হুমকিতেও অনড় ফেডারেশন

শনিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে যৌথ সভা করে একসঙ্গে হুমকি এবং এ রকম নানা প্রশ্ন তুলে দিলেন ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান কর্তারা। আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় সভার পর বলে দিলেন, ‘‘ভারতীয় ফুটবলের রোডম্যাপ এবং কোন সভার পরিপ্রেক্ষিতে কুয়ালা লামপুরের সভা ডাকা হল, তা আমরা জানতে চাইছি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৭ ০৪:২০
Share:

হুঙ্কার: মাঠের লড়াই ভুলে একজোট দুই প্রধান। ফাইল চিত্র

তাদের খেলতে না দেওয়া হলে কলকাতায় আইএসএলের কোনও ম্যাচ করতে দেওয়া হবে না।

Advertisement

আইএলএল ও আই লিগ পাশাপাশি করা চলবে না। ফেডারেশন নানা ভাবে ‘চক্রান্ত’ এবং ‘বিশ্বাসভঙ্গ’ করছে। কী কারণে হঠাৎ ৭ জুন কুয়ালা লামপুরে এ এফ সি-র সভা ডাকা হল? কোন যোগ্যতায় এএফসি-র সভায় ডাকা হল ফুটবলারদের সংগঠন এফপিএআইকে?

শনিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে যৌথ সভা করে একসঙ্গে হুমকি এবং এ রকম নানা প্রশ্ন তুলে দিলেন ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান কর্তারা। আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় সভার পর বলে দিলেন, ‘‘ভারতীয় ফুটবলের রোডম্যাপ এবং কোন সভার পরিপ্রেক্ষিতে কুয়ালা লামপুরের সভা ডাকা হল, তা আমরা জানতে চাইছি। সেটা জানার পরই দুই প্রধান ঠিক করবে ৭ জুন কুয়ালা লামপুরের সভায় যাবে কী না?’’

Advertisement

দুই প্রধান এবং আইএফএ-র হুমকিকে অবশ্য ‘বাচ্চা’ ছেলের মতো কথা’ বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন ফেডারেশন সচিব কুশল দাশ। দিল্লি থেকে ফোনে দুই প্রধানের তোলা প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি। হাসতে হাসতে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ওরা কুয়ালালামপুরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। আমি কী বলব! তবে ওই সভা কেন ডাকা হয়েছে সেটা ওদের জানাতে কোনও অসুবিধা নেই। ওরা চিঠি দিলে জানিয়ে দেব, ২৪ মে এএফসি সচিবের সঙ্গে আমাদের যে আলোচনা হয়েছে তার খুঁটিনাটি। এতে চক্রান্তের কিছু নেই।’’ কিন্তু প্রফুল্ল পটেল যে ২৫ মে-র পর ভারতীয় ফুটবলের রোডম্যাপ জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দুই প্রধানকে? সেটা হল না কেন? কুশলবাবু বলে দেন, ‘‘এসব বাচ্চা ছেলের মতো আবদার। রোড ম্যাপ তৈরি করা অত সোজা নাকি? কাজ শুরু হয়েছে। এএফসি-র সভাতেই সব ঠিক হবে। ওখানে যা ঠিক হবে তা নিয়ে ফেডারেশনের কর্মসমিতির সভা ডেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। সেটা হতে হতে জুনের মাঝামাঝি হয়ে যাবে।’’

কিন্তু তত দিন পর্যন্ত কি আইএসএলের নিলাম বন্ধ থাকবে? কুশলবাবু বলেন, ‘‘রোডম্যাপ চুড়ান্ত না হলে নিলাম হবে না।’’ কিন্তু ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান বা আইজল এফ সি-র তো তা হলে আর আইএসএল খেলার কোনও সম্ভাবনা নেই? ওরা তো নিলামের কাগজপত্র জমাই দেয়নি। কুশল বলে দেন, ‘‘কে বলল নেই? ওটা তো ফ্র্যাঞ্চাইজিদের নিলাম। এমনও তো হতে পারে কিছু বাছাই ক্লাবের জন্য আলাদা নিলাম হবে। এএফসি কী চায় আগে দেখি।’’

ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার ও মোহনবাগান অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত এ দিন পাশাপাশি বসে হুমকি দেন, ‘‘আইএসএল এবং আই লিগ একসঙ্গে করতে দেব না। এটা হলে ফুটবলার পেতে সমস্যা হবে।’’ যা শুনে ফেডারেশন সচিব পরিষ্কার জানিয়ে দেন, ‘‘এটা হবেই। না হলে জাতীয় দলের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটছে। ফেডারেশনের কাছে জাতীয় দলই অগ্রাধিকার পাবে।’’

প্রায় একশো বছর ধরে যাঁদের মধ্যে ছিল সাপে-নেউলে সম্পর্ক তাঁরা এ দিন নজিরবিহীন ভাবে পাশাপাশি বসেছিলেন ক্লাবের অস্তিত্ব বাঁচানোর পথ খুঁজতে। প্রায় দেড় ঘণ্টা চলে সভা। দুই প্রধানের কর্মসমিতির ৪০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সেখানে স্লোগান হিসাবে ঠিক হয়, ‘নো ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান, নো আইএসএল’।

কিন্তু কী ভাবে দুই ক্লাব আটকাবে আতলেতিকো দে কলকাতার ম্যাচ বা আইএসএল? কোথা থেকে ওঁরা পাচ্ছেন এটা বলার জোর? এক কর্তা বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকার আমাদের পাশে। আমাদের খেলতে না দেওয়া হলে আইএসএল মাঠ পাবে না!’’ কর্তাদের সঙ্গে কি একমত রাজ্য সরকার? ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সরাসরি কিছু বলতে চাননি। শনিবার রাতে তিনি বলে দিলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পুরো ব্যাপারটা দেখছেন। তবে এটা বলছি উনি বাংলার ফুটবলের কোনও অসম্মান হলে মেনে নেবেন না।’’ এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ফেডারেশন সচিব কুশল দাসও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement