ছবি সংগৃহীত
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৯৮২-’৮৩ মরসুমে ছয় টেস্টের সিরিজে ব্যর্থ হওয়ার পরেই ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার দুঃখ ভুলতে পারেননি গুণ্ডাপ্পা বিশ্বনাথ। সেই সময়ের অনুভূতির কথা তিনি জানিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেটের সম্প্রচারকারী চ্যানেলকে।
কর্নাটকের প্রাক্তন তারকা বিখ্যাত ছিলেন তাঁর স্কোয়ার কাট ও দুরন্ত ফ্লিকের জন্য। কব্জির মোচড়ে অনায়াসে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দি়তে পারতেন বল। কিন্তু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শেষ সিরিজে ছয় ম্যাচে মাত্র ১৩৪ রান ছিল তাঁর। এর পরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে ভারতীয় দলে নেতৃত্বের দায়িত্ব নিতে চলেছিলেন কপিল দেব। দলগঠনের আগেই বিশ্বনাথ ইঙ্গিত পেয়েছিলেন, তাঁকে আগামী সফরে সুযোগ দেওয়া হবে না। কপিল নাকি নিজেই তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, ‘‘আগামী সফরের দলে তোমাকে হয়তো ওরা (নির্বাচকেরা) নেবে না।’’ শনিবার সেই তথ্যই ফাঁস করেছেন বিশ্বনাথ। বলেন, ‘‘ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পরে খুব ভেঙে পড়েছিলাম। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনটি ইনিংসে আমাকে ভুল সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হয়েছিল। তার মধ্যে দু’টি ইনিংসে যদি রান করে দিতাম, পরের সফরে বাদ পড়তাম না। কিন্তু এটাও ক্রিকেটের অঙ্গ। মেনে নিতেই হয়।’’
কপিল অধিনায়ক ঘোষিত হওয়ার আগেই বিশ্বনাথ জেনে গিয়েছিলেন, তাঁকে নেওয়া হচ্ছে না। প্রাক্তন তারকার কথায়, ‘‘কপিল তখনও অধিনায়ক ঘোষিত হয়নি। দল ঘোষণার আগে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, তোমাকে হয়তো ওরা দলে নেবে না। এই কথার কী উত্তর দেব? আমি কি বলব, না আমার অসুবিধা আছে?’’
চার নম্বরে যাঁর শিল্পীর মতো তুলির টান এখনও অনেকের চোখে লেগে রয়েছে, সেই বিশ্বনাথের রাজকীয় আবির্ভাব ঘটেছিল অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের শক্তিশালী পেস আক্রমণের বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ে অপরাজিত ৯৭ রান করে ভারতকে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। ১৯৭৬ সালে ক্রাইস্টচার্চের পেস-সহায়ক পিচে ৮৩ ও ৭৯ রানের ঝোড়ো ইনিংসও ভোলা যাবে না। রয়েছে ইডেনের অসাধারণ ইনিংস।
আরও পড়ুন: লকডাউনের পরেও সেই ক্ষিপ্রতা, বিশ্ব মুগ্ধ পঁয়ত্রিশের রোনাল্ডোয়
মোট ১৪টি সেঞ্চুরি করা বিশ্বনাথ কী করে ভারতীয় দলে সুযোগ পেলেন? তাঁর নিজের কথায়, ‘‘এরাপল্লি প্রসন্ন কর্নাটকের অধিনায়ক থাকাকালীন আমি রঞ্জি ট্রফিতে সুযোগ পাই। প্রসন্ন আমার ব্যাটিং খুব পছন্দ করত। এর পর রঞ্জি ট্রফি খেলার সময় টাইগার পটৌডি আমার ব্যাটিং দেখে। পটৌডি তখন হায়দরাবাদের অধিনায়ক। কর্নাটকের বিরুদ্ধে ওদের ম্যাচ পড়তই। সেখানেই আমাকে প্রথম দেখে টাইগার।’’ নিউজ়িল্যান্ডের সফরকারী দলের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্টস একাদশের হয়ে ভাল পারফর্ম করার পরেই ভারতীয় দলের দরজা খুলে যায় তাঁর সামনে। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বিশ্বনাথ বলেন, ‘‘১৯৬৮ সালে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পাই প্রেসিডেন্টস একাদশের হয়ে। আমাদের অধিনায়ক ছিল চাঁদু বোরডে। আমার ব্যাটিং দেখে পটৌডির কাছে প্রশংসা করে চাঁদু। তার পরেই ভারতীয় দলের দরজা খুলে যায়।’’