সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে বার বার প্রশ্নের মুখে পড়েছেন আম্পায়াররা। ছবি: রয়টার্স।
সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপ আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করে দিয়ে গেল। বিশ্বকাপ জুড়ে নিকৃষ্ট মানের আম্পায়ারিং করেছেন কুমার ধর্মসেনা-মারে ইরাসমাসরা। বিশ্বকাপ ফাইনালেও একই ছবি।
ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ফাইনালে দাঁড়িয়েছিলেন ধর্মসেনা ও ইরাসমাস। ম্যাচের তৃতীয় ওভারেই কিউয়ি ব্যাটসম্যান হেনরি নিকোলসকে ভুল আউট দেন ধর্মসেনা। ক্রিস ওকসের বল নিকোলসের ব্যাটের অনেক দূর দিয়ে গেলেও, ধর্মসেনা আঙুল তুলে দেন। পরে রিভিউ দেখে থার্ড আম্পায়ার নিকোলসকে নট আউট দেন।
নিকোলসের মতো সৌভাগ্য ছিল না রস টেলরের। ম্যাচের ৩৩ তম ওভারে মার্ক উডের বল টেলরের প্যাডে লাগলে ইরাসমাস তাঁকে আউট দেন। পরে রিপ্লেতে দেখা যায় বল উইকেটের অনেক উপর দিয়ে যাচ্ছিল। মার্টিন গাপ্তিল অনেক আগেই রিভিউ নষ্ট করে ফেলায়, টেলর আর রিভিউ নিতে পারেননি।
আরও পড়ুন: পাঁচ না ছয়, কত রান হওয়া উচিত ছিল ফাইনালের ওই বলে? জেনে নিন নিয়ম কী বলছে
আরও পড়ুন: আল্লা সঙ্গে ছিলেন, বিশ্বকাপ জিতে বললেন অইন মর্গ্যান
এর আগে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচেও জেসন রয়কে আউট দেওয়া নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। সে বারও এই দুই আম্পায়ারই দায়িত্বে ছিলেন। ক্রিকেটবিশ্ব ভেবেছিল, ফাইনালে আর হয়তো ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। রবিবাসরীয় ফাইনালে একই ঘটনা দেখা গেল।
ভারত-নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনালে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির আউট নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়মক সংস্থা আইসিসি-র নিয়ম অনুযায়ী, ৪১-৫০ ওভার পর্যন্ত পাওয়ার প্লের সময়ে আউটফিল্ডের বাইরে (অর্থাত্ ৩০ গজের বাইরে) পাঁচ জনের বেশি ফিল্ডার রাখা যায় না। এই ক্ষেত্রে বলটি নো বল হিসেবে গ্রাহ্য হয়। কিন্তু, প্রথম সেমিফাইনালে ৪৮.৩ ওভারে নিউজিল্যান্ডের ছ’ জন ফিল্ডার বাইরে ছিলেন। ম্যাচের দুই আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ ও রিচার্ড কেটেলবরের চোখ এড়িয়ে যায় বিষয়টা। ধোনির আউট দেখার পরে অনেকেই বলেন, ফিল্ডিং প্লেসিং ফিল্ড আম্পায়ারদের নজর এড়িয়ে যেতেই পারে। ফিল্ডার প্লেসিংয়ের বিষয়টা থার্ড আম্পায়ার কেন ফিল্ড আম্পায়ারদের গোচরে আনলেন না?
অস্ট্রেলিয়া- ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে 'ইউনিভার্স বস' ক্রিস গেলের আউট নিয়েও তৈরি হয়েছিল জলঘোলা। একই ওভারে পর পর দু' বার ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হন ‘ক্যারিবিয়ান দৈত্য’। মিচেল স্টার্কের যে বলে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন গেল, তার আগের বলটিও ছিল নো। ফলে আউট তো দূর অস্ত। বরং ফ্রি হিট পাওয়ার কথা ছিল গেলের।
ফাইনালে গাপ্তিলের ছোড়া বল বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে বাউন্ডারির সীমানা অতিক্রম করে। নিয়ম অনুযায়ী, পাঁচ রান পাওয়ার কথা ইংল্যান্ডের। আম্পায়ারদের জন্য ছ’ রান পেলেন স্টোকসরা।
বিশ্বকাপে আম্পায়ারিং-মানের অবনমন কেন? প্রযুক্তির অত্যধিক ব্যবহারের জন্যই কি আম্পায়াররা তাঁদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন? কঠিন সিদ্ধান্তের বিষয়টা ছেড়ে দিচ্ছেন প্রযুক্তির উপরেই? সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপে হতশ্রী আম্পায়ারিং দেখে এমনই সব প্রশ্ন কিন্তু উঠে আসছে।