কোহালিদের নতুন সঙ্গী এখন ক্যাচিং মেশিন

বিরাট কোহালির দলে স্লিপ ক্যাচিংয়ে উন্নতি ঘটানোর জন্য নিয়ে আসা হয়েছে এই নতুন মেশিন। বিশেষ ভাবে অর্ডার দিয়ে বানানো এই মেশিনের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের পরিবেশ অনুযায়ী ক্যাচের অনুশীলন করানো যায়। লর্ডস টেস্টের আগেই এই যন্ত্রের আবির্ভাব ঘটেছে। ভারতীয় দলের ফিল্ডিং কোচ শ্রীধর একটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে বিশেষ এই ক্যাচিং মেশিন আনিয়েছেন।

Advertisement

সুমিত ঘোষ

লন্ডন শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৫৮
Share:

মগ্ন: কোহালিদের ক্যাচিং প্র্যাক্টিস এ বার মেশিনের সাহায্যে। ফাইল চিত্র

ক্রিকেটে অনেক দিন ধরেই এসে গিয়েছে বোলিং মেশিন। যে যন্ত্রে ইচ্ছা মতো বলের গতি ঠিক করে তৈরি হতে পারেন ব্যাটসম্যানেরা। দেখা গিয়েছে বোলারদের জন্য ম্যানেকুইনের ব্যবহার। এ বার এসে গেল ক্যাচিং মেশিনের অভিনবত্ব।

Advertisement

বিরাট কোহালির দলে স্লিপ ক্যাচিংয়ে উন্নতি ঘটানোর জন্য নিয়ে আসা হয়েছে এই নতুন মেশিন। বিশেষ ভাবে অর্ডার দিয়ে বানানো এই মেশিনের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের পরিবেশ অনুযায়ী ক্যাচের অনুশীলন করানো যায়। লর্ডস টেস্টের আগেই এই যন্ত্রের আবির্ভাব ঘটেছে। ভারতীয় দলের ফিল্ডিং কোচ শ্রীধর একটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে বিশেষ এই ক্যাচিং মেশিন আনিয়েছেন।

যন্ত্রটির বিশেষত্ব কী? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ইংল্যান্ডে যে বল বেশি সুইং করে বা যে ভাবে ব্যাটে লাগার পরে উইকেটের পিছনে ক্যাচ যেতে পারে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনুশীলন করানোর জন্যই এর আগমন। অন্যান্য জায়গার তুলনায় ইংল্যান্ডে বল বেশি সুইং করে এবং ব্যাটের কানায় লাগার পরে আন্দাজের চেয়ে বেশি বাঁক নিতে পারে। কখনও সখনও বল হঠাৎ করে নিচু হয়ে যেতে পারে। বিলেতের ঠান্ডা আর এলোমেলো হাওয়ার মধ্যে স্লিপে দাঁড়িয়ে সে সবের মোকাবিলা করতে গেলে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি থাকা দরকার।

Advertisement

ভারতীয় দলে এত দিন ক্যাচিং প্র্যাক্টিসের প্রক্রিয়াটা পুরোপুরি ছিল ‘ম্যানুয়াল’। কোচ বা ফিল্ডিং কোচ ব্যাট দিয়ে ক্যাচের অনুশীলন করাতেন। এই প্রক্রিয়া এখন প্রাচীন হয়ে পড়ছে। টি-টোয়েন্টি লিগের রমরমার যুগে যন্ত্রের অভিনবত্ব আসতে শুরু করেছে। কোহালির দলে ফিটনেস এবং ডায়েট নিয়ে কঠোর শৃঙ্খলা এসে গিয়েছে অনেক দিন আগেই। ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ না করলে দলে জায়গা হবে না, এমন কঠোর নীতিও করা হয়েছে। অধিনায়ক নিজে যে-হেতু দারুণ ফিল্ডার এবং ফিল্ডিং নিয়ে কোনও আপস করতে চান না, তাই ক্যাচিং মেশিনও এসে পড়ল।

ভারতীয় দলের ফিল্ডিংয়ে সব চেয়ে দুর্বল জায়গা স্লিপ ক্যাচিংয়ে। ২০১৫ থেকে ধরলে স্লিপ ক্যাচিংয়ে সাফল্যের শতকরা হারে টেস্ট দলগুলির মধ্যে ভারত নীচের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে। রাহানের মতো নিরাপদ হাত স্পিনের বিরুদ্ধে খুব ভাল হলেও পেসারদের বলে ক্যাচ গলাচ্ছেন। এজবাস্টনেও সহজ ক্যাচ পড়তে দেখা গিয়েছে। স্যাম কারেনের ক্যাচ পড়েছে। অনেকের মতে সেটাই টার্নিং পয়েন্ট। ব্যাট দিয়ে ক্যাচিং প্র্যাক্টিস করিয়ে ইংল্যান্ডের প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে মানানসই অনুশীলন করানো অসম্ভব। সেই কারণেই যন্ত্র নিয়ে আসা হয়েছে।

অত্যাধুনিক ডিজিটাল কন্ট্রোল প্যানেল এই মেশিনের সব চেয়ে আকর্ষণীয় দিক। যার মাধ্যমে ম্যাচের যে কোনও পরিস্থিতি তৈরি করে ক্যাচিং বা ফিল্ডিং প্র্যাক্টিস করা সম্ভব। শুধু যে স্লিপ ক্যাচিংই অনুশীলন করানো যায়, এমন নয়। অন্য যে কোনও ধরনের ফিল্ডিং অনুশীলনও করা সম্ভব। তবে স্লিপ ফিল্ডিংয়ের উপর সব চেয়ে বেশি জোর দিয়েই সংস্থার সঙ্গে কথা বলে যন্ত্রটি নিয়ে আসা হয়েছে।

ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে যে কোনও রকম কোণ এই যন্ত্রের মাধ্যমে তৈরি করা যায়। উঁচু ক্যাচ যেমন দেওয়া যায় তেমনই গ্রাউন্ড ফিল্ডিংও করা সম্ভব। বোলিং মেশিনে বল ঢুকিয়ে দিলেই যেমন পরিকল্পিত গতি অনুযায়ী তা ছুটে আসে, ফিল্ডিং মেশিনেও সে রকমই করা হয়। আউটফিল্ড এবং ক্লোজ-ইন দু’ধরনের ক্যাচ দেওয়া যায়। উইকেটকিপারের জন্য আলাদা অনুশীলনের প্রক্রিয়াও আছে। ছোট্ট যন্ত্রটির নীচে চাকা লাগানো বলে মাঠের যে কোনও অঞ্চলে নিয়ে যেতেও কোনও অসুবিধে নেই।

মানুষের হাতকে বিশ্বস্ত করে তুলতে পারবে যন্ত্র? সময়ই বলবে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement