প্রস্তুতি: সিরিজে ০-১ পিছিয়ে। ফেরার লড়াই সেই চেন্নাইয়েই। মহড়ায় ব্যস্ত ঋষভ, বিরাটরা। শুক্রবার। বিসিসিআই
পিছিয়ে পড়েও দুর্দান্ত ভাবে ফিরে এসে সিরিজ জিতে নেওয়ার সাহস অনেক বারই দেখিয়েছে বিরাট কোহালি-অজিঙ্ক রাহানেদের এই ভারতীয় দল। শ্রীলঙ্কায় গলে জেতা ম্যাচ হেরে গিয়ে অসাধারণ প্রত্যাবর্তনে সিরিজ জয়। ২০১৭-তে দেশের মাটিতে স্টিভ স্মিথের সেই ডিআরএস কেলেঙ্কারির সিরিজে পুণেতে হেরেও সিরিজ জিতে নেওয়া। অতি সম্প্রতি মেলবোর্নে ৩৬ অলআউট হয়ে গিয়েও অস্ট্রেলিয়া থেকে স্মরণীয় সিরিজ জিতে ফেরা।
এ বার চলতি ইংল্যান্ড সিরিজে চেন্নাই পার্ট টু। সেখানেও কি কোহালিরা পারবেন ঘুরে দাঁড়াতে? একই কেন্দ্রে দু’টি টেস্ট ম্যাচ হলেও যা পূর্বাভাস, জো রুটদের মনে হতে পারে সম্পূর্ণ অন্য শহরে এসে পড়েছেন। তার কারণ, চেন্নাইয়ের পাল্টে যাওয়া বাইশ গজ। ভারতীয় শিবির মনে করছে, যথেষ্ট অতিথিপরায়ণ বাইশ গজ দিয়ে দেওয়া হয়েছিল রুটদের। ডারবানে গেলে যেমন কোহালিদের জন্য ঘূর্ণি অপেক্ষা করে থাকে না, বাউন্সের কড়াইতে তাঁদের ফেলা হয়, তেমনই চেন্নাইয়ে রুটদের সামনে বল ঘোরার জন্য তৃতীয় দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করারও মানে হয় না।
অতএব? চেন্নাইয়ে ‘দুরন্ত ঘূর্ণির এই লেগেছে পাক, এই দুনিয়া ঘোরে বন বন’-এর ব্যবস্থা পাকা। একেবারে প্রথম দিন থেকেই বল ঘোরার ব্যবস্থা হয়েছে। ভারতীয় শিবির মনে করছে, টসকে অত গুরুত্বপূর্ণ হতে দেওয়া যাবে না যে, টস হারলে মানে ম্যাচও হেরে গেলে! প্রথম টেস্টে রুট টসে জিতে ব্যাটিং নেন এবং নিজে দ্বিশতরান করে ম্যাচটাই বের করে নিয়ে যান। অনেকেই নিশ্চিত, তাঁদের কাজ এতটা সহজ হত না যদি টস হেরে পরে ব্যাট করতে হত। চেন্নাইয়ে এখনই তিরিশের উপরে তাপমাত্রা উঠতে শুরু করেছে এবং মনে করা হচ্ছে, শুধু প্রথম দিন থেকে বল ঘোরাই নয়, দ্রুত পিচ ভাঙতেও শুরু করে দেবে। অর্থাৎ, কম স্কোরের খেলা এবং পাঁচ দিনের আগে ম্যাচ শেষ হওয়ার সম্ভাবনাও থাকছে।
যা ইঙ্গিত, সুস্থ হয়ে ওঠা অক্ষর পটেল খেলবেন শাহবাজ় নাদিমের জায়গায়। ভারতীয় শিবির মনে করছে, ঘূর্ণি পিচে এমন এক বাঁ হাতি স্পিনার দরকার, যাঁর বল স্পিন করে ডান হাতি ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রে বাইরের দিকে যাবে। কুলদীপের চায়নাম্যান বল ডান হাতিদের ক্ষেত্রে ভিতরে আসে। অশ্বিন এবং ওয়াশিংটন সুন্দরের অফস্পিনও ডান হাতির ক্ষেত্রে ভিতরের দিকে আসে। এই ইংল্যান্ড দলে ডান হাতি ব্যাটসম্যানের সংখ্যা বেশি। তা ছাড়া রুটের সুইপ শট আটকাতে গেলে অক্ষরের মতো বাইরের দিকে স্পিন করানো বাঁ হাতি দরকার বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ওয়াশিংটনের বদলে কুলদীপকে খেলানো হয় কি না, সেটা দেখার। কারও কারও মত, অশ্বিন, অক্ষর আর কুলদীপ— এই স্পিন ত্রিফলা নিয়ে নামা উচিত কোহালিদের। যে-হেতু অশ্বিন এবং অক্ষরে ব্যাটের হাত ভাল, ওয়াশিংটনকে বাইরে রাখলে ব্যাটিং খুব ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয় থাকছে না।
তবে অনেক বেশি চমক রয়েছে ইংল্যান্ডের প্রথম একাদশ নির্বাচনে। জফ্রা আর্চার চোটের জন্য ছিটকে গিয়েছেন দেখেও রোটেশন প্রথা থেকে সরে আসেননি রুটরা। তাঁরা জিমি অ্যান্ডারসনকে দ্বিতীয় টেস্টের জন্য বাইরেই রাখছেন। তার মানে শনিবার সকালে যদি কোনও ভাবে কোহালি টস জিততে পারেন, অ্যান্ডারসন-আর্চারকে নতুন বলে খেলতে হবে না। রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়া অ্যান্ডারসনের রিভার্স সুইংয়ের সামনে পড়ারও ভয় নেই। অফস্পিনার ডম বেসের জায়গায় ইংল্যান্ড খেলাচ্ছে মইন আলিকে, অ্যান্ডারসনের জায়গায় স্টুয়ার্ট ব্রড। বাঁ হাতি স্পিনার জ্যাক লিচ থাকছেন, যিনি চেতেশ্বর পুজারা ও রোহিত শর্মাকে বোকা বানিয়ে ছেড়েছিলেন।
এর পরেও কাজ অনেক বাকি থাকছে কোহালিদের। বেশ কিছু ইনিংস ধরে বড় স্কোর আসছে না তাঁদের ব্যাট থেকে। তবে চেন্নাইয়ের যা পিচ নিয়ে পূর্বাভাস, হাফ সেঞ্চুরিও বড় স্কোর হয়ে যায় কি না, দেখার।