বিপর্যস্ত। আলোচনা শুরু ক্যাপ্টেন-টিম ডিরেক্টরের। মঙ্গলবার নাগপুরে। ছবি: উৎপল সরকার
এক) নাগপুরের উইকেটকে স্পিনিং ট্র্যাক না বলে ‘আখড়া’ বলা ভাল। বলাই যায়, নিউজিল্যান্ডকে জামথার গাড্ডায় ফেলতে গিয়ে ভারতীয় দল নিজেরাই তাতে গড়াগড়ি খেল। আমাদের নিজেদের বানানো উইকেটকে বিদেশিরা বরং ম্যাচের আগে অনেক ভাল ‘রিড’ করে জিতে বেরিয়ে গেল! যেটা ১২০ বলে ১২৭ রানের একটা আপাত সহজ টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে কোহালিদের ৪৭ রানে হারের চেয়েও লজ্জার।
দুই) পেস নির্ভর কিউয়ি বোলিং লাইন আপও মঙ্গলবার উইকেটের চরিত্রকে মর্যাদা দিয়ে তিন স্পিনার খেলাল। অথচ ধোনি-শাস্ত্রীর টিম ম্যানেজমেন্ট এশিয়া কাপের উইনিং কম্বিনেশন না ভাঙার গোয়ার্তুমি দেখিয়ে তিন পেসার-দুই স্পিনার কম্বিনেশন রেখে দিল। আশ্চর্য! আরামসে নেহরার জায়গায় হরভজনকে খেলানো যেত। টিমের ব্যাটিং গভীরতাও বাড়ত তাতে। কে বলতে পারে নিউজিল্যান্ডও তিন স্পিনারের ফাঁসে একশোর কমে শেষ হয়ে যেত না?
তিন) রোহিত-রায়নাদের ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে যতই ধন্য ধন্য হোক, আমার মতে ভারতের ব্যাটিং চরিত্র হল, ভাল উইকেটের জন্য শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ। কিন্তু যে পিচে পেসারদের বল একটু বেশি নড়াচড়া করবে, যে পিচে স্পিনারদের বল একটু বেশি টার্ন করবে, ভারতীয় ব্যাটিং ধরা পড়ে যাবে। টার্নিং উইকেটে উইথ দ্য স্পিন খেলতে হয়— এটা ব্যাটিংয়ের প্রাথমিক শর্ত। অথচ রোহিতের মতো পোড়খাওয়া ওপেনার অনের দিকে সরে গিয়ে স্পিনের বিপরীতে খেলার মতো শিক্ষানবিশীর বোকামি করল!
চার) নিউজিল্যান্ড স্পিনারদের বিশেষ কিছু করতেই হয়নি। এ জাতীয় আখাড়ায় একটাই জায়গায় বল ফেলে গেলে তা এমনিই ঘুরবে। আর সেটাই ঘটেছে এ দিন জামথায়। কিন্তু আসল প্রশ্ন— যেখানে ভারতের মূল শক্তি ব্যাটিং, সেখানে কেন আমরা নিজের দেশে বিশ্বকাপ খেলার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও এ রকম আখাড়া বানাতে যাব নিজেদের ম্যাচে? বুমেরাং বোধহয় একেই বলে!
পাঁচ) গোদা নিয়ম হল, আইসিসি টুর্নামেন্টে আয়োজক দেশ হলেও তুমি ডিজাইনার উইকেট বানাতে পার না। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, এ দিনের পিচ ভারতের অর্ডারি। তবে প্রথম ম্যাচের পরিণতি দেখে গ্রুপে ধোনিদের বাকি তিনটে খেলার সেন্টার ইডেন, বেঙ্গালুরু, মোহালিতে টিম ম্যানেজমেন্ট হয়তো স্ট্র্যাটেজি পাল্টাবে। ঐতিহাসিক ভাবেই মোহালি-বেঙ্গালুরুর পিচ নাগপুরের মতো শুকনো থাকে না। তবে ইডেনের উইকেট স্লো টার্নার থাকতে পারে। অতএব শনিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মহারণে সাবধান টিম ইন্ডিয়া!