কিছু নাম নিয়ে ছিল বিস্তর আলোচনা। কয়েক জনকে বলা হচ্ছিল, নিশ্চিত ভাবে থাকছেন দলে। কয়েক জনকে নিয়ে আবার শেষ মুহূর্তে তৈরি হয়েছিল আশঙ্কার মেঘ। সবাইকে চমকে দিয়ে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা হল মুম্বইয়ে। কেমন হল সেই দল? দেখে নেওয়া যাক।
বিরাট কোহালি, অধিনায়ক: কপিল দেব ও ধোনির পর কাপটা তাঁর হাতেই যেন যায়, সারা দেশ তারই অপেক্ষায়। রানমেশিন বিরাট কোহালির অধিনায়কত্ব ও বড় স্কোর গড়ার ক্ষমতা নিয়ে কোনও কথাই হবে না। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডে একদিনের সিরিজে সাফল্য পেয়েছে দল তাঁরই নেতৃত্বে। তাঁর আত্মবিশ্বাসই দলকে অনেকটা এগিয়ে দেবে।
রোহিত শর্মা, সহ-অধিনায়ক: বিশ্বকাপে রোহিতের দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে বিতর্কের কোনও অবকাশই নেই। সহ-অধিনায়ক রোহিতের ধারাবাহিকতা নিয়ে কোনও কথা হবে না। ধওয়নের সঙ্গে সঠিক জুটি বাঁধলে দলের পক্ষে তা অনেকটাই সুবিধাজনক। এ ছাড়াও দীর্ঘ ইনিংস খেলে স্ট্রাইক রেট বাড়ানোর ক্ষমতার জন্যই রোহিত যে ইংল্যান্ডের আসরে বড় ভরসা হতে চলেছেন, এতে কোনও সন্দেহ নেই।
শিখর ধওয়ন, ব্যাটসম্যান: ধওয়নের পক্ষে গত এক বছর মোটামুটি কাটলেও ওপেনারদের মধ্যে তিনিই প্রথম ‘চয়েস’। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের সেরা রান স্কোরার ছিলেন ধওয়ন। ইংল্যান্ডে ভারতের সাফল্যের অনেকটাই নির্ভর করবে ধওয়নের ভাল খেলার উপরে।
লোকেশ রাহুল, ব্যাটসম্যান: বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ১৫ জনের দলে এলেন তৃতীয় ওপেনার হিসাবে। আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য সাসপেন্ড হয়েছিলেন দল থেকে। রাহুল দ্রাবিড়ও প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান বলেই উল্লেখ করেছিলেন লোকেশ রাহুলকে। আইপিএলেও ফর্মে রয়েছেন তিনি।
দীনেশ কার্তিক, উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান: শীতল মস্তিষ্কের এই ক্রিকেটার দলে এলেন অভিজ্ঞতার কারণেই। রিজার্ভ উইকেটরক্ষক তো বটেই, ফিনিশার কার্তিকের উপরেও ভরসা রাখলেন নির্বাচকরা।
বিজয় শঙ্কর, অলরাউন্ডার: ভারতের হয়ে এখনও পর্যন্ত মাত্র ৯টি ওয়ান ডে খেলে তাঁর সংগ্রহ ১৬৫ রান। সর্বোচ্চ ৪৬। গড় ৩৩। নির্বাচকরা মনে করছেন, ইংল্যান্ডের পরিবেশে কাজে আসতে পারে তাঁর মিডিয়াম পেস বোলিং। তিনিও থাকছেন বিশ্বকাপের দলে।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান: বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক। ২০১১ সালে ক্যাপ্টেন কুলের হাত ধরেই জয় পেয়েছিল ভারত। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ধোনি নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে চলেছেন সমানে। সঙ্গে রয়েছে তাঁর অসাধারণ ম্যাচ রিডিং।
কেদার যাদব, অলরাউন্ডার: বিশ্বকাপের দলে তিনিও জায়গা পেলেন অলরাউন্ডার হিসাবেই। তাঁর ব্যাট মিডল অর্ডারে ভরসা দেবে। সঙ্গে রয়েছে তাঁর অদ্ভুত অ্যাকশনের বোলিং।
হার্দিক পাণ্ড্য, অলরাউন্ডার: রাহুলের সঙ্গে একই কারণে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল হার্দিক পাণ্ড্যকে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দারুণ কামব্যাক করেছেন তিনি। হার্দিক ব্যাট ও বল দু’য়েই দক্ষ। অলরাউন্ডার হার্দিক থাকছেন বিশ্বকাপের দলে।
রবীন্দ্র জাডেজা, অলরাউন্ডার: বল ও ব্যাট দুয়েই দক্ষ। মাঝের ওভারগুলিতে রান আটকানোর ক্ষমতা রাখেন। অলরাউন্ডার হিসাবেই দলে থাকছেন জাডেজা। চলতি আইপিএলেও পারফরম্যান্স বেশ ভাল তাঁর।
কুলদীপ যাদব, স্পিনার: চায়নাম্যানের ভেল্কি যদি চহালের সঙ্গে যোগ হয়, বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোই মুশকিল। কব্জির খেলেই কুল-চা জুটি বিশ্বকাপ মাতাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। দুই স্পিনার ফর্মে থাকলে আর চিন্তার কারণ থাকবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। ৩৯টি একদিনের ম্যাচে ৭৭টি উইকেট পেয়েছেন তিনি।
যুজবেন্দ্র চহাল, স্পিনার: তাঁর হাতে জাদু রয়েছে, এমনটাই বলেছেন কপিল দেবের মতো একাধিক প্রাক্তনী। বোলিং বৈচিত্র নিয়ে প্রশংসা করেছেন মুথাইয়া মুরলীধরনও। ডান হাতি লেগ ব্রিক স্পিনারের কব্জির ভেল্কিতে বিপক্ষের কটা উইকেট পড়ে সেটাই দেখার।
ভুবনেশ্বর কুমার, পেসার: দলে সুযোগ পেলেন যোগ্য হিসাবেই। এই ডান হাতি ফাস্ট বোলার দলের বড় ভরসা। ১০৫টি একদিনের ম্যাচ খেলে ১১৮টি উইকেট পেয়েছেন ভুবি। বুমরার সঙ্গে জুটিতে অসাধারণ।
মহম্মদ শামি, পেসার: ভারতীয় পেসারদের মধ্যে অন্যতম সেরা শামি। তিনি ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলছেন। তাঁর গতি বিপক্ষকে ভয় ধরানোর জন্য যথেষ্ট। তৃতীয় সিমার হিসাবে তাঁর উপরেই ভরসা রাখলেন নির্বাচকরা।
যশপ্রীত বুমরা, পেসার: তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটেই বল হাতে সোনা ফলিয়েছেন। আইপিএলেও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে বুমরার ফর্ম অসাধারণ। গতি আর ইয়র্কারে বিধ্বস্ত করতে পারেন বিপক্ষকে।