মারমুখী মেজাজে ওয়াহাব রিয়াজ। ছবি: রয়টার্স।
অল্প রান তাড়া করতে নেমে আফগানদের চতুর বোলিং ও নিজেদের উইকেট ছুড়ে দেওয়ার বদভ্যাসের জন্য একসময়ে বেশ সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। শেষের দিকে ওয়াহাব রিয়াজের মারমুখী ব্যাটিং পাকিস্তানকে এনে দেয় জয়। বিশ্বকাপের শেষ চারে যাওয়ার আশা জিইয়ে রাখতে আফগানদের হারাতেই হত পাকিস্তানকে। ২২৭ রান তাড়া করতে নেমে একসময়ে পাকিস্তানের রান দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৫৬। পাক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ নিজের উইকেট ছুড়ে দেন। পাকিস্তানের জয়ের সমীকরণ তখনও বেশ কঠিন। ৬৬ বলে ৭২ রান দরকার পাকিস্তানের।
ইমাদ ওয়াসিমের সঙ্গে ৫০ রানের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ করার পরেও শাদাব খান রান আউট হন। ব্যাট হাতে নামেন ওয়াহাব। বড় শট খেলার মতো ব্যাটসম্যান তখন দরকার ক্রিজে। কারণ ইমাদ ওয়াসিম একদিকের উইকেট কামড়ে ব্যাট করছেন। একজন ব্যাটসম্যানের দরকার ছিল যিনি ইমাদের উপর থেকে চাপ কমাতে পারবেন। এই অবস্থায় ওয়াহাব মাত্র ৯ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলেন। আপাতদৃষ্টিতে দেখলে মনে হবে এ আর এমন কী রান করেছেন ওয়াহাব। কিন্তু, পরিস্থিতির বিচার করলে ওয়াহাবের এই রান মূল্যবান। নিজেকে মেলে দেন তিনি।
রশিদ খানের বল এক্সট্রা কভার দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠান ওয়াহাব। এখানেই শেষ নয়। মিড উইকেট দিয়ে এর পরে রশিদকে গ্যালারিতে ছুড়ে ফেলেন ওয়াহাব। দিনের শেষে ওয়াহাব হাসছেন। অথচ ম্যাচের আগে চোট পেয়ে মাঠে নামা নিয়েই প্রশ্নচিহ্ন পড়ে গিয়েছিল।
ফিল্ডিং প্র্যাকটিসের সময়ে ডান হাতে চোট লাগে ওয়াহাবের। চিড় ধরে তাঁর ডান হাতের কনিষ্ঠায়। সাহস ও দৃঢ় মনোবলের জোরে চিড় ধরা আঙুল নিয়েও পুরো ম্যাচ খেলেন এই বাঁ হাতি পাক বোলার।
ম্যাচের পরে ওয়াহাব বলেন, “ম্যাচের আগে অধিনায়ক আমার চোট নিয়ে জানতে চান। আমি উত্তরে ক্যাপ্টেনকে বলি, ব্যাটিং বা ফিল্ডিং করার সময়ে সামান্য অসুবিধা হলেও বল করতে আমার কোনও অসুবিধা নেই।’’ এর পরেই ওয়াহাবকে খেলানোর সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট।
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আট ওভার বল করে ২৯ রানের বিনিময়ে দু’টি উইকেট নেন ওয়াহাব। তাঁর আর শাহিন আফ্রিদির বলেই আফগানিস্তানকে রানে বেঁধে রাখে পাকিস্তান।
আঙুলের চোট প্রভাব ফেলতে পারেনি রিয়াজের বোলিংয়ে। চেনা ভঙ্গিতেই বাউন্সার, রিভার্স সুইং, ইয়র্কার দেন তিনি। ব্যাট করতে নেমে দলের প্রয়োজনে বড় শট খেলেন ওয়াহাব।
পাকিস্তানের পরের ম্যাচ বাংলাদেশের সঙ্গে। শুক্রবার কি নামতে পারবেন ওয়াহাব রিয়াজ? তাঁর সাফ জবাব, ‘‘চোট নিয়ে এই ম্যাচে খেলার পরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আমার খেলা নিয়ে কোনও সংশয় থাকতে পারে না।’’