অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের প্রথম দিনের ম্যাচের টিকিটের জন্য হাহাকার। জমেছে লম্বা লাইন। —নিজস্ব চিত্র।
রাতারাতি বদলে গেল দিল্লির রং। বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্তও এই ইঙ্গিতটা ছিল না। মনে হচ্ছিল দিল্লি রয়েছে দিল্লিতেই। রাজনীতির রঙে ঢেকে থাকা দিল্লি জাগে শুধু ক্রিকেটেই। সেই ধারণাকেই মিথ্যে প্রমাণিত করে দিলেন দিল্লির জনতা। ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে দিল্লির মানুষ এখন ফুটবলমুখী। ৫৮ হাজারের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের ২৭ হাজার টিকিট স্থানীয় স্কুলগুলিকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ৫০০টি স্কুলে বিলি করা হয়েছে সেই টিকিট। কিন্তু তা বাদ দিয়ে তেমন ভাবে টিকিট কেনার হিড়িক নজরে পড়েনি ম্যাচের আগের রাতেও। কিন্তু দিল্লির ঘুম ভাঙল ফুটবলের ভাবনায়।
সকাল থেকেই স্টেডিয়ামের বাইরের টিকিট কাউন্টারে লম্বা লাইন। হতাশ হয়েও ফিরতে দেখা গেল অনেককে। সে মণিপুরের থাংবোই হোক বা সদ্য কলেজে যোগ দেওয়া দিল্লির প্রবীণ ভদ্রলোক। হাহাকারটা শোনা গেল অফিস থেকে এক ফাঁকে বেরিয়ে পড়া সঞ্জীব যাদবের গলাতেও। বলছিলেন, ‘‘এক ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়়িয়ে আছি। টিকিট নাকি শেষ হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আপনার কাছে আছে?’’ তা শুনে প্রবীণেরও একই আবদার শোনা গেল। তাঁকে তো দেখা গেল, সবার কাছে গিয়েই জিজ্ঞেস করতে, ‘‘একটা এক্সট্রা টিকিট হবে?’’
আরও পড়ুন: ১২জন প্রাক্তনকে নিয়ে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের বোধন করবেন মোদী
এ যেন ইডেনের বটতলা। ম্যাচের দিন সকাল থেকেই টিকিটের জন্য হাহাকার। মিনার্ভা অ্যাকাডেমি থেকে আসা এক উঠতি ফুটবলার তো শেষ পর্যন্ত ব্ল্যাকেই টিকিট কেটে ফেলল। বলছিল, ‘‘অনেক ক্ষণ ধরে চেষ্টা করছি। কিন্তু পাচ্ছি না। কাউন্টারে টিকিট নেই। শেষ পর্যন্ত এক জন নিয়ে গেল। ব্ল্যাকে টিকিট কাটলাম।’’ তিন নম্বর গেটের সামনে বেশ রমরম করেই চলছে টিকিট ব্ল্যাক।
দেখুন ভিডিও:
মণিপুর থেকে দিল্লিতে পড়়তে আসা একটা দল টিকিট না পেয়ে হতাশ। ওদেরই এক জন বলছিলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যের ৮ জন প্লেয়ার খেলবে আর আমরা দেখতে পারব না! এর থেকে হতাশার আর কী হতে পারে। গোলকিপার ধীরজ তো আমার এলাকারই ছেলে। কিন্তু দেখতে পাব না!’’ আবার অনেকেই ফিরছেন হাসি মুখে। যেমন আরসিএফ দলের এক ফুটবলার গুরজিন্দর। অন-লাইনেই কেটে রেখেছিলেন। কাউন্টার থেকে টিকিট হাতে পেয়ে যেন স্বস্তি পেলেন। অনেকে মিলে দলবেঁধে ইন্ডিয়াকে সাপোর্ট করতে এ দিন প্রথম ম্যাচ থেকেই স্টেডিয়ামে ঢুকে পড়ছেন গুরজিন্দররা। একটাই ইচ্ছে, ‘‘যেন জিতিয়ে ফিরতে পারি।’’
এই ১২তম প্লেয়ারের কথাই ম্যাচের আগের রাতে বলে গিয়েছিলেন ভারতের কোচ মাতোস। মাতোসকে সাপোর্ট করতে আজ ভরে যাবে দিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়াম।