ওয়াহাব রিয়াজ়।—ছবি রয়টার্স।
দু’বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের বিরুদ্ধে ৮.৪ ওভারে ৮৯ রান খরচ করার পরেই তাঁকে কার্যত বাতিলের খাতায় ফেলে দিয়েছিলেন নির্বাচকেরা। তার পরেই অদ্ভুত ভাবে শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপের দলে ডাক পান তিনি।
৩৩ বছরের বাঁ হাতি পাক পেসার ওয়াহাব রিয়াজ় জানাচ্ছেন, দুই কিংবদন্তি ওয়াসিম আক্রম এবং ওয়াকার ইউনিসের মূল্যবান পরামর্শই তাঁকে দিয়েছে নতুন জীবন। না হলে হয়তো এ বার বাড়িতে বসেই তাঁকে দেখতে হত বিশ্বকাপের ম্যাচ। তিনি বলেছেন, ‘‘ভাগ্যের এমন পরিবর্তন আমি কল্পনাও করতে পারিনি। আজ প্রত্যেকটা মুহূর্ত উপভোগ করছি। না হলে তো এখন আমার বাড়িতে বসে দলের জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া অন্য কোনও কাজই থাকত না।’’
নতুন ভাবে ফিরে আসার কাহিনি বলতে বসে ওয়াহাবের মন্তব্য, ‘‘এখানে আসার পরে গত সপ্তাহে দেখা করেছিলাম আমার দুই প্রেরণা আক্রম এবং ইউনিস ভাইয়ের সঙ্গে। দুজনেই পরামর্শ দিয়েছিলেন, কাউকে ভয় করার কারণ নেই। নিজের স্বাভাবিক বোলিং করে যেতে হবে। সেই পরামর্শই আমার মানসিকতা আমূল পাল্টে দিয়েছে।’’ সেখানেই না থেমে ওয়াহাব আরও বলেছেন, ‘‘আমি ছোটবেলা থেকে ওয়াসিম ভাইয়ের বোলিং লক্ষ্য করেছি। ওঁকে দেখলেই আমি অনুপ্রাণিত হয়ে উঠি। তা ছাড়া ওয়াকার ভাই ছিলেন আমার প্রাক্তন কোচ। তাঁদের যে কোনও পরামর্শ আমার কাছে অমূল্য। এখানেও তাঁদেরই মন্ত্রে আমি নিজেকে আবার ফিরে পেয়েছি।’’
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৮২ রানে তিন উইকেট নিয়ে ওয়াহাব আবারও পাক দলের বোলিং বিভাগের সেরা অস্ত্রে পরিণত হয়েছেন। তবে তা নিয়ে খুব একটা উচ্ছ্বাস দেখাতে রাজি নন পাক বাঁ হাতি পেসার। তিনি জানিয়েছেন, দলের বাইরে থাকার সময়ে প্রতিনিয়ত নিজের সঙ্গে লড়াই করা তাঁর কাছে ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেছেন, ‘‘দলের বাইরে চলে গেলেই নষ্ট হয়ে যায় মানসিকতা। লড়াই করার ইচ্ছে অনেকটাই কমে যায়। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল।’’ যোগ করেছেন, ‘‘এই সময়ে নিজেকে আবার ক্রিকেটের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজন ছিল কিছু মূল্যবান পরামর্শের। আমি ছুটে গিয়েছিলাম দুই প্রিয় বোলারের কাছে। ওঁরাই আমাকে ফিরে আসার উপায় বলে দিয়েছেন। ওঁদের কাছে আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞ। এ বার আমাকে দলকে বিশ্বকাপ দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে।’’
আগামী সপ্তাহে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ভারতের বিরুদ্ধে মহারণ। যে প্রতিপক্ষ শিবিরে থাকবেন যশপ্রীত বুমরার মতো বিধ্বংসী বোলার। ভারতীয় পেসার সম্পর্কে সমীহের সুর শোনা গিয়েছে ওয়াহাবের গলায়। বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপে সবে একটি ম্যাচে খেললেও বুমরা সাম্প্রতিক সময়ে খুব ভাল বোলিং করছে। তবে আমি মনে করি, ওকে যদি এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা বোলার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, তাতে বুমরার চাপ অনেক বেড়ে যাবে।’’