ফাইল চিত্র।
চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হওয়া নিয়ে লগ্নিকারী সংস্থার সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের সংঘাত কি অবশেষে মিটতে চলেছে? আজ, শুক্রবার লাল-হলুদের কর্মসমিতির বৈঠকে জট খোলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।
ময়দানে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাঁবুতে বিকেল চারটে নাগাদ কর্মসমিতির বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। তার আগে দুপুরে নিজেদের মধ্যে ফের আলোচনায় বসার কথা লাল-হলুদের প্রাক্তন তারকাদের। উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল, আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের খেলার পক্ষে জোরালো সওয়াল করা মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যও যোগ দিচ্ছেন এই বৈঠকে। তিনি বললেন, “লক্ষ লক্ষ সমর্থকদের ক্লাব ইস্টবেঙ্গল। তাঁদের স্বার্থেই এই সমস্যা মিটে যাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলেই আমার আশা।” সপ্তাহখানেক আগেও আলোচনায় বসেছিলেন প্রাক্তন তারকারা। বৈঠকের পরে তাঁরা জানিয়েছিলেন, কয়েকটি শর্ত পরিবর্তন না করলে চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করা উচিত নয় ক্লাব কর্তাদের। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন করেন সময় দেওয়ার। পাশাপাশি, লগ্নিকারী সংস্থার প্রধান হরিমোহন বাঙুরকেও অনুরোধ জানান আলোচনায় বসার।
এই পরিস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন সচিব ও আইনজীবী পার্থসারথি সেনগুপ্তের মধ্যস্থতায় বেশ কয়েকটি শর্ত পরিবর্তন করার প্রতিশ্রুতি দেন লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা। গত সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ক্লাব কর্তাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘‘এ বারও বলছি একটু ছেড়ে খেলুন। সব হয়ে যাবে। পাঁচ বছরের জন্য কেউ গ্যারান্টি দেবেন, এটাও মুখের কথা নয়। ৫০ কোটি টাকা করে লাগে। তাঁদেরও অনেক বলে রাজি করানো হয়েছে। সদস্যদের নিয়ে সমস্যা মিটে গিয়েছে। বাকি সমস্যারও আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে। আমি আশাবাদী, ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে খেলবে। আমার কাছে সে রকমই তথ্য রয়েছে।”
চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য নাটকীয় ভাবে বদলে গিয়েছিল পরিস্থিতি। কর্মসমিতির জরুরি বৈঠকের পরে লাল-হলুদ কর্তারা জানান, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে চূড়ান্ত চুক্তির কী কী শর্তে আপত্তি রয়েছে, তা বোঝাতে চান। এর পরেই নিজেকে সরিয়ে নেন প্রাক্তন সচিব। তিনি অভিযোগ করেন, ইস্টবেঙ্গল কর্তারা চুক্তির যে সাতটি শর্ত পরিবর্তন করার দাবি করেছিলেন, তা মেনে নেয় লগ্নিকারী সংস্থা। তার পরেও নতুন দু’টি শর্ত দেয় ক্লাব। এর মধ্যে অন্যতম হল, পাঁচ বছরের জন্য চুক্তির নিশ্চয়তা দেওয়া। লাল-হলুদের প্রাক্তন সচিবের শঙ্কা, চূড়ান্ত চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষরিত না হলে যে সাতটি শর্তের ক্ষেত্রে নমনীয় হয়েছিলেন লগ্নিকারী সংস্থার কর্তারা, তা প্রত্যাহার করে নিতে পারেন।
শুক্রবার কী নিয়ে আলোচনা হবে? বৈঠকের অন্যতম উদ্যোক্তা সুমিত মুখোপাধ্যায় বললেন, “২৬ জুলাইয়ের বৈঠকের পরে আমরা জানিয়েছিলাম, চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করা উচিত নয়। তার পরে বেশ কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছে। কয়েকটি বিষয়ে এখনও কেন আপত্তি রয়েছে, তা ব্যাখ্যা করা হবে। প্রত্যেকের মতামত নেওয়া হবে।” বিকাশ পাঁজির কথায়, “যা করার দু’এক দিনের মধ্যেই করতে হবে। হাতে সময় খুব কম। অথচ দল গঠনই এখনও পর্যন্ত শুরু হয়নি। আশা করছি, এই বৈঠক থেকেই হয়তো সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসবে।”