ছবি: পিটিআই।
চোটে জর্জরিত ভারত। প্রায় তৃতীয় দল খেলিয়েও অজিঙ্ক রাহানেরা ব্রিসবেন দুর্গে ফাটল ধরিয়ে দিয়ে গেলেন। অস্ট্রেলিয়ায় শুরু হয়ে গিয়েছে ময়নাতদন্ত।
মাইকেল ক্লার্ক এবং ব্রেট লি দু’জনেই এই হার মেনে নিতে পারছেন না। অধিনায়ক টিম পেনের উপরে পুরো দায় চাপাতে না চাইলেও সমালোচনা করতেও ছাড়ছেন না তাঁরা। দু’জনেই মনে করছেন, আরও আগ্রাসী হওয়া উচিত ছিল অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের।
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমকে ক্লার্ক বলেছেন, ‘‘ম্যাচটা দেখে আমার মনে হয়েছে, বেশ কিছু জায়গায় নেতিবাচক আচরণ ছিল। হারের আতঙ্ক গ্রাস করেছিল আমাদের। জেতার জন্য আগ্রাসন দেখানো প্রয়োজন ছিল।’’
বল-বিকৃতি কাণ্ডে অভিযুক্ত হওয়ার পরে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল স্টিভ স্মিথকে। তার পরে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিতে শুরু শুরু করেন টিম পেন। এখনও পর্যন্ত ২৩টি ম্যাচে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন পেন। জিতেছেন ১১টি ম্যাচ। ভারতের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে পর-পর দু’টি টেস্ট সিরিজে হার তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। উইকেটকিপার হিসেবেও একাধিক সুযোগ নষ্ট করেছেন তিনি। ক্লার্ক রাজি নন পেনকে রাঠগড়ায় দাঁড় করাতে। বলছেন, ‘‘দিনের শেষে আমরা ২০ ওভার বাকি থাকতে হারলাম নাকি শেষ বলে হারলাম, তা কেউ দেখবে না। এই সিরিজ জেতার জন্য এই ম্যাচটা জিততেই হত। ম্যাচের প্রথম বল থেকে শেষ বল পর্যন্ত বিপক্ষের উপরে চেপে বসা উচিত ছিল আমাদের।’’ কেন পেনের দিকে আরও জোরাল ভাবে আঙুল তুলছেন না? ক্লার্কের জবাব, ‘‘একটা সময় অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ হারলে অধিনায়ককেই দোষারোপ করা হত। কিন্তু আমি নেতৃত্ব দেওয়ার সময় থেকে দেখছি অধিনায়ককে দোষারোপ করা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন শীর্ষ নির্বাচক, হেড কোচ, অন্য বিশেষজ্ঞদের দায় অনেক বেশি। আমার বাবার আমলে কিন্তু দলের ব্যর্থতার দায় নিতে হত অধিনায়ককেই।’’
প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় পেসার ব্রেট লিও পেনকে দোষারোপ করতে চান না। বলেছেন, ‘‘নেতৃত্বের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পেন কিন্তু যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’’ লি যোগ করেন, ‘‘পেনের কিপিং নিয়ে যদি প্রশ্ন ওঠে, তা হলে বলতেই হয়, ও কিন্তু একা ক্যাচ ফস্কায়নি। উইকেটকিপারদের ইতিহাস দেখলেই বোঝা যাবে, প্রত্যেকেই খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যায়। কিন্তু ব্যাটিং নিয়ে পেনের বিরুদ্ধে কথা বলা যায় না।’’
লি আরও বলেন, ‘‘মার্নাস লাবুশেনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েছে পেন। ওর টেকনিক কিন্তু দলের অন্যতম সেরা। ভারতীয় বোলারদের বিরুদ্ধে ও লড়াই করার মানসিকতা দেখিয়েছে।’’ পেনের নেতৃত্ব দেওয়ার ভঙ্গি নিয়েও খুব অসন্তুষ্ট নন লি। তাঁর বিশ্লেষণ, ‘‘ও কিন্তু খুবই ঠান্ডা মাথার অধিনায়ক। তবে সিডনি টেস্ট জেতার জন্য অন্য রকম কিছু করতে পারত।’’ যোগ করেন, ‘‘এটাও ভোলা উচিত নয়, ও যে পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে, তা সহজ নয়। একের পর এক সুযোগ তৈরি হচ্ছে। অথচ একটি উইকেটও পড়ছে না। অসহায় হয়ে পড়েছিল পেন। তাই বলে ওর ব্যাটিং ও কিপিং নিয়ে সমালোচনা করার মানে নেই।”
পেন নিজেও অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দিতে এখনও রাজি। ব্রিসবেন টেস্ট শেষে তিনি জানিয়েছেন, দায়িত্ব থেকে নিজে সরে যাচ্ছেন না। এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে তাঁর।