একান্তে: স্টার্কের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট স্ত্রী অ্যালিসা। ফাইল চিত্র
৮.৪-১-৪৩-৪! ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মিচেল স্টার্কের এ হেন বিধ্বংসী বোলিংয়ের রহস্য ফাঁস করলেন তাঁর স্ত্রী অ্যালিসা হিলি। অ্যালিসা নিজেও অস্ট্রেলিয়ার মহিলা দলের ক্রিকেটার। সেই সঙ্গে তিনি কিংবদন্তি প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় উইকেরক্ষক ইয়ান হিলির বোন। অ্যালিসা টুইট করে জানিয়েছেন, অইন মর্গ্যানদের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে হোটেলে প্রাতরাশের টেবলে স্টার্ককে বিদ্রুপ করেন এক ইংরেজ সমর্থক। এই ঘটনাই তাঁকে ম্যাচের আগে মারাত্মক তাতিয়ে দিয়েছিল।
স্টার্ক নিজেও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। লর্ডসে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে উঠে তিনি বলেছেন, ‘‘তখন আমার ঘুমও কাটেনি। বেশ কেতার পোশাক পরা একজন আমায় স্ট্র্যাপ জড়াতে দেখে মজা করল। সঙ্গে টানল আমার বোলিংয়ের প্রসঙ্গও। আমার তখন খুব খিদে পেয়েছিল।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘আমি কী খাচ্ছি তা নিয়ে লোকটা খুব হাসছিল। তখন আমি তিন খানা ডিমের পোচ খাচ্ছিলাম।’’ অ্যালিসা যাই বলুন স্টার্ক কিন্তু ব্যাপারটাকে হাল্কা ভাবেই দেখেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই সফরে এ রকম নানা মজার ঘটনা ঘটছে। মাঠে এবং হোটেলে। এটাকে বিশ্বকাপের অঙ্গ হিসেবেই দেখছি। অন্য কিছু নয়।’’
ব্রিটিশ মিডিয়া জুড়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে বেন স্টোকসকে আউট করার সেই রিভার্স সুইং ইয়র্কার নিয়ে। বলের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার। বোল্ড হয়ে যাওয়া স্টোকসের এই বলের কোনও জবাব জানা ছিল না। ক্রিকেট বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, এটাই বিশ্বকাপের সেরা বল। এই বলটি নিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটেও রীতিমতো হইচই হচ্ছে। মজা করে একজন যেমন লিখেছেন, এই বলটা দেখে ইয়র্কার দেওয়ার জন্য বিখ্যাত ভারতীয় পেসার যশপ্রীত বুমরাও তাঁকে হিংসে করবেন। স্টার্ক বলেছেন, ‘‘নিঃসন্দেহে স্টোকস অসাধারণ ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কা ম্যাচটা তো ও প্রায় একাই বার করে দিচ্ছিল। আমরা জানতাম, যতক্ষণ ও উইকেটে আছে ততক্ষণ নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে না। সৌভাগ্যবশত ওকে আমি আউট করতে পেরেছি।’’
এই বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াই প্রথম সেমিফাইনালে খেলা নিশ্চিত করেছে। কিন্তু অস্ট্রেলীয় পেসার মিচেল স্টার্ক মনে করেন, তাঁদের আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে চূড়ান্ত সাফল্য পেতে হলে গোটা দলকেই মাটিতে পা রেখে এগিয়ে যেতে হবে। মঙ্গলবার লর্ডসে আয়োজক দেশ ইংল্যান্ডকে ৬৪ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। তবে সেমিফাইনালের আগে তাদের আরও দু’টি ম্যাচ খেলতে হবে যথাক্রমে নিউজ়িল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে।
স্টার্ক বলেছেন, ‘‘সেমিফাইনালের আগে আমাদের জন্য আরও অনেক ক্রিকেট বাকি আছে। গ্রুপ লিগে বাকি দু’টি ম্যাচই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তবে লর্ডসে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দলের আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়েছে। হাজার হোক, এই মাঠেই এ বারের ফাইনালটা হবে।’’ স্টার্ক আরও বলেছেন, ‘‘আমাদের মনে হয় নিউজ়িল্যান্ডের সঙ্গে খেলাটা আমাদের কাছে সবচেয়ে কঠিন হতে যাচ্ছে। ওরা অসাধারণ খেলছে। টুর্নামেন্টের আগে ওদের নিয়ে বেশি আলোচনা হয়নি। অথচ এখন ওদের দিকে সবার নজর। কারণ নিউজ়িল্যান্ড এখানে পরের পর ম্যাচ জিতে চলেছে।’’
স্টার্ক আর জেসন বেহরেনডর্ফই মঙ্গলবার ইংল্যান্ডকে চূর্ণ করতে প্রধান ভূমিকা নেন। বেহরেনডর্ফের পরিসংখ্যান ১০-৪৪-৫। স্টার্ক বলেছেন, ‘‘অবিশ্বাস্য বোলিং করেছে ডর্ফ (বেহরেনডর্ফ)। পাঁচটা উইকেটই ওর প্রাপ্য ছিল। জানি না কেন অনেকে বলেন, দু’জন বাঁ হাতি পেসার নিয়ে খেলা যাবে না। ও আসলে আমার কাছে জানতে চেয়েছিল লর্ডসের উইকেটের কোনও বিশেষত্ব আছে কি না। কিন্তু আমি বিশেষ কিছুই বলতে পারিনি। এখানে তো প্রায় চার বছর আমি খেলিইনি।’’ ওয়ান ডে ম্যাচে স্টার্ক তাঁর প্রস্তুতি প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘ওয়ান ডে-তে একটাই লক্ষ্য থাকে। নিজেকে প্রয়োগ করার চেষ্টা করে যাওয়া। মনে হয় এই বিশ্বকাপে সেই কাজটা ঠিকঠাক করতে পারছি। আর দলেরও কাজে আসছে।’’