দায়িত্ব: নতুন ভূমিকায় ইসফাক আমেদ। এ বার আইএসএলে জামশেদপুর এফসি-তে স্টিভ কপেলের সহকারী।
আইএসএলে বিদেশিদের থেকে মূল্যবান শিক্ষা নিচ্ছেন ওঁরা। আর এই ‘ওঁরা’ বলতে ভারতীয় ফুটবলাররাই শুধু নন, রয়েছেন দেশি কোচেরাও। প্রায় প্রত্যেকটি ফ্র্যাঞ্চাইজিই স্বীকার করছে, তাদের দলের অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা নিচ্ছেন ভারতীয় কোচেরা।
এটিকে-র বাস্তব রায় বা জামশেদপুরের ইসফাক আমেদ-রা আইএসএলে সহকারী কোচ হিসেবে রয়েছেন। বিদেশি কোচদের উপস্থিতিতে এঁরা হয়তো থেকে গিয়েছেন প্রচারের আড়ালে। কিন্তু শুধুই বিদেশি কোচের জন্য অনুবাদক হয়ে সময় কাটাচ্ছেন না ইসফাক-রা। দেশের নানা প্রান্তে ঘুরে ফুটবলার খুঁজে বের করার কাজ করছেন তাঁরা। সঙ্গে নিয়মিত ট্রেনিং করিয়ে ফুটবলারদের ফিট রাখা।
দিল্লি ডায়নামোজে যেমন শুরু থেকে সহকারী কোচ হিসেবে রয়েছেন শক্তি চৌহান। তিনি বলছেন, ‘‘অনুবাদকের কাজ যেমন করতে হয়, তেমনই প্রধান কোচের প্রক্রিয়া যাতে সঠিক ভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব হয়, সেটাও আমাদের দেখতে হয়। বিদেশি ও ভারতীয় ফুটবলারদের মধ্যে সুন্দর বোঝাপড়া গড়ে তোলার দিকটাও দেখতে হয়। সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’ আইএসএলের বিভিন্ন দলে থাকা সহকারীরা কিন্তু মোটেও হেলাফেলা করার মতো নাম নন। এফ সি গোয়ায় আছেন ডেরিক পেরিরা। কেরল ব্লাস্টার্সে থাংবই সিংতো। বেঙ্গালুরু এফসি-তে নৌশাদ মুসা। চেন্নাইয়িন এফসি-তে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে রয়েছেন সাবির পাশা। এঁদের মধ্যে ডেরিক ও সিংতো প্রধান কোচ হিসেবে ভারতের বিভিন্ন ক্লাবে কাজ করেছেন।
ইসফাক খেলেছেন ভারতের প্রায় সব বড় ক্লাবে। কেরল ব্লাস্টার্সের হয়ে আইএসএলেও খেলেছেন। এখন জামশেদপুর দলের সহকারী কোচ। বলছিলেন, ‘‘আমি তো ফুটবলারদের সঙ্গে অনুশীলনও করি। তাতে দু’টো সুবিধে। নিজের ফিটনেস ধরে রাখতে পারি। আর ফুটবলাররাও ভাবে, কোচ আমাদেরই মতো এক জন।’’ গত বছর পর্যন্তও ফুটবল খেলেছেন ইসফাক। দ্রুত ফুটবলারদের সঙ্গে মিশে যেতে সেটা সাহায্য করছে।
দিল্লি ডায়নামোজের শক্তি চৌহান আবার মনে করেন, আইএসএলে বিদেশি কোচদের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন শিক্ষাই তাঁকে অভিজ্ঞ করে তুলছে। বলছেন, ‘‘ফুটবল প্রশিক্ষণের যে কত ধরনের প্রক্রিয়া হয়, সেটা শিখছি। আমি প্রথমে ছিলাম বেলজিয়ামের কোচ হার্ম ফান ভেল্ডহোভেনের সহকারী। পরে ব্রাজিলের রবের্তো কার্লোসকে পেয়েছি। গতবার ছিলেন ইতালির জিয়ানলুকা জামব্রোতা। এ বারে আবার কোচ স্পেনের মিগেল আনজেল পর্তুগাল। বিভিন্ন ঘরানার কোচিং স্টাইলের সঙ্গে পরিচিত হতে পারাটাই একটা অভিনব অভিজ্ঞতা।’’
ইসফাকের জামশেদপুরে প্রধান কোচ ইংল্যান্ডের স্টিভ কপল। বহু দিন খেলেছেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে। ইংলিশ ফুটবলের জনপ্রিয় তারকা স্টিভ সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত ইসফাক বলছেন, ‘‘স্টিভের সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক আমার। আমাকে সব সময়েই সঙ্গে রাখেন। এটা আমার কাছে একটা দারুণ প্রাপ্তি।’’
আইএসএল ভারতীয় ফুটবলারদের মতো এই সব সহকারী কোচেদের ভবিষ্যৎও গড়ে দিতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার।