এ বারের আইপিএলে দাপট দেখাচ্ছেন ক্যারিবিয়ানরা। ছবি: এএফপি, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ফেসবুক পেজ থেকে।
আইপিএলে ঝংকার তুলছে ক্যালিপসো। ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটাররা মনে করিয়ে দিচ্ছেন সেই ‘মিডাস রাজা’কে।
ক্লাইভ লয়েড, স্যর ভিভ রিচার্ডসের উত্তরসূরিরা যা ধরছেন, তাতেই এখন ফলাচ্ছেন সোনা। বুধবার রাতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কায়রন পোলার্ড ৩১ বলে ৮৩ রানের ইনিংস খেলে আরও একবার প্রমাণ করে দিয়েছেন ক্রিকেটের কনিষ্ঠতম ফরম্যাটে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের ছেড়ে দিলে তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে সেরা খেলাটাই।
অতীতে টেস্ট হোক বা ওয়ানডে, সব ফর্ম্যাটেই একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এখন টি টোয়েন্টির যুগ। ক্যারিবিয়ানরা পিছিয়ে গিয়েছে টেস্ট ও ওয়ানডে ফর্ম্যাটে। তার পরিবর্তে টি টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দাপট বেড়েছে। রিচার্ডস, মার্শালরা চিরকালই ক্রিকেটকে উপভোগ করে এসেছেন। হার-জিতের থেকে মনের আনন্দে, দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার জন্যই খেলতেন তাঁরা। সেই কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটারদের গোটা ক্রিকেটবিশ্ব অন্য নজরে দেখত।
আরও পড়ুন: কলকাতা শিবিরে নতুন নাইট, নর্তিয়েরের বিকল্প অজি পেসার
আরও পড়ুন: শরীর নিংড়ে নিচ্ছে আইপিএল, বিমানন্দরের মাটিতে ক্লান্ত ধোনির ঘুমের ছবি তুলছে প্রশ্ন
যুগ বদলে গিয়েছে। টি টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটাররা খোলা মন নিয়ে খেলতে নামছেন। সহজাত ক্রিকেট তুলে ধরছেন এবং সর্বোপরি ক্রিকেট উপভোগ করছেন। যার ফলে তাঁরা তুলে ধরছেন মারকাটারি পারফরম্যান্স। কলকাতা নাইট রাইডার্সে এখনও পর্যন্ত সুপারহিট আন্দ্রে রাসেল। ৬ ম্যাচে ২৫৭ রান করে ফেলেছেন নাইট অলরাউন্ডার। সমীকরণ যতই কঠিন হোক না কেন, রাসেলের মুখে চোখে টেনশনের কোনও ছাপ নেই। ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে চলেছেন রাসেল। তাই অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারছেন সহজেই। বুধবার ওয়াংখেড়েতে একই রকম সহজাত ক্রিকেট তুলে ধরলেন পোলার্ড। পেশিবহুল চেহারা পোলার্ডের। আপাতদৃষ্টিতে দেখলেই ভয় লাগতে পারে। কিন্তু, অদ্ভুত রকমের শান্ত তিনি। চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে সুরেশ রায়নার অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরেছিলেন পোলার্ড। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে গতকাল খাদের কিনারা থেকে ম্যাচ জেতালেন তিনি।
গত ৬ এপ্রিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ক্যারিবিয়ান পেসার আলজারি জোসেফ চমকে দিয়েছেন সবাইকে। শ্রীলঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গার পরিবর্ত হিসেবে তাঁকে নেওয়া হয়েছিল। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে অভিষেক ম্যাচেই জোসেফ মাত্র ১২ রানে তুলে নেন ছ’টি উইকেট। ক্রিস গেলের শরীরে এখনও থাবা বসায়নি বয়স। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে ২০১৩ সালে ১৭৫ রানের অতিমানবিক ইনিংস খেলেন ‘ইউনিভার্স বস’। আইপিএলের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩০২টি ছক্কা মারার রেকর্ডও তাঁর দখলে। গেলের নামের পাশে রয়েছে ছ’টি সেঞ্চুরি হাঁকানোর রেকর্ড। গতকালও তিনি খেলেছেন মারমুখী ইনিংস। সুনীল নারাইন এখন আর শুধু স্পিনার নন। ওপেন করতে নেমে ঝোড়ো ব্যাটিং করতেও দক্ষ তিনি। চেন্নাই সুপার কিংসের ভারসাম্য রক্ষা করছেন ডোয়েন ব্রাভো। সব মিলিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটাররা সুগন্ধ ছড়াচ্ছেন এ বারের আইপিএলে।
(আইসিসি বিশ্বকাপ হোক বা আইপিএল, টেস্ট ক্রিকেট, ওয়ান ডে কিংবা টি-টোয়েন্টি। ক্রিকেট খেলার সব আপডেট আমাদের খেলা বিভাগে।)