(বাঁ দিকে) রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দ, বিশ্বনাথন আনন্দ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র
পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেনের কাছে লড়ে হারতে হয়েছে ভারতের রমেশবাবু প্রজ্ঞানন্দকে। বিশ্বনাথন আনন্দের পরে ভারতের দ্বিতীয় দাবাড়ু হিসাবে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেও জিততে পারেননি তিনি। কিন্তু তার পরেও তাঁর কৃতিত্বকে খাটো করে দেখছেন না আনন্দ। প্রজ্ঞানন্দ-সহ ভারতীয় দাবার গোটা তরুণ প্রজন্মের প্রশংসা শোনা গিয়েছে আনন্দের গলায়। ভারতীয় দাবার এই প্রজন্মকে ‘সোনার প্রজন্ম’ বলেছেন দেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার।
এ বারের দাবা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে আট জন প্রতিযোগীর মধ্যে চার জন ছিলেন ভারতের। প্রজ্ঞা ছাড়াও তালিকায় ছিলেন ডি গুকেশ, বিদিত গুজরাতি ও অর্জুন এরিগাইসি। এই চার দাবাড়ুর ফিডে রেটিংও বেশ ভাল। ফিডে রেটিংয়ে চার জনই ২৭০০-র বেশি। এই পরিসংখ্যান দেখে খুশি আনন্দ। তিনি বলেন, ‘‘আমি শুরুতেই বলে দিতে চাই, এটা ভারতীয় দাবার সোনার প্রজন্ম। একটা প্রতিযোগিতায় এত জন খেলছে। সবার ফিডে রেটিং ২৭০০-র বেশি। সবার বয়স এখন ২০ বছরের কম। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ভারতীয় দাবা কত ভাল হাতে আছে।’’
আনন্দের বিশ্বাস, আগামী ১০ বছরে বিশ্ব দাবায় দাপট দেখাবেন ভারতীয় দাবাড়ুরা। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। আনন্দ বলেন, ‘‘এই প্রজন্মকে সোনার প্রজন্ম বলার কারণ, আগামী ১০ বছরে এরা আরও উন্নতি করবে। আগামী ১০ বছরে এরা সতীর্থ, প্রতিপক্ষ সবাইকে হারাবে। একটা প্রতিযোগিতায় এত জন ভারতীয়কে দেখে খুব ভাল লাগছে।’’
২০০০ ও ২০০২ সালে দাবা বিশ্বকাপ জিতেছিলেন আনন্দ। তার পরে এত বছরের খরা। ফাইনাল জেতা তো দূর, এত বছর সেমিফাইনালেই উঠতে পারেননি কোনও ভারতীয় দাবাড়ু। এত বছরের একটা আক্ষেপ শোনা গিয়েছে আনন্দের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় হিসাবে আগে একাই প্রতিযোগিতায় নামতাম। একাই খেলতাম। এখন সেটা হয় না। এখন আমরাই সংখ্যায় বেশি। এই অনুভূতিটাই আলাদা।’’
ভারতের এই প্রজন্মের দাবাড়ুদের সাফল্যের নেপথ্যে বড় অবদান রয়েছে আনন্দের। দাবার মূল স্রোত থেকে সরে গেলেও নিজের দায়িত্ব ভোলেননি তিনি। প্রজ্ঞারা যখনই আনন্দের কাছে পরামর্শ চেয়েছেন, পেয়েছেন। অনেক সময় তো যেচে পরামর্শ দিয়েছেন প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। আগামী দিনেও সেটা করে যেতে চান আনন্দ। তিনি বলেন, ‘‘আমি যতটা পারি নিজের অভিজ্ঞতা ওদের সঙ্গে ভাগ করে নিই। আগামী দিনেও সেটা করব। তবে দাবা এখন অনেকটাই বদলেছে। প্রযুক্তি উন্নতি হয়েছে। কম্পিউটারের সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে। তার প্রভাব ভারতীয় দাবাড়ুদের খেলায় দেখা যাচ্ছে।’’