দু’পাশে বিশ্বনাথন আনন্দ ও গীত শেঠি। মাঝে সিন্ধু-গোপী। মুম্বইয়ে এক অনুষ্ঠানে। ছবি: পিটিআই।
অলিম্পিক্স থেকে দেশে রুপো নিয়ে পা রাখার পর থেকে শুভেচ্ছা, সংবর্ধনার বন্যায় ভাসছেন। কখনও রাজ্য, কখনও কোনও সংস্থা তো কখনও দীর্ঘদিন তাঁর পাশে থাকা শুভানুধ্যায়ীদের। প্রচারের আলোর তেজটা আরও ভাল ভাবে টের পাচ্ছেন এখন তিনি। তবে ভেসে যাচ্ছেন না। বরং মানুষের প্রত্যাশার চাপ তাঁকে আরও দায়িত্ব নিতে শেখাচ্ছে। যে প্রত্যাশার মান রাখতে তাঁকে আরও পরিশ্রম করতে হবে বলে মনে করছেন তিনি— পিভি সিন্ধু।
১৫ বছর বয়স থেকে তাঁকে সমর্থন করে যাওয়া একটি সংস্থার সংবর্ধনাতে সিন্ধু বুধবার বলেন, ‘‘এখন দায়িত্বটা অনেক বেড়ে গিয়েছে। সবার চোখ এখন আমার দিকে। তবে এটা তো সবে শুরু। আমাকে আরও খাটতে হবে।’’ সঙ্গে সিন্ধু যোগ করেন, ‘‘আমি এখনও পর্যন্ত যা যা জিতেছি তাতে খুশি। পরপর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জিতেছি। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম ব্রোঞ্জ পদকটা পাওয়ার পর থেকেই স্বীকৃতি পাওয়া শুরু হয়। এখন তো দায়িত্বটা অনেক বেশি। অলিম্পিক্সে চার বছরে এক বার খেলার সুযোগ আসে। এখনও আমাকে অনেক দূর যেতে হবে।’’
তাঁর অলিম্পিক্স রুপো জয়ের পিছনে কোচ গোপীচন্দের অ্যাকাডেমির ভূমিকার কথা জানিয়ে সিন্ধু বলেন, ‘‘মলদ্বীপে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে জেতার পর থেকে আমার পথ চলা শুরু। গোপীচন্দ অ্যাকাডেমির পরিকাঠামো খুব সাহায্য করেছে আমায়। আমাদের অ্যাকাডেমিতে যা ব্যবস্থা আছে যথেষ্ট।’’
তবে এত প্রচারের আলোর মধ্যেও কোথাও যেন একটু হলেও রিওয় ফাইনালে হারের হতাশাটা রয়েছে বলে মনে হল সিন্ধুর কথায়। ‘‘সে দিনের লড়াইটা ভালই হয়েছিল। দিনটা ক্যারোলিনার ছিল। তাই ওই জিতেছে। গোপী স্যার আমায় বলেছিলেন সেরাটা দিতে। নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে। সেটাই খেলেছি।’’
বলা হচ্ছিল অলিম্পিক্সে তাঁর সাফল্যের পিছনে নতুন অস্ত্র ‘জাম্প স্ম্যাশ’ দারুণ সাহায্য করেছে। সিন্ধুও বললেন, অলিম্পিক্সের আগে প্র্যাকটিস করার সময় এই নতুন অস্ত্রটা ব্যবহারের কথা ভাবেন। ‘‘জাম্প শটটা খুব সাহায্য করেছে টুর্নামেন্টে। গোপী স্যার আমায় সব সময় বলতেন এটা কাজে লাগাতে। কিন্তু আগে কখনও ম্যাচে শটটা ট্রাই করিনি। প্রথম দিকে শটটা মারা সহজ হয়নি। বেশির ভাগই নেটে আটকে যাচ্ছিল। পরে সেটা সামলে নিয়েছিলাম। এখন তো সবাই শটটার কথা জিজ্ঞাসা করছে। এখন বলতে পারি এটা আমার অন্যতম অস্ত্র।’’
সাধারণত কোর্টে আবেগ বেশি দেখান না সিন্ধু। কিন্তু অলিম্পিক্স ফাইনালে তার উল্টোটা দেখা গিয়েছিল। যার রহস্য ফাঁস করে সিন্ধু বলেন, ‘‘আগ্রাসনটা মুখে ফুটো ওঠাটা দরকার। সঙ্গে প্রত্যেকটা পয়েন্টে সতর্ক থাকতে হবে। কেন না একটা পয়েন্টও হাল্কা ভাবে নিলে অনেক পয়েন্ট হাত থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। তার উপর অলিম্পিক্স ফাইনালে খেলছিলাম। গোটা সপ্তাহটাই দারুণ গিয়েছিল। আমি ভাবিইনি ফাইনালে উঠতে পারব।’’ সঙ্গে বলেন, ‘‘ক্যারোলিনার বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিয়েই নেমেছিলাম। তার আগে ডেনমার্ক ওপেনে ওর বিরুদ্ধে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল। কিন্তু আমার ২-৩টে ভুলের ফায়দা তুলে নিয়েছিল ও। লিডটাও ওর হাতে চলে যায়। পয়েন্টগুলো আমি পেলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারত।’’