মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ফাইল চিত্র।
লাল-হলুদের লগ্নিকারী নিয়ে ফের নতুন কোনও নাটকীয় মোড় তৈরি হতে চলেছে? শুক্রবার এক দিকে যখন আইপিএল প্লে-অফ নিয়ে উত্তেজনা চলছে ভারতীয় ক্রিকেট দুনিয়ায়, তখন বঙ্গ ক্রীড়া মহলে খুবই গোপনে ঘুরতে শুরু করেছে এমনই সম্ভাবনা।
ইস্টবেঙ্গলের নতুন লগ্নিকারী হিসেবে ইমামির জুটি বাঁধার কথা ঘোষণা হয়েছিল নবান্ন থেকে বুধবারেই। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সেই ঘোষণা করেছিলেন। তা শুনে অনেকের মনে হয়েছিল, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তা হলে সেই আলাপ-আলোচনায় কি অকাল যবনিকা পড়ে গেল?
কিন্তু দ্রুত পট পরিবর্তন হতে থাকে শুক্রবার সকাল থেকেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইস্টবেঙ্গলের প্রভাবশালী কর্তাদের মতে, এ নিয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে। কর্তাদের দাবি, সেই কথোপকথনে ম্যান ইউ-কে নিয়ে আসা যায় কি না, তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা হয়েছে।
ইমামি সংস্থার সঙ্গে লাল-হলুদের জুটি তৈরি হওয়ার কথাবার্তা ঘোষণা হয়ে গেলেও সকলেই বুঝতে পারছেন, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড মানে কত বড় ব্যাপার। ক্রীড়া দুনিয়ার সব চেয়ে জনপ্রিয় ক্লাব হিসেবে ম্যান ইউয়ের নাম করলেও হয়তো অত্যুক্তি করা হয় না। তাই ইস্টবেঙ্গলের মতো কলকাতা তথা ভারতের জনপ্রিয় ক্লাবের সঙ্গে জর্জ বেস্ট, ববি চার্লটন, এরিক কঁতোনা, ডেভিড বেকহ্যাম, ক্রিশ্চিয়ানো রোনল্ডোদের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবকে যুক্ত করতে পারলে, তা এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ উপহার দিতে পারে।
জানা গিয়েছে, ম্যান ইউ-কে এখনও কলকাতার ক্লাবে নিয়ে আসা যায় কি না, সেই আলোচনাই সৌরভের সঙ্গে হয়েছে। তবে ইমামি সংস্থার সঙ্গে লাল-হলুদের ভবিষ্যৎ কী হবে বা কোন ভূমিকায় ম্যান ইউ-কে এখনও আনা সম্ভব বা দু’পক্ষকেই যুক্ত করার কথা ভাবা হবে কি না, এ সব আলোচনাসাপেক্ষ। শুধু ইস্টবেঙ্গল বলেই নয়, ম্যান ইউ-এর আগ্রহ দেখানোর অর্থ আরও সুদূরপ্রসারী বলে অনেকের মনে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই আইপিএলে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের কর্তারা। কে বলতে পারে, তাঁরা ভবিষ্যতে বাংলার অন্য খেলা বা ক্রিকেটের দিকেও হাত বাড়িয়ে দিতে চাইবেন না?
জানা গিয়েছে, ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ক্লাবের বেশ উচ্চ স্তরে কথাবার্তা বলেছিলেন সৌরভ। তারা যথেষ্ট আগ্রহ প্রকাশও করছিল, এমন খবর ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে। সৌরভের এখন পরীক্ষা, নতুন করে ম্যান ইউ কর্তাদের রাজি করানো। কারণ, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব যে নতুন লগ্নিকারীর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে পাকা কথা সেরে ফেলেছে, সে খবর ওল্ড ট্র্যাফোর্ডেও পৌঁছে গিয়েছে, এমন ধরে নেওয়াই স্বাভাবিক।
ক্রিকেটজীবনে অনেক হিসাব উল্টে দিয়ে অসাধারণ সব প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন বেহালার বাঁ হাতি। যখন সবাই ধরে নিয়েছিল তিনি বোর্ড প্রেসিডেন্টের পদের লড়াই থেকে ছিটকে গিয়েছেন, সকলকে চমকে দিয়ে বোর্ডের মসনদ দখল করে নিয়েছেন। এ বার কি পারবেন, আসব-আসব করেও অন্য লগ্নিকারীর আগমনে পিছিয়ে যাওয়া ম্যান ইউ-কে ফের কলকাতা ময়দান-মুখী করতে? ‘ম্যাচ’ কঠিন, সন্দেহ নেই। যদি পারেন, শুধু বঙ্গ খেলা কেন, ভারতীয় ক্রীড়া আকাশেই এক অনন্য রামধনু তৈরি হবে!
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।