নির্ণায়ক সেটে সেরিনা বুঝিয়ে দেন, কেন তাঁকে কিংবদন্তি বলা হয়। ছবি: রয়টার্স।
ফরাসি ওপেনের প্রথম রাউন্ডে যেন অনুশীলন ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন নোভাক জোকোভিচ। যুক্তরাষ্ট্রের টেনিস স্যান্ডগ্রেন তাঁর সামনে দাঁড়াতেই পারলেন না। শেষ সেটে টানা পাঁচটি গেম জিতে চমকে দিলেন সার্বিয়ান তারকা। জোকোভিচ জিতলেন ৬-২, ৬-৪, ৬-২ সেটে।
মঙ্গলবারই প্রথম রোলঁ গারোজে পুরুষ বিভাগের কোনও ম্যাচ নৈশালোকে হল। করোনা বিধি অনুযায়ী প্যারিসে এখন রাত ন’টার পরে কার্ফু। তাই জোকোভিচকে খেলতে হল ফাঁকা গ্যালারির সামনে। যা নিয়ে তিনি যথেষ্টই হতাশ। বলে দিলেন, ‘‘এখানে পুরুষদের প্রথম নৈশ ম্যাচটা খেলতে পেরে আমি গর্বিত। বুঝতে পারছি, এটা ঐতিহাসিক ব্যাপার। নিজের খেলাতেও সন্তষ্ট।’’ যোগ করলেন, ‘‘কিন্তু এতটা শান্ত পরিবেশে খেলতে সত্যিই ভাল লাগল না। দর্শকেরা গ্যালারিতে থাকলে কত ভাল হত। আশা করি, এ রকম পরিবেশে এখানে আর আমাকে খেলতে হবে না। পরের রাউন্ডগুলোয় অনেকেই আমার খেলা দেখতে পাবেন।’’
বুধবার দ্বিতীয় রাউন্ডে মেয়েদের প্রাক্তন এক নম্বর সেরিনা উইলিয়ামস কিন্তু নোভাকের মতো খুব সহজে জেতেননি। তাঁকে খেলতে হল রোমানিয়ার মিহায়েলে বুজ়ারনেস্কুর বিরুদ্ধে। প্রথম সেট সেরিনা সহজে ৬-৩ জিতলেও দ্বিতীয় সেটে ৫-৭ হেরে যান। নির্ণায়ক সেটে অবশ্য মার্কিন তারকা বুঝিয়ে দেন, কেন তাঁকে কিংবদন্তি বলা হয়। ৩৩ বছরের মিহায়েলে এই সেটে কার্যত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ১-৬ হেরে যান।
বুধবার ফরাসি ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছে গেলেন আলেকজ়ান্ডার জ়েরেভও। জার্মান তারকা জিতলেন স্ট্রেট সেটে। তবে প্রথম ও তৃতীয় সেটে তাঁকে কিছুটা হলেও সমস্যায় ফেলেছিলেন যোগ্যতা অর্জন করে খেলার সুযোগ পাওয়া রাশিয়ার রোমান সাফিউলিন। শেষপর্যন্ত জ়েরেভ জেতেন ৭-৬ (৭-৪), ৬-৩, ৭-৬ (৭-১)। পাশাপাশি স্টেফানোস চিচিপাসকে কিন্তু পেদ্রো মার্তিনেজ়ের বিরুদ্ধে জিততে সমস্যাতেই পড়তে হয়নি। গ্রিসের তারকা জেতেন ৬-৩, ৬-৪ ও ৬-৩।
এমনিতে রোলঁ গারোজে এখন সবকিছুতেই ঘুরে ফিরে আসছে নেয়োমি ওসাকার প্রসঙ্গ। যে আবহের বাইরে কেউই যেতে পারছেন না। জাপানের এই তারকা ফরাসি ওপেন থেকে নাম প্রত্যাহার করেছেন, বিতর্কিত পরিস্থিতিতে। ফরাসি ওপেনে খেলতে আসার সময়ই বলে দিয়েছিলেন, এ বার তিনি কোনও সাংবাদিক সম্মেলন করবেন না। তার জন্য জরিমানার টাকা দিতেও রাজি ছিলেন। প্রথম রাউন্ডে জেতার পরে ওসাকা যথারীতি সাংবাদিক সম্মেলন বয়কট করেন। জরিমানাও হয়। কিন্তু সবাইকে বিস্মিত করে সোমবার রাতে টুইট করে জানিয়ে দেন, এ বার প্যারিসে আর খেলবেন না।
সাংবাদিকদের নিয়ে আপত্তির কারণ, অনেক অস্বস্তিকর প্রশ্নের সামনে নাকি পড়তে হয় তাঁকে। যা তাঁর মনঃসংযোগ নষ্ট করে। শেষপর্যন্ত নাম তুলে নেওয়ার জন্য যুক্তি দেন, বয়কটের ঘটনা নিয়ে বড্ড বেশি আলোচনা হচ্ছে প্যারিসে। যা অন্যদের খেলায় মন বসাতে সমস্যা সৃষ্টি করছে। যেটা তিনি চাননি বলেই প্রতিযোগিতা থেকে সরে গেলেন।
স্যান্ডগ্রেনকে হারিয়ে উঠে নোভাককেও পড়তে হল ওসাকা প্রসঙ্গের সামনে। যা নিয়ে সার্বিয়ান তারকা বলে দিলেন, ‘‘আমি পুরোপুরি ওকে সমর্থন করি। সাহস না থাকলে কেউ এ রকম সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। মেয়েটা সত্যিই দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সে সব ভেবে খারাপও লাগছে।’’ যোগ করলেন, ‘‘তবু বলব ও যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছে সেটা অত্যন্ত সাহসী না হলে নেওয়া যায় না। যদি ওর মনে হয়, নিজেকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে কিছুটা সময় টেনিস থেকে বিরতির দরকার, তা হলে সেটাই করুক। আমি ওর সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। আশা করি, আরও শক্তিশালী হয়ে আগামী দিনে নেয়োমি কোর্টে ফিরে আসবে।’’