কোচের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সাইক্লিস্ট প্রতীকী ছবি
কোচের বিরুদ্ধে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন ভারতের প্রথম সারির এক সাইক্লিস্ট। তাঁকে আগেই দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছিল ভারতের সাইক্লিং সংস্থা। এ বার গোটা দলকেই স্লোভেনিয়ার শিবির থেকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হল। অভিযুক্ত কোচ আরকে শর্মাকেও কড়া চিঠি পাঠিয়ে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে কোচের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন ওই সাইক্লিস্ট, তা দেখে চমকে উঠেছেন সংস্থার কর্তারা। একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ রয়েছে। সাইক্লিস্ট জানিয়েছেন, কোচ তাঁকে নিজের স্ত্রী বানাতে চেয়েছিলেন। জোর করে ঘরে ঢুকে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করেন। বাধা দেওয়ায় সাইক্লিস্টের কেরিয়ার নষ্ট করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। বলে দেন, অভিযোগ জানালে কোনও লাভ হবে না।
অভিযোগে সাইক্লিস্ট জানিয়েছেন, এশিয়ান ট্র্যাক সাইক্লিংয়ে অংশ নিতে ১৫ মে স্লোভেনিয়া যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। যাত্রার তিন দিন আগে কোচ ফোন করে জানান, ওই সাইক্লিস্টকে তাঁর সঙ্গে একই ঘরে থাকতে হবে। শুনে তিনি ভয় পেয়ে যান। যাত্রার আগেই মনোবিদের সাহায্য নেন। ভেবেছিলেন স্লোভেনিয়া গিয়ে আলাদা ঘরের অনুরোধ করবেন। কিন্তু কোচ সে কথা শুনে প্রচণ্ড রেগে যান এবং সাইক্লিস্টের সঙ্গে অভদ্র ব্যবহার করেন। বাধ্য হয়ে কোচের ঘরেই এক রাত কাটাতে হয় তাঁকে।
সাইয়ের এক বড় মাপের কর্তার নজরে বিষয়টি আসতেই ওই সাইক্লিস্টের জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা হয়। এতেই ক্ষুব্ধ কোচ সাইক্লিস্টের কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেন। জানিয়ে দেন, তাঁকে শিবির থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে এবং ভবিষ্যতে তিনি ‘রাস্তায় সবজি বিক্রি করবেন’। শুনে আরও ভয় পেয়ে যান সাইক্লিস্ট।
১৯ মে অনুশীলনের পর ওই সাইক্লিস্টকে নিজের ঘরে ‘ম্যাসাজ’ করার জন্য ডেকেছিলেন কোচ। তিনি যাননি। ২৫ মে বিশেষ প্রস্তুতি নিতে ছেলেদের দলের সঙ্গে জার্মানি যাওয়ার কথা ছিল ওই সাইক্লিস্টের। প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য কোচ তাঁকে নিয়ে যাননি। আসল ঘটনা হয় জার্মানি থেকে ফেরার পরে। সকাল সাতটায় ফিরে সাইক্লিস্টের ঘরে জোর করে ঢুকে পড়েন কোচ। তাঁর বিছানায় শুয়ে পড়েন। বেরিয়ে যেতে বললে জোর করে সাইক্লিস্টকে নিজের কাছে টানার চেষ্টা করেন। তখনই তাঁকে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার প্রস্তাব দেন। এ-ও বলেন, ওই সাইক্লিস্টকে স্ত্রী-র মতো আচরণ করতে হবে। কারণ কোচ ওই সাইক্লিস্টকে স্ত্রী বানাতে চান। সেখানেও বাধাপ্রাপ্ত হলে সাইক্লিস্টের পরিবারকে ফোন করে বলে দেন, তাঁর কোনও প্রতিভা নেই। ভবিষ্যতে কিছু করতে পারবেন না।
তীব্র মানসিক চাপে পড়ে যান ওই সাইক্লিস্ট। বাধ্য হন মনোবিদের শরণাপন্ন হতে। তাঁকে সব খুলে বলেন। পরে ‘টার্গেট অলিম্পিক্স পোডিয়াম স্কিম’-এর সিইও পুষ্পেন্দ্র গর্গকেও সব জানান। গর্গ তখনই সাইক্লিস্টকে দেশে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেন। সাইও যোগাযোগ রেখেছিল। মানসিক ভাবে পুরোপুরি ভেঙে পড়েন ওই সাইক্লিস্ট।
দেশে ফেরার পর কোচকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে সাই।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।