প্রত্যয়ী: শীতল মস্তিষ্কে প্রতিপক্ষকে শেষ করাই পছন্দ বুমরার। ফাইল চিত্র
গুজরাতের হয়ে একটি ম্যাচে খেলছিলেন তিনি। গ্যালারিতে নিঃশব্দে বসা জন রাইট। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের স্পটার হিসেবে। সে দিনই তাঁকে সই করালেন রাইট। তার পর অবিশ্বাস্য উত্থান। সীমিত ওভারের ক্রিকেট থেকে টেস্টে এসে অসাধারণ সাফল্য। এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা ফাস্ট বোলার বলছেন অনেকে। বরাবর সংবাদমাধ্যম থেকে দূরে দূরে থাকা যশপ্রীত বুমরা অবশেষে ধরা দিলেন। রবিবার দুপুরে নিউজ়িল্যান্ডে যখন খেলছে ভারতীয় দল, আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকারে মনের কথা খুলে বললেন ভারতীয় দলের সেরা পেস বোলিং অস্ত্র।
প্রশ্ন: গত কয়েক মাসের এই অভাবনীয় সাফল্যের রহস্য কী?
যশপ্রীত বুমরা: আমি সব সময় নিজের উপর বিশ্বাস রেখে চলার চেষ্টা করি। যে কোনও পরিস্থিতিতে নিজেকে বলি, সফল হওয়ার যোগ্যতা তোমার আছে। আর যখনই আমার মনে সংশয় দেখা দেয়, ভাল দিনগুলো মনে করার চেষ্টা করি। আমার মনে হয়, আমার যে কোনও সাফল্যের পিছনে এই মানসিকতাটার একটা বড় ভূমিকা থাকে।
প্র: শুধু ওয়ান ডে বোলার হিসেবে দেখা হত আপনাকে। সেখান থেকে অবিশ্বাস্য সাফল্য লাল বলে। এই পরিবর্তন কী ভাবে সম্ভব হল?
বুমরা: আমার কাছে টেস্ট ক্রিকেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বরাবরই ছিল। দেশে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সময়ে আমি চার দিনের ম্যাচ খুব উপভোগ করতাম। রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ খেলতে আমার দারুণ লাগত। ভারতের হয়ে সাদা বলে ওয়ান ডে বা টি-টোয়েন্টি খেলার আগে আমি ভারত ‘এ’ দলের হয়ে চার দিনের ম্যাচ খেলেছিলাম। আমার সব সময়ই মনে হয়েছে, যদি ঘরোয়া ক্রিকেটে বা ‘এ’ দলের হয়ে চার দিনের ম্যাচে ভাল খেলে থাকতে পারি, তা হলে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও লাল বলে একই রকম সাফল্য পেতেই পারি। ইয়েস, কেন নয়?
পঞ্চপাণ্ডব: নতুন পেস ব্রিগেড সেরা হাতিয়ার ক্যাপ্টেন কোহালির। টুইটার
প্র: কোন ধরনের ক্রিকেটে সাফল্য বেশি আনন্দ দেয়?
বুমরা: আমি সব সময়ই টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চেয়েছি। এমনকি, ওয়ান ডে বা টি-টোয়েন্টি খেলে যখন বেশ সাফল্য পাচ্ছিলাম, তখনও মনের মধ্যে ঘুরত টেস্ট খেলার স্বপ্ন। কারণ আমার মতে, টেস্টই সর্বোত্তম ক্রিকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিরতির সময় আমি গুজরাতের হয়ে খেলে রঞ্জি ট্রফি জিতেছি। তার পরেই টেস্ট দলে সুযোগ পাই। রঞ্জিতে ভাল বল করার সেই অভিজ্ঞতাও টেস্ট ক্রিকেটের রাস্তায় অনেক আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে।
প্র: তিন ধরনের ক্রিকেটেই সেরা বোলার। কী করে একই সঙ্গে তিনটি ধরনের সঙ্গে মানিয়ে নিচ্ছেন?
বুমরা: তিনটি ধরনে খুব বেশি বদল ঘটাতে হয় বলে কিন্তু আমি মনে করি না। প্রধান জিনিস হচ্ছে ফিটনেস। এখনকার দিনে প্রচুর ক্রিকেট খেলতে হয়। তাই ফিটনেসের চুড়োয় থাকাটা বাধ্যতামূলক। আমি যখন শুরু করেছিলাম, ফিটনেস নিয়ে অতটা সচেতন ছিলাম না। আস্তে আস্তে বুঝতে শিখেছি এবং সেই মতো নিজেকে তৈরি করেছি।
প্র: টেনিসে ছিল বুম বুম বেকার। ক্রিকেটে এখন জনপ্রিয় স্লোগান— বুম বুম বুমরা। কতটা উপভোগ করছেন ভক্তদের এই ভালবাসা?
বুমরা: দেশের মানুষ ভাল খেলার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছেন দেখলে খুবই ভাল লাগে। তবে আমি মাঠের বাইরে কী চলছে তা নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাই না। যেমন প্রশংসা দেখেও খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ি না, তেমনই নিন্দা হলেও খুব প্রভাব পড়তে দিই না। সব সময় চেষ্টা করি, খেলাটার উপর মনঃসংযোগ রাখতে। নিশ্চয়ই ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রশংসা করছেন দেখে তৃপ্তি হয় কিন্তু সেই প্রশংসা দেখেও আমি নিজেকে বলার চেষ্টা করি— মনে রেখো যশপ্রীত, ক্রিকেট একটা খেলা। এখানে প্রত্যেক দিন ফলাফল পাল্টে যায়, তাই মতামতও প্রত্যেক দিন বদলে যায়। নিজের খেলায় মন দাও, প্রতিক্রিয়ায় নজর দিয়ো না।
প্র: ফাস্ট বোলার এবং খুব আগ্রাসী বোলিংও করেন। একই সঙ্গে খুব শান্ত, নিয়ন্ত্রিত দেখায় আপনাকে। কখনও ব্যাটসম্যানদের কাছে গিয়ে কোনও কথা বলতে দেখা যায়নি। চরিত্রের এই দু’টো দিক কী ভাবে রক্ষা করেন?
বুমরা: যখন খেলা শুরু করেছিলাম, তখন কিন্তু এ রকম ছিলাম না। শুরুতে আমি বল করার সময় খুব উত্তেজিত থাকতাম। আমি ব্যাটসম্যানের উদ্দেশে স্লেজিং করা, খারাপ কথা বলা বা গালাগাল দেওয়া পছন্দ করি না। আমার মনে হয়, আগ্রাসনটা থাকবে ইচ্ছাশক্তির তীব্রতায়। ভিতরে ভিতরে জ্বলবে আগুন। কিন্তু বাইরেটা রাখতে হবে বরফের মতো ঠান্ডা। না হলে ব্যাটসম্যানকে আউট করার পরিকল্পনা থেকে দূরে সরে যেতে পারি। ফোকাস নড়ে যেতে পারে। শুরুর দিকে আমি মেজাজ হারিয়ে ফেলতাম, মাঝেমধ্যে খুব রেগে যেতাম। তখন আমার বোলিং খারাপ হয়ে যেত। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমি মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখেছি। স্লেজিংয়ের দরকারটা কী! তোমার হাতে বল আছে, যা কথা বলার সে-ই বলবে!
প্র: আপনার অধিনায়ক বিরাট কোহালি-সহ সারা বিশ্ব মানছে, আপনিই এখন বিশ্বের সেরা বোলার। যদি একটা জিনিসকে বেছে নিতে হয় বিশ্বসেরা হয়ে ওঠার কারণ হিসেবে, কোনটাকে বেছে নেবেন?
