ভারতের তারকা শুটার মানু ভাকর। ছবি: টুইটার থেকে
দিল্লি বিমানবন্দরে ‘অপরাধী’-দের মতো আচরণ করা হল ভারতীয় শুটার মানু ভাকরের সঙ্গে। শুক্রবার টুইটারে এমনই অভিযোগ জানালেন তিনি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রীদের কাছে। ভাকরকে দিল্লি থেকে বিমান উঠতেই দেওয়া হচ্ছিল না প্রথমে। কিরেন রিজিজুর সাহায্যে শেষ পর্যন্ত বিমানে উঠতে পারেন ভাকর।
১৯ বছরের ভাকর শুটিংয়ের বিশ্বকাপের সোনাজয়ী। টোকিয়ো অলিম্পিকে ভারতের হয়ে পদক জেতার অন্যতম দাবিদার বলে মনে করা হচ্ছে তাঁকে। ভাকরের কাছে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের ডিরেক্টরেট জেনারেলের (ডিজিসিএ) অনুমতিপত্র থাকলেও, তা মানতে চাননি দিল্লি বিমানবন্দরের কর্মীরা। ভাকর টুইট করে লেখেন, ‘আমাকে এআই ৪৩৭ বিমানে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না এবং ১০ হাজার ২০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। ডিজিসিএ কী সেটাই বুঝতে পারছেন না এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মী মনোজ গুপ্ত। আমি কি ঘুষ দেব’? আরও একটি টুইট করে কিরেন রিজিজু-র উদ্দেশে ভাকর জানান যে দুটো বন্দুক নিয়ে তিনি অপেক্ষা করছেন বিমানবন্দরে।
মনোজের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন ভাকর। তিনি টুইট করে লেখেন, ‘এই ধরনের ব্যবহার আশা করিনি। মনোজ গুপ্ত মানুষই নন। আমার সঙ্গে অপরাধীদের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন মানুষদের দায়িত্ব দেওয়ার আগে সাধারণ শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন’। ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী হারদীপ সিংহ পুরির কাছে মনোজকে সঠিক জায়গা মতো পাঠানোর আবেদন করেছেন ভাকর ওই টুইটেই।
শেষ পর্যন্ত যদিও ভাকর বিমানে উঠতে পারেন। কিরেন রিজিজুকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি। এয়ার ইণ্ডিয়ার তরফে যদিও টুইট করে বলা হয়, ভাকরের কাছ থেকে শুধু বন্দুক নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নথি চাওয়া হয়েছিল। সেই নথি না থাকার জন্য ভাকরের কাছে জরিমানা চাওয়া হয়, কোনও ঘুষ চাওয়া হয়নি। ভাকর নথি দেখাতেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। ভাকরের সঙ্গে যা হয়েছে এমন ঘটনা যে বাঞ্ছনীয় নয় তা মনে করছেন অনেক ক্রীড়াবিদই, তবে এয়ার ইন্ডিয়ার পাশেও দাঁড়িয়েছেন খেলোয়াড়রা।
ঝুলন গোস্বামী টুইট করে লেখেন, ‘এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা যদিও ভাল। খেলোয়াড়দের সব সময় সম্মান দিতেই দেখেছি তাদের’। ধনরাজ পিল্লাই টুইট করে লেখেন, ‘একটি ঘটনার সব সময় দুটো দিক থাকে। অলিম্পিয়ান এবং এয়ার ইন্ডিয়া পরিবারের বহু দিনের সদস্য হিসেবে বলতে পারি, সব সময় খেলোয়াড়দের সম্মান জানিয়েছে এই বিমান সংস্থা’।
দ্রোণাচার্য সম্মানপ্রাপ্ত হরেন্দ্র সিংহ হ্যারিও পাশে দাঁড়িয়েছেন এয়ার ইন্ডিয়ার। তিনি বলেন, “এয়ার ইন্ডিয়ার প্রাক্তন কর্মী হিসেবে বলতে পারি, সব সময় খেলোয়াড়দের পাশে থেকেছে এয়ার ইন্ডিয়া। আমি গর্বিত এয়ার ইন্ডিয়ার হয়ে কাজ করতে পেরে এবং তাদের হয়ে খেলতে পেরে।”
ভারতের হয়ে ১০ মিটার এয়ার পিস্তল বিভাগে টোকিয়ো অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার কথা ভাকরের। বিশ্বকাপে দল এবং একক বিভাগ মিলিয়ে ৫টি সোনা জিতেছেন তিনি। ২০১৮ সালে মেক্সিকোতে সোনা জিতে জাতীয় স্তরে উঠে আসেন ভাকর। তার পর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।