চতুর্থ দিনের খেলা শেষ হতেই আশা করা তৈরি হয়ে গিয়েছিল। পঞ্চম দিন সকালে কত দ্রুত জয় আসবে সেটাই ছিল দেখার। জয় এল, যদিও তা সহজে আসেনি। রীতিমতো লড়াই করে অ্যাডিলেডে জয় ছিনেয়ে নিলেন বিরাট কোহালিরা। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের কিছু মুহূর্ত।
টসে জিতে কাজটা এগিয়েই রেখেছিলেন বিরাট। অধিনায়কের সে দিনের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছিলেন চেতেশ্বর পূজারা। তাঁর চোয়াল চেপে লড়াই বহু দিন মনে রাখবে ক্রিকেট দুনিয়া। প্রথম ইনিংসে পূজারার শতরান বুঝিয়ে দিল দ্রাবিড় পরবর্তী শূন্যতা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার দুই ইনিংস মুড়িয়ে দেওয়ার কাজটা ভাল ভাবেই করলেন ভারতীয় বোলাররা। অশ্বিন বুঝিয়ে দিলেন, অনিল কুম্বলের সঙ্গে তাঁর তুলনা কেন করে থাকেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। কাঁধে কাঁধ মিলেয়ে লড়াই চালালেন তিন সিমার ইশান্ত শর্মা- বুমরা-শামি।
পরিসংখ্যান বলছে, এই মুহূর্তে ক্রিকেট দুনিয়া রাজ করছেন ভারতীয় সিমাররা। টেস্টের দুই ইনিংসে যে ভাবে শামি-বুমরা-ইশান্তরা বল করলেন, তাতে প্রমাণিত বিদেশের সবুজ পিচে হুঙ্কার শুরু হয়েছে মেন ইন-ব্লুর।
4) চার বছর আগে এই মাঠেই খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল ভারতকে। সে দিন মহেন্দ্র সিংহ ধোনির অনুপস্থিতিতে অধিনায়ক ছিলেন এই বিরাট কোহালিই। দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছিলেন। কিন্তু, অসাধারণ রান তাড়া করেও তীরে এসে তরী ডোবে। বিরাট আউট হতেই শেষ হয়ে গিয়েছিল সব স্বপ্ন।
আবার তিন বছর আগে গলে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসের রান এক সময় ছিল পাঁচ উইকেটে ৯৫। কিন্তু সেবার প্রথমে ব্যাটসম্যান চান্ডিমল পরে বোলার রঙ্গনা হোরাথ স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছিল ভারতের। ফলে তীরে এসে তরী ডোবার আশঙ্কা আজও ছিল।
যখন মার্শ, পেইন, এমনকি কামিন্স বা লিয়নরা ব্যাট করছিলেন, তখন সেই অতীতের আতঙ্ক বার বার তাড়া করছিল। যদিও ইশান্ত-বুমরাদের দাপটে আতঙ্ক বাস্তবায়িত হয়নি।
অ্যাডিলেডের এই মাঠে ১৯০২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। সে বার ৩১৫ রান তাড়া করে জিতেছিল অজিরা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সব থেকে বেশি রান তাড়া করে এখানে জেতার নজির রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সেই স্কোরটাও তিনশোর অনেক কম। ক্যারিবিয়ানরা ২৩৯ রান তুলেছিল ছয় উইকেটে।
ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে রানের দিয়ে জেতার হিসেবে এটি তৃতীয়। এর আগে ২০০৪ সালে মুম্বইয়ে ১৩ রানে জিতেছিল ইন্ডিয়া, ১৯৭৭-এ ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল ১৬ রানে। এর পরই রয়েছে আজ ৩১ রানে জয়। চতুর্থ স্থানে ১৯৯২ সালে অ্যাডিলেডে অজিরা জিতেছিলেন ৩৮ রানে।
বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার মাঠে কোনও সিরিজ জিততে পারেনি ইন্ডিয়া। এ বার সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতে ইতিহাস বদলের নতুন সুযোগ কোহালিদের সামনে।
অজিঙ্ক রাহানের দলে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল বার বার। অ্যাডিলেড টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে অর্ধশত রান করাই শুধু নয়, পূজারার সঙ্গে পার্টনারশিপ নিঃসন্দেহে এই ম্যাচের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।