বুমরা: নিজের প্রতি বিশ্বাস রেখে এগোনোকেই বেছে নেব। নিজে যদি নিজের উপর বিশ্বাস না রাখতে পারি, তা হলে কে রাখবে? আর একটা ব্যাপার হচ্ছে, আমি ফলের চেয়েও বেশি নজর দিই প্রক্রিয়ার উপরে। আমি মনে করি, প্রক্রিয়া যদি ঠিক থাকে, ফল আসবেই। যদি আমাকে বিশ্বসেরা হতে হয়, তা হলে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়ের মতো ট্রেনিং করতে হবে। তার মতো পরিশ্রম করতে হবে। তার মতো অনুশীলনে নিংড়ে দিতে হবে। শুধু মেডেলটা দেখলে হবে না, ঘাম-রক্তটাও তো ঝরাতে হবে।
প্র: ঘরোয়া ম্যাচে খেলতে খেলতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের স্পটার হিসেবে আসা জন রাইটের চোখে পড়া। সে দিনই চুক্তি সেরে ফেললেন রাইট। সেখান থেকে যশপ্রীত বুমরার অভাবনীয় উত্থান। সেই দিনটার দিকে এখন ফিরে তাকালে কী মনে হয়?
বুমরা: ২০১৩-তে আমি সৈয়দ মুস্তাক আলি খেলছিলাম। তখন জন রাইট স্যর আমাকে দেখে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে নিয়ে এসেছিলেন। সেই বছরে আমি খুব বেশি ম্যাচ খেলিনি। দু’টো ম্যাচই খেলেছিলাম। কিন্তু সচিন তেন্ডুলকর, রিকি পন্টিংয়ের মতো কিংবদন্তির সঙ্গে থাকতে পেরে অনেক কিছু শিখেছিলাম।
প্র: সচিন বা রিকির থেকে বিশেষ কিছু শিখেছিলেন?
বুমরা: হাতের সামনে এ রকম দু’জন কিংবদন্তিকে পাওয়াটাই তো সারা জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা। এর পর তাঁরা যদি আমার মতো আনকোরা ছেলেদেরও খোলাখুলি ভাবে বলতে থাকেন, কোন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে, বড় ম্যাচের আগে কী ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে, তা হলে আর কী চাই! আমার একটা অভ্যেস আছে। বড় কোনও ক্রিকেটার দেখলে তাঁর কাছে গিয়ে নানা রকম প্রশ্ন করতে থাকি। তাঁদের উত্তরগুলো আমার অনেক ধাঁধার সমাধান করে দিয়ে যায়। সচিন আর রিকি পন্টিংকেও অনেক জ্বালিয়েছি।
প্র: ভারত ছিল স্পিনের দেশ, ব্যাটসম্যানের দেশ। এখন তাদের হাতে চার ফাস্ট বোলার। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেস ব্যাটারির রেকর্ড ভাঙছেন আপনারা। কতটা উপভোগ করছেন এই গতির দৌড়?
বুমরা: দুর্দান্ত লাগছে। আমি কিন্তু ছোটবেলা থেকে পেস বোলিং নিয়েই মেতে থেকেছি। যখন ছোট ছিলাম, ভোরবেলায় উঠে টিভি-র সামনে বসে পড়তাম ফাস্ট বোলারদের দেখব বলে। এখন তাই নিজেরা একটা ফাস্ট বোলিং গ্রুপ হিসেবে ভাল করতে পারছি দেখে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। তবে আমরা কখনও কোনও রেকর্ড তাড়া করার কথা ভেবে খেলি না। ভারতীয় দলে আমাদের সকলের একটাই লক্ষ্য— দলের জন্য অবদান রাখা। দলকে এগিয়ে নিয়ে চলা। সম্পূর্ণ ফাস্ট বোলিং বিভাগ হিসেবে আমরা ভাল করতে চেয়েছিলাম, কারণ এক জন বা দু’জনের ব্যক্তিগত সাফল্য কখনও টিমকে জেতায় না। টিমের সাফল্য আসবে যদি ফাস্ট বোলিং গ্রুপ হিসেবে আমরা ধারাবাহিকতা দেখাতে পারি। চলার পথে এ রকম রেকর্ড হলে অবশ্যই বাড়তি প্রাপ্তি।
প্র: আর কয়েক মাস পরেই বিশ্বকাপ। স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছে?
বুমরা: ওই যে বললাম আপনাকে, আমি খুব বেশি দূরের কথা ভাবি না। এই মুহূর্তে আমার ভাবনায় থাকছে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হোম সিরিজ। জানি, বিশ্বকাপে আমাদের ঘিরে অনেক প্রত্যাশা থাকবে। তবে এত আগে থেকে বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবতে শুরু করে নিজের উপর চাপ বাড়াতে চাই না। আমাদের চেষ্টা করতে হবে প্রত্যাশা নিয়ে না ভেবে নিজেদের কাজে মনঃসংযোগ করা।
প্র: নানা মতের দেশ ভারত। সেখানে এই অন্য রকম অ্যাকশন নিয়ে বড় হওয়াটা কতটা কঠিন ছিল?
বুমরা: আমি যখন ক্রিকেট শুরু করছিলাম, একেবারে গোড়ার দিকে কেউ কেউ আমাকে অ্যাকশন পাল্টাতে বলেছিলেন। কিন্তু যখন এনসিএ (বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমি) বা এমআরএফে গিয়েছি, কেউ অ্যাকশন পাল্টাতে বলেননি। সে দিক দিয়ে আমি ভাগ্যবান। কোচেরা আমার শরীরকে আরও শক্তিশালী করার কথা বলেছেন। তবে এটা ঠিক যে, অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছিলেন, এ রকম অ্যাকশন নিয়ে বেশি দিন খেলা সম্ভব হবে না। বেশি জোরে বল করা যাবে না। সেই কারণেই আমি বলছিলাম, নিজের উপর নিজের বিশ্বাস থাকাটা সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়েছিল, যদি আমি নিজেকে শক্তিশালী করে তুলতে পারি, যদি আমি পরিশ্রম করতে পারি, তা হলে এই অ্যাকশনেই সফল হতে পারব। আমার প্রধান শক্তিটাই ওটা— নিজের উপর বিশ্বাস না হারানো।
প্র: কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ‘নো বল’ পর্বের পরে নিজেকে বোঝানোটা কত কঠিন ছিল?
বুমরা: ভুলটা নিশ্চয়ই বড় ছিল এবং খুব যন্ত্রণাও দিয়েছিল। খেলোয়াড়দের জীবনে রি-টেকের কোনও সুযোগ নেই। সব কিছুই চলমান অবস্থায় করে যেতে হয়। তাই ‘নো বল’ করে আর সেটাকে শুধরানোর সুযোগ পাওয়া যায় না। ওই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আমি এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। ওই ঘটনা আরও বেশি করে বুঝতে শিখিয়েছে, খেলোয়াড়ের জীবনে এই মুহূর্তে হাসি তো পরের বলটাতেই হয়তো অপেক্ষা করছে কান্না! সেই কারণেই তো নিজেকে বোঝাই, প্রশংসায় নিয়ন্ত্রণ দেখাও যাতে নিন্দা বাগ্রুদ্ধ করে দিয়ে যেতে না পারে!
প্র: দুপুরবেলায় মায়ের ঘুম ভাঙাতে চান না বলে দেওয়ালের কোণে কাপড় গুঁজে সেখানেই বল ফেলতেন। এ ভাবেই শিখলেন ইয়র্কার। যা এখন আপনার সেরা অস্ত্র। এই কাহিনিটা ঠিক তো?
বুমরা: হ্যাঁ, ঠিক। ছোটবেলায় তো সারাক্ষণ বাইরে খেলতে যাওয়ার অনুমতি থাকত না। দুপুরবেলায় বাইরে খুব গরমও থাকত। তাই মা বাইরে যেতে দিত না। ছোটবেলায় আমি খুব দুরন্ত ছিলাম। সারাক্ষণ খেলতাম। আমাদের বাড়িতে একটা হল ঘর ছিল। সেখানে দেওয়ালের কোণে কাপড় লাগিয়ে বল করতাম। দেওয়ালের একেবারে প্রান্তে বল করতাম কারণ অন্য কোথাও বল ড্রপ পড়লেই তো আওয়াজ হবে আর মায়ের ঘুম ভেঙে যাবে। তখন আমাকে বকুনি খেতে হবে। একমাত্র এ ভাবেই শব্দ না করে বল করে যাওয়া সম্ভব ছিল। কাহিনিটা ঠিক। তবে আমি জানি না, এই কারণেই আমি ইয়র্কার করা শিখেছি কি না।
প্র: তা হলে এমন ইয়র্কার করা শিখলেন কোথা থেকে?
বুমরা: আমি টেনিস বলেও প্রচুর ক্রিকেট খেলেছি। কখনও ভাবিনি যে, ইয়র্কার করাই শিখব বা এই ডেলিভারিটাতেই সকলকে আউট করব। শুধু আনন্দ পাওয়ার জন্যই খেলেছি। টিভিতে ইয়র্কার বলটা দেখতে খুব ভাল লাগত। হয়তো সেখান থেকেই এসেছে আমার ইয়র্কার প্রীতি। টিভিতে দেখে টেনিস বলে আমি প্রচুর ইয়র্কার করার চেষ্টা করেছি। আমার মনে হয়, টেনিস বল থেকেই ডেলিভারিটা শিখেছি।
প্র: আপনার এই অগ্রগতিতে টিম ম্যানেজমেন্টের কী ভূমিকা? হেড কোচ রবি শাস্ত্রী, অধিনায়ক বিরাট কোহালি বা বোলিং কোচ বি অরুণের?
বুমরা: সব চেয়ে ভাল দিক হচ্ছে, টিম ম্যানেজমেন্ট সারাক্ষণ উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে নিজেদের মনের ভাব খোলাখুলি ভাবে প্রকাশ করার জন্য। রাখঢাক না রেখে প্রত্যেকে তার মতামত জানাতে পারে। প্রথমে আমাকে জিজ্ঞেস করবেন ওঁরা যে, আমার পরিকল্পনা কী? তার পর ওঁদের মতামত জানিয়ে আলোচনা করবেন। কোনও জিনিসই কখনও চাপিয়ে দেওয়া হয় না। এই স্বাধীনতা পাওয়াটা বড় ব্যাপার এবং তার প্রভাব মাঠে আমাদের পারফরম্যান্সে দেখা যাচ্ছে।
প্র: ক্রিকেটের বাইরে আর কী ভাল লাগে আপনার?
বুমরা: (হাসি) খেলা শেষ হলে মাঠ থেকে নিঃশব্দে উধাও হয়ে যাওয়াটাই আমার সব চেয়ে পছন্দের। যখন দেশে থাকি, খুব একটা বাইরে ঘোরাঘুরি করি না। বাড়িতে বসে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতেই ভালবাসি। প্রচুর প্লে-স্টেশন খেলি। তখন খুব কমই ক্রিকেট নিয়ে কথা বলি আমরা।
প্র: স্বপ্ন কী, যশপ্রীত?
বুমরা: স্বপ্ন একটাই— যত দিন পারো, ইন্ডিয়া ক্যাপ পরে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সেবা করে যাওয়া। যত পারো দলের জন্য অবদান রাখা। প্রত্যেকটা সুযোগকে কাজে লাগাও আর নিজের সেরাটা দিয়ে যাও।