কাতারে ট্রফি নিয়ে অদিতি।ছবি: টুইটার।
তেরো সংখ্যাটা যেন এই মুহূর্তে তাঁর প্রাণের বন্ধু! তেরো তাঁর লাকি চার্ম!
গত ১৩ তারিখ গুরুগ্রামের কোর্সে ইউরোপীয় ট্যুরে খেতাব জয়ী প্রথম ভারতীয় মেয়ে হয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন। ঠিক তেরো দিন পরে, আজ দোহা গল্ফ ক্লাবে জিতলেন নিজের দ্বিতীয় খেতাব ও পঁচাত্তর হাজার ইউরোর বিজয়ীর চেক। তিনি, অদিতি অশোক। আঠারোর যে অলিম্পিয়ানকে নিয়ে এই মুহূর্তে গর্বের শেষ নেই ভারতীয় গল্ফের।
‘‘আমার মনে হয় আজ ওকে নিয়ে গোটা দেশের গর্ব করা উচিত,’’ চণ্ডীগড় থেকে টেলিফোনে বলছিলেন জীব মিলখা সিংহ। ভারতীয় গল্ফের মহাতারকা শনিবার রীতিমতো নজর রেখে চলছিলেন অদিতির শেষ রাউন্ডে। বেঙ্গালুরুর অষ্টাদশীর জয়ে উচ্ছ্বসিত জীব বলছিলেন, ‘‘মেয়েটাকে টুপি খুলে কুর্নিশ করব। যা করে দেখাচ্ছে, অবিশ্বাস্য!’’
সত্যিই অবিশ্বাস্য কাণ্ডকারখানা করছেন অদিতি। অলিম্পিক্সে নামা ভারতের প্রথম মেয়ে গল্ফার গুরুগ্রামে ইন্ডিয়ান ওপেন জেতার পর এ দিন কাতার লেডিস ওপেন জিতে ইউরোপীয় ট্যুরে পরপর দু’টি খেতাব জেতার বিরল নজির গড়লেন। এ বছরের জানুয়ারিতে পেশাদার হওয়া অদিতি আপাতত ইউরোপীয় ট্যুরের বর্ষসেরা নতুন মুখ পুরস্কারের দৌড়ে এক নম্বরে। চারটি টুর্নামেন্টে সেরা দশে শেষ করেছেন। জিতেছেন দু’টি খেতাব।
দোহায় শেষ রাউন্ডে তিন-আন্ডার ৬৯ করা অদিতির মোট স্কোর ১৫-আন্ডার ২৭৩। তিন শটে সুইডেনের ক্যারোলিন হেন্ডওয়ালকে হারানোর পর উচ্ছ্বসিত অদিতি বললেন, ‘‘অলিম্পিক্সে বিশ্বসেরাদের পাশে খেলার অভিজ্ঞতা আত্মবিশ্বাস প্রচণ্ড বাড়িয়ে দিয়েছে। রিওয় খেলতে গিয়ে বুঝেছি সেরাদের সঙ্গে টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা রাখি। তার পর থেকেই কিন্তু আমার পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা এসেছে। প্রতিটা টুর্নামেন্টে উন্নতি করছি।’’
জীব আবার অদিতির সঙ্গে তাঁর বাবা-মাকেও ধন্যবাদ দিচ্ছেন। চুয়াল্লিশ বছরের গল্ফার বলছিলেন, ‘‘মেয়েটা অসম্ভব পরিশ্রমী আর শৃঙ্খলাপরায়ণ। ততটাই ফোকাস্ড। আর এই সবের জন্য আমি ফুল মার্কস দেব ওর বাবা-মাকে। যাঁরা মেয়েকে এত সুন্দর ভাবে দিশা দেখিয়েছেন।’’
এ দিনের জয়ে ইউরোপীয় ট্যুরের র্যাঙ্কিংয়ে অদিতি উঠে এলেন তিনে। বিশ্বর্যাঙ্কিংও ১৯৮ নম্বর থেকে ঊর্ধ্বগামী। পাঁচ ফুট সাত ইঞ্চির ছিপছিপে তরুণী এ বার পাড়ি দিচ্ছেন ফ্লোরিডা। যেখানে লেডিস পিজিএ ট্যুরের যোগ্যতা অর্জনের লড়াইয়ের শেষ পর্ব শুরু হবে এ মাসের শেষ দিন থেকে।
ইউরোপের পর এখন মার্কিন বিজয়ই পাখির চোখ কন্যার।