অনেক এগিয়ে আজ সেমিফাইনালে নামবে ভারত

নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে আমার দলটা এ রকম হবে: রাহুল, রোহিত, বিরাট, পন্থ, ধোনি, কেদার, হার্দিক, জাডেজা, ভুবনেশ্বর, চহাল, বুমরা। অনেকেই আমার এই দলটা দেখে ভ্রু কোঁচকাতে পারেন।

Advertisement

জেফ থমসন

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০৪:১২
Share:

প্রত্যয়ী: ম্যাঞ্চেস্টারে অনুশীলন কুলদীপ যাদবের। সোমবার। রয়টার্স

নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে উপমহাদেশের মতো উইকেট পেতে চলেছে ভারত। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের বাইশ গজ নিষ্প্রাণই হবে। প্রথম দিকে বল ভালই ব্যাটে আসবে। পরের দিকে বল নিচু হতে পারে এবং স্পিনাররা নিঃসন্দেহে খুশি হবে এই ধরনের উইকেটে বল করে। তাই আমার পরামর্শ হল, এই ব্যাপারটা মাথায় রেখে ঠিকঠাক দল বাছা।

Advertisement

আমি হলে যে কোনও দিন কুলদীপ যাদবের আগে রবীন্দ্র জাডেজাকে খেলিয়ে দিতাম। এতে করে যে শুধু ভারতের লোয়ার অর্ডার ব্যাটিংই মজবুত হবে, তাই নয়, দারুণ এক জন ফিল্ডারও পাবে বিরাট কোহালিরা। জাডেজা ১০টা ওভারও বল করে দিতে পারবে। ভুলে যাবেন না, জাডেজা কিন্তু অনিয়মিত বোলার নয়। ওর উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা আছে। পাশাপাশি শেষ দিকে নেমে বড় শটও খেলে দিতে পারবে ও।

নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে আমার দলটা এ রকম হবে: রাহুল, রোহিত, বিরাট, পন্থ, ধোনি, কেদার, হার্দিক, জাডেজা, ভুবনেশ্বর, চহাল, বুমরা। অনেকেই আমার এই দলটা দেখে ভ্রু কোঁচকাতে পারেন। আমার ব্যাখ্যাটা আগে শুনুন। পিচটা খুব নিষ্প্রাণ হতে চলেছে। এই ধরনের পিচে স্পিনাররাই বেশি সুবিধা পেয়ে থাকে পেসারদের চেয়ে। এ জন্য দলে বুদ্ধিমান বোলার থাকা দরকার, যারা মাথা খাটিয়ে পিচ থেকে ফায়দা তুলতে পারবে। শুধু জোরে বল করতে গিয়ে মার খেলে হবে না। যে কারণে আমি মহম্মদ শামিকে বাইরে রেখে ভুবিকে খেলাতে চাইছি। তৃতীয় পেসার হবে হার্দিক। স্পিন বিভাগে আমার অস্ত্র চহাল আর জাডেজা। আর কেদার তিন নম্বর স্পিনার হিসেবে হাতে থাকবে। বাকি পাঁচ বোলারের মধ্যে কেউ মার খেলে ও কাজে আসবে।

Advertisement

আমরা সবাই জানি, নিউজ়িল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন আর বাঁ-হাতি ওপেনার কলিন মুনরো ছাড়া ওদের কেউ ভাল স্পিন খেলে না। উইকেটটা মন্থর থাকবে। তাই এক জন বাড়তি স্পিনার খেলানোটাই বুদ্ধিমানের হবে। শামিকে নিয়ে সমস্যাটা হল, ও প্রথম স্পেলে অসাধারণ বল করে দেবে। কিন্তু ইনিংসের শেষের দিকে এসে উইকেট তোলার চেষ্টায় প্রচুর রানও দিয়ে দেবে। অন্য দিকে ভুবি ধূর্ততার সঙ্গে বলের গতি পরিবর্তন করবে। স্লোয়ার বাউন্সার দেবে। ব্যাটসম্যানদের বাধ্য করবে ওর (ভুবির) পছন্দ মতো জায়গায় শট খেলতে।

আর একটা বিকল্প হতে পারে এক জন ব্যাটসম্যানকে বাদ দিয়ে বাড়তি বোলার খেলানো। আগের ম্যাচে তো দীনেশ কার্তিক সাত নম্বরে ব্যাট করল। আমার মত হল, কেদারকে অলরাউন্ডার হিসেবে খেলিয়ে দাও। এখানে এক জন ব্যাটসম্যানকে বসিয়ে শামিকে খেলানোর কথা ভাবা যেতে পারে। কিন্তু মন্থর উইকেটের কথা ভেবে কেদারকে দলে দরকার। তবে যদি বৃষ্টি হয় আর আকাশে মেঘ থাকে, তা হলে চোখ বন্ধ করে শামিকে খেলাতে হবে।

বৃষ্টি হলে কিন্তু ট্রেন্ট বোল্ট আর লকি ফার্গুসন— দু’জনেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। লকির সঙ্গে আমি কিছু দিন কাজ করেছি। ছেলেটা খুব লড়াকু। ও অনেকটা অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্সের মতো। ক্রিজটাকে খুব ভাল কাজে লাগাতে পারে। মাঝে মাঝে একটু কোণ ঘেঁষে বল করে, যাতে ওপেনিং ব্যাটসম্যানরা সমস্যায় পড়ে যায়। লকি খুব জোরের সঙ্গে বলটা ভিতরে নিয়ে আসতে পারে। যাতে সমস্যায় পড়তে পারে রোহিত। মনে রাখবেন, রোহিত কিন্তু হাত এবং চোখের বোঝাপড়ার ওপর বেশি নির্ভরশীল। ওর ফুটওয়ার্ককে কখনওই সেরা বলা যাবে না। বিরাট এবং রোহিতের ব্যাটিং দেখলে বুঝবেন, ভাল ফুটওয়ার্কের কারণে বিরাট বলটা কী ভাবে ভাল সামলায়। লকিকে কিন্তু সতর্ককতার সঙ্গে খেলতে হবে রোহিতকে।

ভারতের উচিত হবে বোল্ট এবং লকিকে সাবধানে খেলা। যাতে শুরুতে বেশি উইকেট না পড়ে। এই দুই পেসারের তুলনায় ম্যাট হেনরি, মিচেল স্যান্টনার, গ্র্যান্ডহোম বা নিশামের বিরুদ্ধে রান করাটা সহজ হবে।

আমি আবহাওয়ার পূর্বাভাসে চোখ রাখছিলাম। মনে হচ্ছে, আজ, ম্যাঞ্চেস্টারে বৃষ্টি হলেও হতে পারে। তাই ডাকওয়ার্থ লুইসের কথা মাথায় রেখে পরে ব্যাট করাই ঠিক হবে। সারা বিশ্ব জানে, রান তাড়া করতে কতটা ভালবাসে বিরাট। আর একটা কথা বলে রাখছি। বৃষ্টি হোক বা না হোক, ভারতই জিতছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement