ঝুলন গোস্বামী, জাতীয় দলের ক্রিকেটার
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩০০-র উপর উইকেট তাঁর দখলে। পেয়েছেন পদ্মশ্রী, অর্জুনের মতো অনেক সম্মান। কিন্তু উইকেটের খিদেটা যে আগের মতোই আছে, তা আরও একবার প্রমাণ করেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামী।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ওয়ান ডে’তে জেতায় সিরিজ ভারতীয় মহিলা দলের পকেটে। ৪ উইকেট নিয়ে ৩৬ বছর বয়সি ঝুলনই ম্যাচের সেরা। এই বয়সে এক জন পেসারের সব চেয়ে বড় প্রতিপক্ষ বোধহয় ফিটনেস। আর সেখানেই নিজেকে প্রমাণ করে যাচ্ছেন ঝুলন। তবে এই সাফল্যের পিছনে যে হাড়ভাঙা পরিশ্রম রয়েছে, তা জানালেন ঝুলনের বোন ঝুম্পা গোস্বামী।
চাকদহের বাড়িতে বসে ঝুম্পা জানান, মঙ্গলবার সকালেই ঝুলনের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দিদি আমাকে গর্ব করে বলছিল, দেখছিস আমি কি রকম ফিটনেস তৈরি করেছি। দিদির কথা শুনে মনে হচ্ছিল, ওর আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার খবর পেয়ে খুব ভাল লাগছিল।’’
তবে ঝুলনের পরিশ্রম করার অভ্যাস বহু দিনের। চাকদহ থেকে ভারতীয় ড্রেসিংরুমের দুর্গম পথ পেরোতে কম ঘাম ঝরাতে হয়নি আটপৌরে পরিবারের মেয়েটাকে। চাকদহে বাড়ির সামনে এক ফালি উঠোন। সেখানেই খেলতে খেলতে এক দিন চাকদহ শহর ছেড়ে কলকাতার মাঠে পৌঁছে যাওয়া। অধিকাংশ দিন ভোরে সবাই যখন বিছানায় থাকত, কাঁধে ব্যাগ নিয়ে প্রশিক্ষণের জন্য বেরিয়ে পড়তেন ঝুলন। সেই পরিশ্রম আর প্রতিভার মিশেলই আগুন ঝরিয়েছে ২২ গজে।
ঝুম্পা বলেন, ‘‘অনেক লড়াই করে দিদি আজ এই জায়গায় পৌঁছেছে। দিদির আত্মবিশ্বাস আমার খুব ভাল লাগছে। আমরা সকলেই এখন তাকিয়ে আছি বিশ্বকাপের দিকে।” ঝরনা বলেন, ‘‘দেশের মেয়েরা বিশ্বকাপ নিয়ে আসুক। মা হিসাবে এটাই আমি চাইছি।” একই প্রার্থনা দেশের সব ক্রীড়াপ্রেমীর।
অভিজ্ঞ ঝুলন কিন্তু ধাপে ধাপেই এগোতে চাইছেন। তিনি ফোনে বলেন, ‘‘২০২১ সালে বিশ্বকাপ রয়েছে। মাঝে অনেক খেলা বাকি। এখন বিশেষ কিছু বলার নেই। একটাই লক্ষ্য, মাঠে গিয়ে ভাল খেলা।’’
তবে ‘চাকদহ এক্সপ্রেসে’র গতিরোধ করা যে সহজ হবে না, তা হাড়ে হাড়ে জানে তাঁর প্রতিপক্ষেরা।