কোটি কোটি টাকা খরচ করে আইপিএলে দলে নেওয়া হয়েছিল এই প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে। কিন্তু গোটা দু’য়েক ম্যাচ খেলার পরই প্রথম একাদশ থেকে কার্যত হারিয়ে যান। চলতি আইপিএলেও স্কোয়াডে রয়েছেন, কিন্তু প্রথম একাদশে সুযোগ হয়নি।
অসম্ভব প্রতিভাবান, ভারতীয় ক্রিকেটের পরবর্তী তারকা— এই রকম একাধিক বিশেষণের পরেও নাথু সিংহ নামের এক ক্রিকেটারের কেরিয়ার নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
তিনি শিরোনামে আসেন ২০১৬ সালের আইপিএল থেকে। আইপিএলে ৩ কোটি ২০ লক্ষে বছর কুড়ির তরুণ নাথুকে কিনেছিল মুম্বই। নিলামে এত দর ওঠায় চমকে দিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু একটিও ম্যাচে সুযোগ পাননি তিনি।
পরের বছর গুজরাত লায়ন্স তাঁকে ৫০ লক্ষে কিনে নেয়। কিন্তু দুই ম্যাচে ১ উইকেট নিয়ে আর প্রথম একাদশে জায়গা পাননি।
জয়পুরের কলোনিতে ছোট্ট একতলা টালির ঘরে থাকতেন নাথু। বাবা ছিলেন জয়পুরের এক কারখানার শ্রমিক। অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। কিন্তু একটা আইপিএল নিলাম বদলে দিয়েছিল জীবন।
সামান্য একটা টালির ঘর থেকে ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখেছিলেন নাথু। কিন্তু সেই স্বপ্ন যে এ ভাবে সফল হবে ভাবেননি রাজস্থানের পেসার। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে তিন কোটি ২০ লক্ষ টাকাটা ছিল স্বপ্নের মতোই।
ঘরে টেলিভিশন ছিল না। দেখতে পারেননি নিজের নিলামও। জানতেও পারেননি তাঁকে নিয়ে চলছে দর হাঁকাহাঁকি। জেনেছিলেন পরে। কর এবং অন্যন্য টাকা কেটে তাঁর হাতে এসেছিল দু’কোটি ৮০ লাখ টাকা।
টাকা পেয়ে প্রথমেই বিশাল একটি বাড়ি তৈরি করেন নাথু। কেনেন গাড়িও।
রাজস্থানের হয়ে রঞ্জি ট্রফিও খেলেছেন কয়েকটি ম্যাচে। ২০১৬ সালে রাজস্থানের হয়ে দিল্লির বিরুদ্ধে দলীপ ট্রফির একটা ম্যাচে ৮৭ রানে সাত উইকেট নেন নাথু।
১৫০ কিলেমিটারের কাছাকাছি গতিবেগে বল করতেন নাথু সিংহ। ম্যাকগ্রা ও দ্রাবিড় দু’জনেই বলেছিলেন, ভবিষ্যতে ভারতীয় দলের ফাস্ট বোলিংয়ের মুখ হতে পারেন নাথু৷ তবে ২০১৬ সালে চোটের জন্য খেলা থেকে সাময়িক ভাবে দূরে সরে যান।
আবারও ফিরেছেন খেলায়। চলতি আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের ১৫ জনের দলে রয়েছেন। তবে সুযোগ পাচ্ছেন না। ২০১৯ সালে ৩টি টি২০ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে সাত উইকেট পেয়েছেন তিনি।
“এক বছর সময় নষ্ট হয়েছে। আমি ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক রেখেছি। উজাড় করে সবটা দিয়ে ফিরতে চাই’’, সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি এমনটাই বলছেন নাথু। কিন্তু জাতীয় দলে আসাটা প্রায় অসম্ভব, এমনটাই বলছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।