স্টিভ ও’কিফ। বেঙ্গালুরুর পিচেও কি সমস্যায় ফেলতে পারবেন ভারতকে?
পুণের বিপর্যয় কিন্তু সহজে মুছে ফেলা যাবে না। হারের ধাক্কা সামলানো যায়। কিন্তু অপমানের ক্ষতটা যে আরও বেশি গভীর। আরও বেশি যন্ত্রণার। কিন্তু এই দুঃস্বপ্নকে ঝেড়ে ফেলে নতুন জীবন শুরু করতে হবে বিরাট কোহালিদের। যেমন করে সাপ খোলস ছেড়ে নতুন চেহারা নেয়।
স্টিভ ও’কিফ নিখুঁত এবং নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেংথে বল করে গেল। আর ওর শিকাররা বল স্পিন হবে ভেবে নিয়ে ব্যাটটা করল। কিন্তু অনেক বলই স্পিন করেনি। যার ফলে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা ভুল লাইনে ও’কিফকে খেলল এবং তার মাশুল দিল।
আরও একটা ভুল করেছে আমাদের ব্যাটসম্যানরা। স্পিন খেলতে গেলে ফুটওয়ার্কটা খুব জরুরি। কিন্তু সে ভাবে কেউ ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে স্পিনটা খেলেনি। ফ্রন্টফুটের নড়াচড়াটা যদি খুব মসৃণ না হয়, তা হলে ক্রিজে দাঁড়িয়ে স্পিনটা খেলা খুব বিপজ্জনক। এই সমস্যার সমাধান খুব তাড়াতাড়ি ভারতকে খুঁজে পেতে হবে। মনে রাখতে হবে, ভাল পিচও কিন্তু শেষ দিকে খারাপ হতে পারে। ভারতকে যে ভাবেই হোক ও’কিফের ছন্দ নষ্ট করতে হবে।
ম্যাচের পরে কোহালি একটা জিনিস ঠিকই বলেছিল। প্রথম ইনিংসে বড় রানে পিছিয়ে পড়াটা ভারতীয় বোলারদের ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিল। ততক্ষণে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ স্টিভ স্মিথদের হাতে চলে যায়। ভারতীয়রা ওই জায়গা থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। পাশাপাশি ক্যাচ ফেলা বা ডিআরএস নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারাটা কোহালিদের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়।
আরও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়াকে দুর্বলতম বলায় টুইটারে ভাজ্জিকে ট্রোল ওয়ার্নারের
আর অবশ্যই স্টিভ স্মিথ। ভীষণ শুকনো এবং ঝুরঝুরে পিচে কী ভাবে স্পিনটা খেলতে হয়, সেটা ও দেখিয়ে দিল। ও স্পিনের বিরুদ্ধে সোজা ব্যাটে খেলার কৌশল নিয়েছিল। তাতে যদি ব্যাটের কানায় লাগত, তাও ঠিক আছে। একেবারে নিরুপায় না হলে ও সামনে এসে ডিফেন্স করতে যায়নি। বরং সব সময় রানের খোঁজে ছিল। কী ভাবে স্পিনারদের খেলবে, সেটা ঠিক করে নিয়ে নেমেছিল স্মিথ। এবং নিজের রণনীতি অনুযায়ী খেলে যায়। যার ফলটা আমরা দেখলাম। বিশ্বের দুই সেরা স্পিনারের বিরুদ্ধে, তাদের পছন্দের পিচে, একটা অসাধারণ ইনিংস। যে ইনিংসটা বিদেশি ব্যাটসম্যানদের কাছে স্পিন খেলার একটা আদর্শ উদাহরণ হয়ে থাকবে।
তবে ও’কিফ ছাড়াও ভারতকে কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বাকি বোলারদের কথা মাথায় রাখতে হবে। মিচেল স্টার্ক, জস হ্যাজলউড, নাথন লায়ন— এরা সবাই কিন্তু নিজের নিজের দিনে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখে। অন্য দিকে, আমি সত্যিই খুব অবাক হব, যদি দেখি এক জন স্পিনারকে বসিয়ে পরের টেস্টে ভারত এক জন বাড়তি ব্যাটসম্যান খেলাচ্ছে না।
পুণেতে ভারত রান তুলতে পারেনি। বেঙ্গালুরুতে কিন্তু রান চাই, রান।