উত্তপ্ত বেঙ্গালুরুতে চাপে সেই ভারতই

রবিবারের চিন্নাস্বামী সাক্ষী থাকল দু’-দু’টো ধুন্ধুমার যুদ্ধের।একটার স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছে, ভারত এখনও চাপে। অস্ট্রেলিয়া ২৩৭-৬। সোমবার, তৃতীয় দিনের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বাকি চার উইকেট তুলে নিতে না পারলে যে চাপটা আরও অসহনীয় হয়ে উঠবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০৪:১২
Share:

আগ্রাসী: উইকেট পড়তেই হুঙ্কার কোহালির। রবিবার। পিটিআই

রবিবারের চিন্নাস্বামী সাক্ষী থাকল দু’-দু’টো ধুন্ধুমার যুদ্ধের।

Advertisement

একটার স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছে, ভারত এখনও চাপে। অস্ট্রেলিয়া ২৩৭-৬। সোমবার, তৃতীয় দিনের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বাকি চার উইকেট তুলে নিতে না পারলে যে চাপটা আরও অসহনীয় হয়ে উঠবে।

দ্বিতীয় যুদ্ধের কোনও সরকারি স্কোরবোর্ড নেই। কিন্তু এই যুদ্ধটা নিয়ে চর্চা আরও বেশি চলল। টেস্ট ম্যাচের উত্তেজনার পারদ আরও বেশি করে বাড়িয়ে দিল যে যুদ্ধ।

Advertisement

প্রথমটা যদি হয় ব্যাট বনাম বলের লড়াই, দ্বিতীয়টা উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের। যেখানে সরাসরি জড়িয়ে পড়লেন দুই দেশের দুই অধিনায়ক। বিরাট কোহালি বনাম স্টিভ স্মিথ। দুই অধিনায়কের এই বাগ্‌যুদ্ধ নিয়ে সরগরম ভারত থেকে অস্ট্রেলিয়া।

ঝামেলার শুরুটা হয় আর অশ্বিনের হাত দিয়ে। প্রথম ঘণ্টার খেলা চলছে। ওভারের শেষে হঠাৎ একটা বল ধরে ডেভিড ওয়ার্নারের দিকে ছুড়ে মারেন অশ্বিন। কোনও মতে সরে গিয়ে নিজেকে বাঁচান ওয়ার্নার। কী হতে চলেছে, ইঙ্গিতটা তখনই পাওয়া গিয়েছিল।

আগুনে মেজাজ চরমে ওঠে স্মিথ নামার পরে। স্মিথ এসেই অশ্বিনের প্রথম বলে একটা রান নেন। যা নিয়ে প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে পড়েন অশ্বিন। ভারতীয় অফস্পিনারের রাগ গিয়ে পড়ে নন স্ট্রাইকার এন্ডে থাকা ম্যাট রেনশ-র ওপর। অশ্বিনের অভিযোগ, রেনশ ইচ্ছে করে বল ধরা থেকে তাঁকে আটকে দেন, যাতে স্মিথ রানটা নিতে পারেন। এর পরে দেখা যায়, অশ্বিন এবং কোহালি মিলে রেনশ-কে কিছু বলছেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে যায় যখন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন স্মিথ। আম্পায়ার এসে সাময়িক শান্ত করেন।

টিভি-তে ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে মাইকেল ক্লার্ক বলেছেন, ‘‘বিরাট কোহালি আর স্টিভ স্মিথের মধ্যে ভালই লেগেছে। দু’টো টিমই প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে। স্মিথ গত ১২ মাসে প্রচুর রান করেছে। কিন্তু একবারও দেখিনি কেউ ওকে স্লেজ করেছে।’’

রবিবার এই স্লেজের মুখে পড়লেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। এবং ভারতীয়দের তৈরি চাপের শিকার হয়ে ফিরে গেলেন। স্মিথ প্রথম থেকেই মাথা গরম করে ফেলেন। তাঁর ৫২ বলে ৮ রানের ইনিংসে কোনও সময়েই স্বচ্ছন্দে ছিলেন না। ইশান্ত এসে একবার তাঁর উদ্দেশে বিকট মুখভঙ্গিও করে যান। শেষ পর্যন্ত রবীন্দ্র জাডেজার বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান স্মিথ।

অস্ট্রেলিয়াকে টেস্টের দ্বিতীয় দিন যে দু’জন টানলেন সেই রেনশ (৬০) এবং শন মার্শের (৬৬) মধ্যে দ্বিতীয় জন ভাগ্যের সাহায্য পেয়েছেন অনেকটা। একবার বল মার্শের গ্লাভস ছুঁয়ে কিপারের কাছে যায়, কিন্তু ডিআরএস-এর সাহায্য নেওয়া হয়নি। আবার আম্পায়ার এলবিডব্লিউ আউট দিলে মার্শ ডিআরএস নিয়ে বেঁচে যান। একবার আউট হয়েও বেঁচে যান নো বল হওয়ায়।

রেনশ অবশ্য অতটা ভাগ্যবান ছিলেন না। তাঁকে একসঙ্গে ভারতীয় বোলারদের বিষাক্ত ডেলিভারি এবং কোহালির স্লেজ সামলাতে হয়েছে। অস্ট্রেলীয় ওপেনারকে পুণের ‘টয়লেট ব্রেক’-এর কথাটা মনে করিয়ে দেন কোহালি। এও নাকি বলেন, ‘‘কী হে, তোমার পেট চিনচিন করছে না তো? যাও একবার বাথরুমটা ঘুরে এসো। পুণেতে যে রকম গিয়েছিলে।’’ দিনের শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে কথাটা বলতে গিয়ে হেসে ফেলেন রেনশ। ‘‘আমি ব্যাপারটা উপভোগ করার চেষ্টা করেছি। কোহালি যা সব বলছিল, তা শুনে আমার হাসি পেয়ে যাচ্ছিল।’’

ক্লার্কের মতো ম্যাথু হেডেনও বলছিলেন, ‘‘দু’টো দলই প্রচণ্ড চাপের মধ্যে আছে। টিম দু’টো যেন একটা প্রেশার কুকারের মধ্যে রয়েছে। যার ফল আমরা দেখতে পাচ্ছি।’’

এই ‘প্রেশার কুকার’ থেকে এখন কোন দল বেরিয়ে আসতে পারে, সেটাই দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement