বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল শ্রী সিমেন্ট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এটি সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু এই বছর এপ্রিলে লাল-হলুদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয় শ্রী সিমেন্টের। তার পর এ বার উত্তরপ্রদেশে বিনিয়োগ করছে তারা।
যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে ১২০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ করছে শ্রী সিমেন্ট। গত শনিবার শ্রী সিমেন্টের প্রতিনিধিরা লখনউতে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের উপস্থিতিতে ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পাকা কথা হয়। বাকি ৬০০ কোটি টাকা আগেই বিনিয়োগ করেছিল শ্রী সিমেন্ট। লখনউতে ‘গ্রাউন্ড ব্রেকিং সামিট ৩’ অনুষ্ঠানে ছিলেন শ্রী সিমেন্টের এমডি হরিমোহন বাঙ্গুর। বুলন্দশহর জেলায় ৬০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ ইতিমধ্যেই করেছে এই সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সংস্থা। পিছিয়ে পড়া জেলা এটাতে আরও ৬০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ করা হবে।
বিহার, ছত্তীসগঢ়, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ডে বিনিয়োগের পরে এ বার উত্তরপ্রদেশেও পা রাখল শ্রী সিমেন্ট। ইস্টবেঙ্গল থেকে সরে দাঁড়ানো মানেই বাংলার সঙ্গেও সব সম্পর্ক শেষ হয়ে গেল, এমনটা অবশ্য নয়। যা জানা গেল, এই রাজ্যেও খুব শীঘ্রই বিনিয়োগ করতে পারে তারা।
২০২০ সালে ইস্টবেঙ্গলের আইএসএলে খেলা বড় প্রশ্নের মুখে পড়েছিল। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সমস্যার সমাধান হয়। লাল-হলুদের সঙ্গে যুক্ত হয় শ্রী সিমেন্ট। লাল-হলুদের নতুন নাম হয় এসসি ইস্টবেঙ্গল। গত দু’বছরে শ্রী সিমেন্ট ১০০ কোটি টাকার উপর বিনিয়োগ করেছিল লাল-হলুদে। প্রথম বছরে তারা ৫৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। পরের বছর এই অঙ্কটা আরও বেশি ছিল। এর মধ্যে আইএসএল-এ অংশগ্রহণের জন্য দিতে হয়েছিল সাড়ে ১৮ কোটি টাকা, দল তৈরিতে লেগেছিল প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি টাকা, কোচিং স্টাফদের আনতে খরচ হয়েছিল প্রায় চার কোটি টাকা, বিমায় লেগেছিল ১ কোটি, মাঠ তৈরিতে প্রায় ২৫ লক্ষ, নেটমাধ্যম পরিচালনা করতে প্রায় ৭৫ লক্ষ, দলের গোয়া যাওয়া এবং সেখানে বিভিন্ন কর্মীদের রাখার জন্য প্রায় ৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল শ্রী সিমেন্টের। এর সঙ্গে হোটেলে দলকে রাখার জন্য দিতে হয়েছিল প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। শ্রী সিমেন্ট না কি এই দু’বছরে পেয়েছিল খুব বেশি হলে ১৪ থেকে ১৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্পনসরশিপ থেকে ৪০-৫০ লক্ষ টাকা। বাকিটা আইএসএল খেলে।
শ্রী সিমেন্ট যে আর ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে থাকবে না, তা ফেব্রুয়ারিতে জানিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। এপ্রিলে সরকারি ভাবে এই বিচ্ছেদের কথা জানানো হয়। দিদির হাত ধরে লাল-হলুদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল শ্রী সিমেন্ট। শুরু থেকেই সেই সম্পর্ক ভাল ছিল না। অবশেষে তারা যোগী রাজ্যে বিনিয়োগ করছে।