রাবাডা ও দু' প্লেসি। ছবি: এএফপি
চলতি বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সাতটির মধ্যে মাত্র একটি ম্যাচজিতেছে প্রোটিয়া-বাহিনী। একটি মাত্র ম্যাচ তারা জিতেছে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। পয়েন্ট তালিকায় আফগানদের থেকে ঠিক এক ধাপ উপরে ফ্যাফ দু’ প্লেসির দল। পয়েন্ট টেবলে আফগানিস্তান সবার শেষে। অথচ এমন হওয়ার তো কথা ছিল না। দক্ষিণ আফ্রিকা চিরকালের ‘চোকার্স’। তাই বলে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে কোনওদিন মুখ থুবড়ে পড়তে হয়নি হ্যান্সি ক্রোনিয়ের দেশকে। এ বার তো কাগিসো রাবাডার উপরে ভরসা করেই ইংল্যান্ডে খেলতে এসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। রাবাডাও আগুন জ্বালাতে পারেননি বিলেতের বাইশ গজে। তাঁর এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সের কারণ কী?
প্রশ্ন উঠেছে রাবাডার ফিটনেস ও ক্লান্তি নিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারের পড়তি ফর্মের জন্য বিশেষজ্ঞরা আইপিএলকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন। আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে দুরন্ত ছন্দে ছিলেন এই তরুণ পেসার। মাত্র ১২টি ম্যাচ খেলেই নিয়েছিলেন ২৫টি উইকেট। বিশ্বকাপে চনমনে রাখার জন্য আইপিএল-এর মাঝপথেই দেশে ফেরত পাঠানো হয় তাঁকে। কিন্ত এই বিশ্বকাপে একদমই নিজের চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি তাঁকে। বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত তাঁর গড় ৫০.৮৩। তাঁর ঝুলিতে মাত্র ছ’টি উইকেট। রাবাডার এমন পারফম্যান্সের কারণ কী?
এই প্রসঙ্গে প্রোটিয়া অধিনায়ক বলেন, ‘‘রাবাডাকে আরও আগে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলাম আমরা। শুধু রাবাডা নয়, আরও কয়েকজন খেলোয়াড়কেও ফিট রাখার জন্য বিশ্রামের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায়নি ওরা।” কারণ হিসাবে দু’ প্লেসি জানান, তিন ফরম্যাটেই খেলেন যাঁরা, তাঁদের এই বিশ্রাম খুব প্রয়োজন ছিল বিশ্বকাপের আগে।
আরও পড়ুন: অর্জুনের বলে স্টার্ককে খেলার মহড়া ইংল্যান্ডের
নিজের দিনে বিশ্বের তাবড় তাবড় ব্যাটসম্যানদের উইকেট ছিটকে দাওয়ার ক্ষমতা রাখেন আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের পাঁচ নম্বর বোলারটি।দু’প্লেসির মতে, ‘‘এটা কোনও অজুহাত নয়, কিন্তু ওর গতি যে আগের থেকে কমে গিয়েছে, তা দেখাই যাচ্ছে।’’
বিশেষজ্ঞদের মতে, শক্তিশালী বিসিসিআই-এর চাপে দক্ষিণ আফ্রিকা বোর্ড বিশ্বকাপের আগে তাঁদের সেরা খেলোয়াড়দের আইপিএলে খেলতে ছাড়তে বাধ্য হয়।রাবাডা এই বিষয়ে বেশি কথা বলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘চোট- আঘাতের কথা মাথায় রেখে আগে দেশে ফিরে আসার প্ল্যান থাকলেও, তা কার্যকর হয়নি। কেন হয়নি, তা নিয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।’’
অতীতেও বিশ্বকাপে সাফল্য ছিল না প্রোটিয়াদের। জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছেও বারবার হারতে হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ২০১৫ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে পৌঁছলেও ‘চোকার্স’বদনাম ঘোচাতে ব্যর্থ হন দু’প্লেসি-ডে’ভিলিয়ার্স-আমলাদের নিয়ে তৈরি দক্ষিণ আফ্রিকা। নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বিদায় নেয় তারা। ম্যাচ হারার পরে মাঠেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মর্নি মর্কেল। সেই দৃশ্য এখনও জীবন্ত ক্রিকেটপ্রমীদের স্মৃতিতে। চার বছর পরেও কিন্তু ভাগ্য বদলাল না দক্ষিণ আফ্রিকার।
আরও পড়ুন: ভারতকে বিশ্বকাপ এনে দিতে পারে বুমরা, বলছেন বিশ্বজয়ী ক্লার্ক