ব্যাটের পর এবার দস্তানা হাতেও অনবদ্য। প্রশংসা আদায় করলেন ঋষভ পন্থ। ছবি - টুইটার
ব্যাট হাতে বিস্ফোরণ ঘটানো কিংবা সারাক্ষণ কথা বলে সতীর্থদের তাতানো নয়। চেন্নাইয়ে দ্বিতীয় টেস্টে অনবদ্য কিপিংও করলেন ঋষভ পন্থ। বাঁ দিকে শরীর ছুঁড়ে দিয়ে অলি পোপ ও জ্যাক লিচের ক্যাচ ধরলেন দুরন্ত ছন্দে। তাই তো এবার উইকেটকিপার পন্থের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কিংবদন্তি সুনীল গাওস্কর ও গৌতম গম্ভীর।
দেশের মাটিতে ঘূর্ণি উইকেটে ঋদ্ধিমান সাহার বদলে পন্থকে খেলানো নিয়ে নানা মুনির নানা মত ছিল। তবে রবিবার পন্থ বুঝিয়ে দিলেন যে তিনিও উইকেটের পিছনে পাপালির মতো হওয়ার চেষ্টা করছেন। যদিও তাঁর এই উন্নতির নেপথ্যে রয়েছেন সেই ‘ব্রাত্য’ ঋদ্ধিমান। যেন ‘স্পাইডারম্যান’কে আরও নিখুঁত করছেন ‘সুপারম্যান’। ঋদ্ধিকে ধন্যবাদ জানিয়ে সেটাও কিন্তু দিনের শেষে মনে করিয়ে দিলেন ভারতের সর্বকালের সেরা ওপেনার সানি।
এদিন ইংল্যান্ড ইনিংসের ৩৯তম ওভারে বোলিং করতে আসেন মহম্মদ সিরাজ। এই ডানহাতি জোরে বোলারের প্রথম ডেলিভারি ছিল বেশ নির্বিষ। লেগ স্টাম্পের বাইরে যাওয়া বলকে পোপ মারতে গেলে বাঁ দিকে শরীর ছুঁড়ে দেন পন্থ। বলটা প্রথমে দস্তানা থেকে ছিটকে গেলেও চকিতে নিজেকে সামলে নেন। এরপরেও অবশ্য ফের দারুণ কিপিং দেখালেন এই তরুণ। ৫৯ ওভারের শেষ বলে জ্যাক লিচ খোঁচা দিলে আবার উড়ে যান ভারতীয় ক্রিকেটের ‘স্পাইডারম্যান’। তবে এবার বোলার ইশান্ত শর্মা।
তাই তো এবার কিপার পন্থে মুগ্ধ সানি। তিনি বলেছিলেন, “আমি শুনেছি ইদানীং রোজ সন্ধেবেলা ঋদ্ধির ক্লাসে পন্থ হাজির হয়ে যায়। ঋদ্ধির কাছ থেকে কিপিংয়ের খুঁটিনাটি জানতে চায়। দেখুন ঋদ্ধি যে এই মুহূর্তে দেশের এক নম্বর কিপার সেটা নিয়ে কারও মনে সন্দেহ থাকার কথা নয়। তবে এই সময় একজন অলরাউন্ডারের প্রয়োজন। তাই ঋদ্ধির বদলে পন্থ খেলেছে।” এরপরেই তিনি জুড়ে দিয়েছেন, “সাহা অভিজ্ঞ। পন্থের চেয়ে অনেক ভাল কিপার। সেটা পন্থ বুঝে গিয়েছে। তাই ও ঋদ্ধির কাছে পরামর্শ নিয়েছে। দলের স্বার্থে ঋদ্ধিও ওর জুনিয়র সতীর্থকে সাহায্য করছে। সেই জন্য ঋদ্ধিরও কিন্তু ধন্যবাদ প্রাপ্য।”
যদিও দেশের প্রাক্তন ওপেনার গম্ভীর মনে করে ব্যাট হাতে ধারাবাহিকতা দেখানোর জন্যই পন্থ কিপিংয়ে উন্নতি ঘটালেন। গম্ভীর বললেন, “গত কয়েকটা ম্যাচে অসাধারণ ব্যাট করেছে। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ওর সহজাত ব্যাপার। সেটা নিশ্চিন্তে করতে পারছে বলেই কিপার হিসেবেও সাফল্য পাচ্ছে। টিম ম্যানেজমেন্ট ওর পাশে আছে বলেই উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে অশ্বিন-অক্ষরকে অনায়াসে সামলে নিচ্ছে। মনে রাখবেন ঘরের মাঠে অশ্বিনকে কিপিং করা কিন্তু মুখের কথা নয়।”
তবে প্রবাদপ্রতিম গাওস্কর কিন্তু পন্থের এই উন্নতির জন্য রিকি পন্টিংকেও ধন্যবাদ জানালেন। গত আইপিএলে ঋষভের ওজন অনেকটা বেড়ে যায়। সেটা নিয়েও চিন্তায় ছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসের কোচ পন্টিং। ফলে মরু শহরের পর অস্ট্রেলিয়াতে গিয়েও প্রাক্তন অজি অধিনায়কের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটান পন্থ। আর তারপরেই এই তরুণের ক্রিকেটে অনেক বদল এসেছে।
‘লিটল মাস্টার’ বলছিলেন, “গত আইপিএলে ওকে দেখে সবাই চিন্তায় পরে গিয়েছিল। ওর ওজন বেড়ে যাওয়ায় রিকি অবাক হয়ে যায়। ঋষভও ওজন কমানোর জন্য অনেক ঘাম জড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, অস্ট্রেলিয়া গিয়েও রিকির সাথে আলোচনা করত। যা গত কয়েকটা টেস্টে দলের কাজে দিয়েছে।”