এটিকে মোহনবাগানের ডিরেক্টর পদ থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন সৃঞ্জয়। —ফাইল চিত্র
গৃহীত হল সৃঞ্জয় বসুর পদত্যাগপত্র। আনুষ্ঠানিক ভাবে মোহনবাগান ক্লাবের সচিব পদ থেকে সরে গেলেন তিনি। বৃহস্পতিবার কার্যকরী কমিটির বৈঠকে তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়। তাঁর জায়গায় আপাতত দায়িত্ব সামলাবেন সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। এটিকে মোহনবাগানের ডিরেক্টর পদ থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন সৃঞ্জয়। সেই পদে তাঁর জায়গায় এলেন তাঁরই ভাই সৌমিক বসু।
কেন পদত্যাগ করলেন সৃঞ্জয়? মোহনবাগান ক্লাবের ইতিহাসে এই ভাবে হঠাৎ সচিবের পদত্যাগের নজির খুব বেশি নেই। ক্লাবে কি কোনও অভ্যন্তরীণ সমস্যা আছে? নানা জায়গায় বিভিন্ন ক্লাব কর্তার নামে পোস্টার পড়েছে। এর মধ্যে কি কোনও রাজনৈতিক চাপ আছে?
অর্থ সচিব দেবাশিস দত্ত বললেন, ‘‘সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণে উনি সরে গিয়েছেন। আমার সঙ্গে ওঁর কথা হয়েছে। ক্লাব সভাপতি স্বপন সাধন বসুর সঙ্গেও এই নিয়ে আমার কথা হয়েছে। এটা ওঁদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত। ওঁরা কেউই চান না, এটা নিয়ে আলোচনা হোক। ফলে ওঁর পদত্যাগপত্র পাওয়ার পরে আমরা সঙ্গে সঙ্গে তা মেনে নিই। ওঁরা যখন চাইছেন না এটা নিয়ে আলোচনা হোক, আমাদের উচিত সেটাকে সম্মান করা।’’
নতুন দায়িত্ব নিয়ে সৌমিক বসু এবং সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
নানা জায়গায় ক্লাব কর্তাদের নামে পোস্টার পড়েছে। এটি মোহনবাগান ক্লাবের পক্ষে খুব একটা সুখের বিজ্ঞাপন নয়। দেবাশিস বলেন, ‘‘ক্লাব তো আর সমাজের বাইরে নয়। তা ছাড়া এখন নেটমাধ্যম অত্যন্ত শক্তিশালী। যে কেউ যা কিছু বলতে পারেন। শেষ পর্যন্ত সদস্যরা যা চাইবেন, সেটাই হবে।’’
ময়দানে কান পাতলে সৃঞ্জয়ের সরে যাওয়ার পিছনে নানা রাজনৈতিক চাপের কথা শোনা যাচ্ছে। দেবাশিস বললেন, ‘‘এখানে কোনও রাজনৈতিক চাপ নেই। সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূল, বিজেপি সব দলের সদস্য মোনবাগান ক্লাবে আছে। মোহনবাগান একটা সমুদ্র।’’
এটিকে কলকাতার সঙ্গে সংযুক্তি হওয়ার পরে এটিকে মোহনবাগান তৈরি হয়। সেই সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন সৃঞ্জয়। তিনি সেই পদটিও ছেড়ে দিয়েছেন। সেই জায়গাতে এসেছেন সৌমিক। ফলে এটিকে-তে মোহনবাগানের প্রতিনিধিত্বও সৌমিকই করবেন। সঙ্গে থাকবেন দেবাশিস। প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের জায়গায় সহ-সভাপতিও হয়েছেন সৌমিক।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ রায়, মলয় ঘটক। এঁরা দু’জনেই মোহনবাগানের সহ-সভাপতি।
দেবাশিস জানালেন, দুই-আড়াই মাসের মধ্যে ক্লাবের নির্বাচন সেরে ফেলা হবে। তার জন্য নির্বাচনী বোর্ড তৈরি হয়েছে। সেখানে রয়েছেন বিচারপতি অসীম রায়, কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী বিশ্বব্রত বসু মল্লিক, প্রাক্তন ফুটবলার শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিভিসি কর্তা সৌরেন্দ্র কুমার দত্ত এবং উমাপতিকুমারের নাতনি সোমা বসু।
যত দিন না নির্বাচন হচ্ছে, তত দিন সহ-সচিব সত্যজিৎ সচিবের দায়িত্ব সামলাবেন। দেবাশিস বলেন, ‘‘ক্লাবের সংবিধান অনুযায়ী সচিব সরে গেলে, অসুস্থ হলে, বিদেশে থাকলে বা অন্য যে কোনও কারণে কাজ করতে না পারলে তাঁর জায়গায় দায়িত্ব সামলানোর কথা সহ-সচিবের। সেই কারণে নিয়ম মেনেই সত্যজিৎ সচিবের কাজ সামলাবেন।
কোভিডের জন্য বন্ধ থাকা ক্লাব বৃহস্পতিবার খুলে দেওয়া হল। কোভিডবিধি মেনে ক্লাবে আসতে হবে। ক্লাব তাঁবুতে সংস্কারের কাজ চলছে। কিছু কাজ এখনও বাকি আছে। সেই কাজ শেষ হলে আনুষ্ঠানিক ভাবে তার উদ্বোধন হবে।