রাজনীতিতে যোগ দিয়ে মনোজ বলছেন 'অন্য খেলা হবে' ছবি - টুইটার
রাজনীতিতে যোগ দিয়ে মনোজ তিওয়ারি মোটামুটি বুঝিয়েই দিলেন, তিনি ক্রিকেট ছাড়তে চলেছেন। তাঁর হাঁটুর অবস্থা ভাল নয়। ফলে চলতি বিজয় হজারে ট্রফি খেলছেন না। ভারতীয় দল তো অনেক দূরের কথা, ভবিষ্যতে আবার কবে বাংলার জার্সি গায়ে মাঠে নামবেন সেই নিশ্চয়তাও নেই। তাই শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের হয়ে ব্যাট করতে চান মনোজ তিওয়ারি। বুধবার সকালে আনন্দবাজার ডিজিটালকে সেটা জানিয়েও দিলেন বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক।
হুগলির সাহাগঞ্জের জনসভায় যোগ দিতে যাওয়ার সময় মনোজ বলেন, “সত্যি বলতে এই মুহূর্তে ক্রিকেট নিয়ে একদম ভাবছি না। কারণ আমার হাঁটুর অবস্থা ভাল নয়। এই চোট সারতে অনেকটা সময় লাগবে। তাই বিজয় হজারে ট্রফিতে খেললাম না। বলতে গেলে এ বারের মতো ক্রিকেট মরসুম আমার কাছে শেষ হয়ে গিয়েছে। গত দু’বছর আইপিএলেও আমি নেই। ৩৫ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার জন্য জাতীয় দলেও আর ফেরা সম্ভব নয়। এটা ঠিক যে, ক্রিকেট জীবনে আরও অনেক কিছু পাওয়ার ছিল। তবে কী আর করা যাবে! সবার কপাল তো সমান হয় না। তাই সব কিছু ভেবে শেষ পর্যন্ত রাজনীতির ময়দানকেই বেছে নিলাম।”
অবশ্য তাঁর রাজনীতির মাঠে আসা দু’বছর আগেই হতে পারত। ২০১৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে তৃণমূল যোগ দেওয়ার ব্যাপারে বলেছিলেন। সে বার পিছিয়ে গেলেও এ বার কিন্তু দিদিকে ‘না’ বলতে পারেননি মনোজ। বলছিলেন, “কয়েক দিন আগে দিদি বলেন, ‘তোকে এগিয়ে আসতে হবে’। সেটা শোনার পর দিদিকে ‘না’ বলতে পারিনি। কারণ উনি আমাদের লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা। তাই ওঁর দলের সৈনিক হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।”
বাইশ গজের যুদ্ধে লড়াই করার সময় একাধিক বিতর্কে জড়িয়েছেন। তবে রাজনীতি ভিন্ন মঞ্চ। এখানে যুদ্ধ জয়ের জন্য ব্যক্তিগত আক্রমণ পর্যন্ত করা হয়। বাংলার হয়ে চার নম্বরে ব্যাট করা মনোজ কি ব্যক্তিগত আক্রমণ সামলাতে পারবেন? মনোজের জবাব, “ইদানীং ‘খেলা হবে’ স্লোগান বাজারে খুব চলছে। তবে মনে রাখবেন, আমি কিন্তু বরাবর চার নম্বরে ব্যাট করে এসেছি। তখন যেমন জোরে বোলিং ও স্পিনারদের অনায়াসে সামলেছি, এ বারও রাজনীতির মাঠে থাকা ফিল্ডারদের সামলে নেব। তবে তফাত হল বিপক্ষে ১১ জন থাকে। আর এখানে সংখ্যা অগুন্তি। সামনে অনেক বেশি সামনে ফিল্ডার থাকবে। ব্যক্তিগত আক্রমণ হবে। তবে সেগুলোও ধীরে ধীরে সামলে নেব।”
তবে যতই রাজনীতির মঞ্চে আসুন, বাইশ গজে কাটানো দিনগুলো, তাঁর সাথে ঘটে যাওয়া একাধিক ‘অন্যায়’ ভুলতে পারেন না। তাই তো তিনি আত্মজীবনী লিখবেন বলেও ঠিক করেছেন। সেই কাজ অনেক দূর এগিয়েও গিয়েছে। বললেন, “স্পষ্ট কথা বলার জন্য আমার উপর অনেক অন্যায়-অবিচার হয়েছে। সেগুলো আত্মজীবনীতে তুলে ধরবই। কেউ রুখতে পারবে না।”
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ব্যাপারেও কি সেই বইতে কিছু লেখা থাকবে? মনোজের কড়া প্রতিক্রিয়া, “আজকের বিশেষ দিনেই ওঁর নাম নিতে হল? বই যখন প্রকাশিত হবে, তখন সবাই দেখতে পাবেন। কাউকে রেয়াত করব না।”