মগ্ন: ফুটবলের অনুশীলনে কিশোরীরা। ইসলামপুরে। নিজস্ব চিত্র
সবুজ মাঠে ফুটবল পায়ে দাপাদাপি তাদের। কারও বয়স ১৪, কেউ বা অষ্টাদশী। ‘ক্যাপ্টেন’ সোনালির নেতৃত্বে বল নিয়ে মাঠে দৌঁড়ে বেড়াচ্ছে নীলিমা, নিকিতা, লক্ষ্মী। ফুটবলে ওই কিশোরীদের এমন দক্ষতা থেকে থমকে যাচ্ছেন পথচারীদের অনেকেই।
ফুটবল যেন রক্তেই মিশে ইসলামপুরের আদিবাসীপাড়ায়। এলাকা অনেকে জানিয়েছেন, স্থানীয় কিশোর-তরুণেরা ফুটবলে মেতে থাকেন। এলাকার অনেক কিশোরীরও ইচ্ছা ছিল, বল পায়ে সকলের নজর কেড়ে নেওয়ার। তবে সহজে তা মেলেনি। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী নির্মলা কিস্কু বলেন, ‘‘প্রথমে যখন বাড়ির লোককে বলেছিলাম মাঠে খেলতে যাব, মা বলেছিল— মেয়ে হয়ে ফুটবল খেলে বেড়াবি! ছোটবেলা থেকেই খেলার প্রতি আগ্রহ ছিল। তা-ই কেউ আর বাধা দেয়নি।’’ ওই ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন সোনালি মুর্মূও ইসলামপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই পরিবারের লোকেদের সমর্থন পেয়েছি। নিয়মিত অনুশীলন করছি। বাইরে খেলতে যাচ্ছি।’’
সোনালি জানান, এখন আরও অনেকে মাঠে আসতে শুরু করেছে। অনুশীলন চলছে ২৪ জন কিশোরীকে নিয়ে। সোনালি বলেন, ‘‘প্রথমে আমাদের দেখে ১৫ জন মেয়ে এসেছিল। তবে হাফপ্যান্ট পরে খেলতে হবে বলে পরিবারের আপত্তিতে তারা অনুশীলনে আসা বন্ধ করে দেয়। এখন অবশ্য নতুন অনেকে এসেছেন।’’ সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী লক্ষ্মী রায় বলেন, ‘‘দিদিদের খেলতে দেখে আমারও ইচ্ছা হয়েছে। তাই খেলতে এসেছি।’’
ওই দলের কিশোরীদের অভিভাবকদের অনেকের বক্তব্য, ‘‘ওরা নিজের মতো করে বাঁচতে শিখছে, এতেই আমাদের আনন্দ।’’
করোনা-আবহে কয়েক মাস বন্ধ থাকলেও, ফের শুরু হয়েছে অনুশীলন। তবে ফুটবল দলের সকলে জানায়, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অনুশীলন চলছে। হাতে নিচ্ছে স্যানিটাইজ়ার। খেলার পরে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া বাধ্যতামূলক।