নজির: বিশ্বকাপে স্কিট ইভেন্টে ব্রোঞ্জ গনেমতের। রবিবার। টুইটার
আইএসএসএফ বিশ্বকাপে ভারতের সোনা জয়ের ধারা অব্যাহত রাখলেন পিস্তল শুটাররা। নয়াদিল্লিতে চলা এই প্রতিযোগিতায় রবিবার পিস্তল বিভাগে ভারতের পুরুষ ও মহিলা দুই দলই সোনা জিতেছে।
তারই সঙ্গে রবিবার বিশ্বকাপ শুটিংয়ে নতুন কীর্তি গড়েছেন ২০ বছরের মহিলা শুটার গনেমত শেখোন। বিশ্বকাপ শুটিংয়ের মঞ্চে প্রথম ভারতীয় মহিলা শুটার হিসেবে শেখোন স্কিট ইভেন্টে পেয়েছেন ব্রোঞ্জ। চণ্ডীগড়ের মেয়ে এই ইভেন্টের ফাইনালে শুরুতে তিনবার ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েননি। লড়াই করে প্রথম তিন পদকজয়ীর মধ্যে নিজের নাম যুক্ত করে ফেলেন।
ব্রোঞ্জ জয়ের পরে গনেমত বলেছেন, “ফাইনালে শুরুর দিকে খুবই মানসিক চাপের মধ্যে ছিলাম। এই প্রথমবার সিনিয়র বিভাগের ফাইনালে লক্ষ্যভেদ করতে নেমেছিলাম। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডের পরে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিই।” তিনি আরও যোগ করেছেন, “প্রথম দুটো সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পরে নিজেকে বলে ফেলি, এর পরের সুযোগ আর নষ্ট করার উপায় নেই। কাজেই সমস্ত মনোযোগকে একত্রিত করে পদক জিততেই হবে। ব্রোঞ্জ নিশ্চিত করার পরে আনন্দ আর ধরে রাখতে পারিনি।” জানিয়েছেন, নিজের বাড়ির শুটিং রেঞ্জে নিয়মিত কঠোর অনুশীলন করার
ফল পেলেন।
প্রথমে যশস্বিনী সিংহ দেশোয়াল, মনু ভাকের ও শ্রী নিবেতা মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে সেরা হন। যশস্বিনীরা ১৬-৮ হারান পোলান্ডের জুলিয়া বোরেক, জোয়ানা ইয়োনা ওয়ারজ়োনোস্কা ও অ্যাগনিয়েস্কা কোরেজোকে। এর পরে যুব অলিম্পিক্স ও এশিয়ান গেমসে সোনা জয়ী সৌরভ চৌধরি, অভিষেক বর্মা এবং শাহজ়ার রিজ়ভি সোনা জেতেন। পুরুষরাও দাপটে ১৭-১১ ফলে জয়ী ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে। ভারতের মেয়েরা দ্বিতীয় যোগ্যতা অর্জন পর্বে ৫৭৬ স্কোর করেছিল। পোলান্ডের স্কোর ছিল ৫৬৭। পুরুষদের দল সেখানে দ্বিতীয় যোগ্যতা অর্জন পর্বে স্কোর করেছিল ৫৭৯। ভিয়েতনাম ৫৬৫।
তবে পুরুষদের দলগত এয়ার রাইফেল বিভাগে ভারতের ঐশ্বরি প্রতাপ সিংহ তোমার, দীপক কুমার এবং পঙ্কজ কুমার রুপো জিতছেন। ফাইনালে ভারতীয় শুটাররা ১৪ স্কোর করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সোনা জেতে ১৬ স্কোর করে। মেয়েদের দলগত এয়ার রাইফেলে ভারত চতুর্থ স্থান পায়। সোনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের।
এ দিকে, ভারতীয় দল ধাক্কা খেল আরও দু’জন শুটার করোনায় আক্রান্ত হওয়ায়। সব মিলিয়ে রাজধানীতে চলা এই প্রতিযোগিতায় ৬ জন অ্যাথলিট সংক্রমিত। তাঁদের নিভৃতবাসে পাঠানো হয়েছে। শনিবার রাতে এই দুই শুটারের পরীক্ষার ফল জানা যায়। শনিবার সকালে তিন জন ভারতীয় শুটারের পরীক্ষার ফল পজ়িটিভ আসে। এর মধ্যে দু’জন ভারতের পিস্তল বিভাগের পুরুষ শুটার। আক্রান্তদের টিম হোটেলে প্রথমে নিভৃতবাসে রাখা হয় পরে হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়। যাঁরা এই তিন শুটারের সঙ্গে একই ঘরে ছিলেন তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে দলের অন্য সদস্যদেরও করোনা পরীক্ষার পরে নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে।
জাতীয় শুটিং সংস্থার একটি সূত্র সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে, ‘‘আন্তর্জাতিক শুটিং সংস্থার নিয়ম অনুযায়ীই সবকিছু হয়েছে। আমরা টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের সঙ্গেও আলোচনা করেছি।’’ যদি কোনও দেশের শুটার একটি বিভাগ থেকে করোনার জন্য সরে যান, তা হলে পরিবর্ত নেওয়া যাবে। তবে সেই শুটারকে যোগ্যতা অর্জনের ন্যূনতম স্কোর পার করতে হবে। বৃহস্পতিবার এমনই একটি ঘটনাও ঘটেছে। এক জন আন্তর্জাতিক মানের নামী শুটারের করোনা পরীক্ষার ফল পজ়িটিভ আসায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে।
৫৩টি দেশের ২৯৪ জন শুটার এই বিশ্বকাপে যোগ দিয়েছে। যার মধ্যে কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, ইউক্রেন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, হাঙ্গেরি, ইটালি, তাইল্যান্ড এবং তুরস্কের মতো দেশ রয়েছে।