সাঁতার শুরু করার পরে ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে সাব-জুনিয়র ও জুনিয়র স্তরে প্যারা-সাঁতার প্রতিযোগিতায় জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হন অমর্ত্য। ২০১৭ সালে এশিয়ান ইউথ প্যারা গেমসের আগে অমর্ত্যকে নিয়ে অভিযোগ করেন বেশ কয়েক জন প্রতিযোগী। তার পরে তাঁর শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখে তাঁকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্যারালিম্পিক্স কমিটি।
জাতীয় চ্যাম্পিয়ন প্যারা-সাঁতারু অমর্ত্য চক্রবর্তী। ছবি: টুইটার
পাঁচ বছর আগে প্যারা-সাঁতারুদের (প্রতিবন্ধী সাঁতারু) তালিকা থেকে বাদ গিয়েছিল তাঁর নাম। তার পর থেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন ১৯ বছরের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন প্যারা-সাঁতারু অমর্ত্য চক্রবর্তী। বুধবার দিল্লির এক সরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। অমর্ত্যর চিকিৎসা করাতে গিয়ে সব সঞ্চয় শেষ তাঁর বাবা অমিতোষ চক্রবর্তীর। মৃত ছেলের দেহ হাওড়ার সালকিয়ার বাড়িতে ফিরিয়ে আনার মতো টাকাও তাঁর নেই।
ছেলের মৃত্যুর পরে অমিতোষ বলেন, ‘‘অমর্ত্যর চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমার সব সঞ্চয় শেষ হয়ে গিয়েছে। দু’বছর পরেই চাকরি থেকে অবসর নেব। ছেলের দেহ বিমানে করে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো টাকাও আমার কাছে নেই। আমি প্যারালিম্পিক্স কমিটির কাছে অনেক বার আবেদন করেছি। কিন্তু কোনও সাহায্য পাইনি। ২০১৭ সালে প্যারা-সাঁতারের জাতীয় প্রতিযোগিতায় সেরা সাঁতারুর পুরস্কার পেয়েছিল অমর্ত্য। ওর কি এটা প্রাপ্য?’’
অমিতোষ জানিয়েছেন, অমর্ত্যকে প্যারা-সাঁতারু হিসাবে নিষিদ্ধ করার পরেই তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়। গত বছর ডিসেম্বর মাসে তাঁর শরীরে অস্ত্রোপচারও হয়। তার পরে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয় অমর্ত্যকে। মাস চারেক পরে ফের শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে অমর্ত্যর। প্রথমে তাঁকে চেন্নাই ও দিল্লির এমস-এ চিকিৎসা করানো হলেও একটা সময় পরে চিকিৎসার খরচ চালাতে পারেননি অমিতোষ। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁকে দিল্লির সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
ছেলের মৃত্যুর পরে অমিতোষের অভিযোগের বিষয়ে প্যারালিম্পিক্স কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি গুরশরণ সিংহ বলেন, ‘‘অনেক সময় আমাদের তহবিল এত কম থাকে যে সেখান থেকে আলাদা করে কাউকে সাহায্য করতে পারি না। আমাদের ইচ্ছা থাকলেও সব সময় সম্ভব হয় না। প্রধানত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্যারা-প্রতিযোগিতা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করা হয় আমাদের তহবিল থেকে। কোনও প্রতিযোগীকে আলাদা করে সাহায্য করার মতো অর্থ আমাদের কাছে থাকে না।’’
সাঁতার শুরু করার পরে ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে সাব-জুনিয়র ও জুনিয়র স্তরে প্যারা-সাঁতার প্রতিযোগিতায় জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হন অমর্ত্য। ২০১৭ সালে এশিয়ান ইউথ প্যারা গেমসের আগে অমর্ত্যকে নিয়ে অভিযোগ করেন বেশ কয়েক জন প্রতিযোগী। তার পরে তাঁর শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখে তাঁকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্যারালিম্পিক্স কমিটি।