ক্রিকেট তারকার মেয়ে, কিন্তু ক্রিকেটারদেরই পছন্দ করতেন না একেবারে। মা সুজান ইত্তিচেরিয়া ভারতের জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেললেও মেয়ে ক্রিকেটকে পেশা হিসাবে বেছে নেননি। বরং স্কোয়াশেই মাত করতে চেয়েছিলেন এই তরুণী।
এই তরুণী দেখেছিলেন, ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে ক্রীড়াজগতে বৈষম্য করা হয়। সব লাইমলাইট ক্রিকেটার উপরেই থাকে। তবে তিনি কখনওই ভাবেননি তিনি প্রেমে পড়বেন ভারতের জাতীয় দলের এক ক্রিকেটারের।
দীপিকা পাল্লিকাল নামের এই তরুণী ভারতের ‘স্কোয়াশ কুইন’। ক্রিকেটারের সঙ্গে প্রেম করায় বন্ধুরা তাঁকে খেপাতে শুরু করলেন। ওই ক্রিকেটারের বিনয়ী, পরিবারের প্রতি খেয়াল রাখার মানসিকতা ভাল লেগে যায় দীপিকার।
স্কোয়াশে চ্যাম্পিয়ন হলেও দীপিকা কিন্তু দক্ষিণ ভারতের একাধিক বিজ্ঞাপনের মডেলিংও করেছেন। দীপিকা বলেন, তিনি স্কোয়াশ তারকা না হলে অভিনেত্রী হতেন।
ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় লন্ডনে প্রথম আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নেন দীপিকা। মেধাবী এই ছাত্রী ইংরাজিতে স্নাতক। তবে ক্রিকেটার স্বামী নয়, বরং রজার ফেডেরারকেই আইকন হিসাবে দেখেন তিনি।
প্রথম মহিলা স্কোয়াশ তারকা হিসাবে ২০১২ সালে দেশের ক্রীড়াজগতের শ্রেষ্ঠ সম্মান অর্জুন পুরস্কার পেয়েছেন।
২০১৪ সালে দেশের চতুর্থ সেরা সম্মান পদ্মশ্রীতে ভূষিত হন তিনি। তবে তাঁর স্বপ্ন ‘ভারতরত্ন’ সম্মান পাওয়া, এমনটাই বলেন তিনি একটি সর্বভারতীয় দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে।
বিশ্বে মহিলাদের স্কোয়াশ র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ভারতীয় হিসাবে প্রথম ২০ ও পরে প্রথম ১০-এ জায়গা করে নেন তিনি।
সিলভার ইভেন্ট (টুর্নামেন্ট অব চ্যাম্পিয়নস)-এ ২০১২ সালে প্রথম ভারতীয় হিসাবে অংশ নেন তিনি। গোল্ড ইভেন্টের সেমি ফাইনালেও গিয়েছিলেন তিনি।
প্রতিবাদী হিসাবেও দীপিকা পরিচিত। ২০১২ থেকে ২০১৫ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি অংশ নেননি, কারণ মহিলা ও পুরুষ তারকাদের বেতনে বৈষম্য ছিল। ২০১৬ সালে তা ঠিক হয়, তিনি অংশ নেন এবং চ্যাম্পিয়ন হন।
দীপিকার সঙ্গে প্রথম এই ক্রিকেটারের আলাপ ম্যারাথনে অংশ নিতে গিয়ে। এ ছাড়াও একই ফিটনেসের কোচের কাছে প্রশিক্ষণ নিতেন দু’জন। জিমের বন্ধু হয়ে ওঠেন তাঁরা। সেই ক্রিকেটার কে জানেন?
তিনি নাইট অধিনায়ক এবং জাতীয় দলের তারকা দীনেশ কার্তিক। ২০১৩ সালে কানাডায় টুর্নামেন্ট জিতে ইংল্যান্ডে খেলতে যান দীপিকা, দীনেশ তখন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছিলেন। দীপিকাকে দেখতে নাকি ছুটে যান দীনেশ কার্তিক।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতে দীনেশ বিয়ের প্রস্তাব দেন দীপিকাকে। এর পর ২০১৫ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তাঁরা। খ্রিস্ট মত ও হিন্দু-তেলুগু মতেও বিয়ে করেন যুগল।
দীনেশের যদিও এটা দ্বিতীয় বিবাহ। তাঁর প্রথম স্ত্রী নিকিতা বানজারার সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায়, কারণ নিকিতা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন দীনেশেরই বন্ধু মূরলী বিজয়ের সঙ্গে। যদিও দীনেশ বা বিজয়, কিংবা দীপিকা এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি।