মনু ভাকের ফাইল চিত্র।
সবাই জানে, চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েই ভারতীয় শুটাররা টোকিয়ো অলিম্পিক্সে নেমেছে। তবু যখন দেখছি আসল সময় ওরা নিজেদের ঠিকটাক প্রয়োগ করতে পারছে না, তখন সত্যিই মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
ঘটনা হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত শুটিংয়ে আমাদের কোনও প্রত্যাশাই পূরণ হয়নি। বরং উল্টোটাই সত্যি। এ দিকে, আপাতত হাতে আর সামান্য কয়েকটা ইভেন্ট পড়ে রয়েছে। আরও ছ’জন শুটারের এখনও পরীক্ষা বাকি। যাদের মধ্যে রয়েছে রাহি সর্নোবাটও। আমি নিশ্চিত মনু ভাকের ২৫ মিটার পিস্তলে দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়াবে এবং আগের ব্যর্থতার কোনও ছাপই থাকবে না ওর পারফরম্যান্সে। আশা করি, এই ক’দিনে অলিম্পিক্সের চাপ নেওয়ার মতো মানসিকতাও ওর তৈরি হয়েছে।
সৌরভ চৌধরি কিন্তু যোগ্যতা অর্জন রাউন্ডে যথেষ্ট ভাল করেছিল। এমনকি এক নম্বরেও শেষ করে চমকে দেয়। কিন্তু সেই ছন্দটা ফাইনালে আর ধরে রাখতে পারেনি। এমনিতে ওর বয়স তো খুবই কম। ধীরে ধীরে চাপ সামলানোর কৌশলটা নিশ্চয়ই শিখে যাবে। টোকিয়োয় এ বার ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের শুটাররাও খুবই হতাশ করেছে।
আমার মনে হচ্ছে, অলিম্পিক্সে নামার চাপটাই ওরা নিতে পারছে না। অলিম্পিক্সের মতো মঞ্চে নামার কোটা পাওয়ার পরে অনেক কিছুই নির্ভর করে প্রস্তুতির উপরে। আমি মূলত বলতে চাইছি, মানসিক শক্তি বাড়িয়ে নেওয়ার প্রস্তুতির কথা। যেটা একমাত্র হয়, অনুশীলনে অতিরিক্ত পরিশ্রম করলেই। হতে পারে, এ বারের দলটা এই জায়গাতেই ধাক্কা খেয়েছে। সঙ্গে বলে রাখি, এ সব ক্ষেত্রে কোচের ভূমিকাও কিন্তু বিরাট। তাঁরাই পারেন শুটারদের মানসিক ভাবে আরও শক্তিশালী করে তুলতে।
অবশ্যই অলিম্পিক্সে চাপটা সবারই থাকে। তা সে আনকোরাই হোক বা প্রচুর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। আবার বলছি, এ সব ক্ষেত্রে কোচেরাই হয়ে ওঠেন নেপথ্যের প্রধান কারিগর। ২০১২-র কথা মনে পড়ছে। তখন আমার মাথায় হাজার চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিল। বিশেষ করে যখন প্রথম পর্যায়ের পরে আমি পঞ্চম স্থানে ছিলাম। ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পেরেছিলেন কোচ পাভেল স্মিরনভ। উনি তখন মনটাকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে আমাকে জিম আর গেম স্টেশনস-এ নিয়ে যান। তার পরের দিনই কিন্তু দ্বিতীয় পর্যায় থেকে আমি ফাইনালে উঠে গেলাম! তখন পাভেল আবার আমায় হাঁটতে নিয়ে গেলেন। তাতে আমার মানসিক চাপ অনেকটাই কমে গেল। টেকনিক্যাল সাহায্যের বাইরেও কোচদের কিন্তু দূর থেকে দেখে শুটারদের মানসিক অবস্থাটা বুঝে নিতে হয়। তাই বারবার বলছি, কোচের ভূমিকাটা এ সব ক্ষেত্রে বিরাট। (টিসিএম)