ক্রিকেটের ভাষায় বলে ‘সানস্ট্রাইক’। সূর্যের আলো এমন ভাবে প্রধানত ব্যাটসম্যানদের চোখে এসে পড়ে, যে খেলতে অসুবিধে হয়। ফিল্ডারদেরও সমস্যা হয়। তবে এটাই কিন্তু শেষ নয়।
ফিল্ডারদের তাও সানগ্লাস আছে, ব্যাটসম্যানদের তো তা নেই। যে কারণে অপেক্ষা করতে হয়, কখন রোদ সরে যাবে। বিরাট কোহালি-শিখর ধওয়নদের সেটাই করতে হয় নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচে।
প্রাকৃতিক কারণে খেলা সাময়িক বন্ধ থাকলে ডাকওয়ার্থ-লুইস ছাড়া কোনও গতি নেই। সেই নিয়মে ৩৪.৫ ওভারে দু’উইকেটে ১৫৬ তুলে জিতল ভারত। কিন্তু শুধু প্রাকৃতিক কারণ নয়। বেশ কিছু উদ্ভট কারণেও বন্ধ ছিল ক্রিকেট ম্যাচ। তেমন কিছু ঘটনা জেনে নেওয়া যাক।
২০১৭ সালে রঞ্জি ট্রফি ম্যাচ চলছিল পালাম এয়ার ফোর্সের মাঠে। দিল্লির সেই ম্যাচে ছিলেন গৌতম গম্ভীর, সুরেশ রায়না, ঋষভ পন্থরা। আচমকাই টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় দিনে মাঠে ঢুকে পড়ে একটি গাড়ি। তাই বন্ধ থাকে খেলা।
স্টেডিয়ামের মূল প্রবেশদ্বার মূল সড়কের সঙ্গে যুক্ত। প্রবেশদ্বারে ছিল না কোনও রক্ষী! সেই সুযোগে একটি গাড়ি সটান মাঠে ঢুকে পিচের মাঝে দু’ বার ঘুরপাকও খায়। চালককে পুলিশ এসে পাকড়াও করলে তিনি বলেন, ভুল হয়ে গিয়েছে। জানান, মাঠে ক্রিকেটারদের দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ভুল করে গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়েন।
১৯৮১ সালে ইংল্যান্ড-শ্রীলঙ্কার ম্যাচে আচমকাই ঢুকে পড়ে এক দল মৌমাছি। বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার, আম্পায়ার ও গ্রাউন্ডস্টাফ জখম হন।
এর ২৬ বছর পর ক্যান্ডির মাঠে ফের হানা দেয় মৌমাছির দল। মৌমাছির হানা থেকে বাঁচতে মাঠে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়েছিলেন আম্পায়ার ও ক্রিকেটাররা। যতক্ষণ না মৌমাছির দল মাঠ থেকে বেরিয়ে যায়, ও ভাবেই মাঠে শুয়ে ছিলেন তাঁরা। আম্পায়ার মাটি থেকে উঠে দাঁড়ানোর পর ফের শুরু হয়েছিল খেলা।
২০১৭ সালে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে ম্যাচ। ব্লুমফন্টেনের সেই ম্যাচও প্রথম দিন লাঞ্চের পরে উদ্ভট কারণে বন্ধ ছিল। এর কারণ, দেরিতে লাঞ্চের খাবার এসে পৌঁছনো। প্রায় ১০ মিনিট দেরিতে দুপুরের খাবার পৌঁছেছিল ক্রিকেটারদের জন্য।
পরে জানা গিয়েছিল, মেনু কার্ডে ছাপা ভুল থাকার কারণেই এ রকম দেরি হয়েছিল। আর খাবার দেরিতে এসে পৌঁছনোয় খেলা শুরু হতেও দেরি হয়।
২০০৭ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে ল্যাঙ্কাশায়ারের বিরুদ্ধে খেলছিল কেন্ট। সেই সময় খেলাও প্রায় শেষের দিকে। আচমকা বেজে উঠল ফায়ার অ্যালার্ম। গোটা প্যাভিলিয়ন ফাঁকা করে দেওয়া হয়।বন্ধ হয়ে যায় খেলা। এসে পৌঁছয় দমকল বাহিনী।
মাঠে স্থির হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন দু’দলের ক্রিকেটাররা। ল্যাঙ্কাশায়ার ছিল জেতার মুখেই। তখনই এমন ঘটনা। পরে জানা যায়, নতুন শেফরা ছিলেন সে দিনের মেনু দেখভালের দায়িত্বে। কিছু রান্না এত বেশি পুড়ে গিয়েছিল যে মারাত্মক ধোঁয়া বেরোতে শুরু করেছিল, তার পরই আগুন ধরে যায়।
২০১৭ সালে শেফিল্ডে নিউ সাউথ ওয়েলসের খেলা চলছিল কুইন্সল্যান্ডের সঙ্গে। নিউ সাউথ ওয়েলসের মাত্র ১৮ রান দরকার ছিল জয়ের জন্য। কিন্তু আচমকা বেজে উঠেল ফায়ার অ্যালার্ম। চলে আসে দমকল। কিন্তু এর কারণ জানলে চমকে যাবেন।
একটা টোস্ট বেশি পুড়ে যাওয়ায় তা থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে। লাঞ্চের সময় নাকি নাথান লায়ন একটা টোস্ট বানিয়েছিলেন। সেই টোস্টই পুড়ে গিয়েছিল। প্রায় ৩০ মিনিট খেলা বন্ধ ছিল সেই সময়।
২০১১ সালে রোজবউল ক্রিকেট গ্রাউন্ডে হ্যাম্পশায়ারের ক্রিকেট ম্যাচে রটে যায়, একটা সাদা বাঘ বসে রয়েছে মাঠের কাছেই। হেলিকপ্টারও চক্কর দেয় তার উপরে। জানা যায় সেটি একটি সফ্ট টয়। বাঘের আতঙ্কে ২০ মিনিট খেলা বন্ধ ছিল।