল হলুদের নয়া কোচ ফাওলার, আজই যাচ্ছেন গোয়া

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement