জুটি: দলের তৃতীয় গোল করার পরে মেসির সঙ্গে নেমার। ছবি রয়টার্স।
এমনিতে পরের রাউন্ডে যাওয়া নিয়ে কোনও সংশয় ছিল না। কিন্তু মঙ্গলবার ঘরের মাঠে লিয়োনেল মেসি, কিলিয়া এমবাপে এবং নেমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়রের (এমএনএম) একচ্ছত্র শাসন দেখার পরে রীতিমতো উৎসবে মেতেছেন প্যারিস সঁ জরমঁ সমর্থকেরা। যে আনন্দে যোগ দিয়েছেন ম্যানেজার ক্রিস্তোফ গালচিয়ে। যিনি জানিয়েছেন, বিশ্বসেরা ত্রিফলার ফুটবল দেখার পরে তিনি স্বর্গীয় সুখ উপভোগ করছেন।
মঙ্গলবার প্যারিসে পিএসজি ইজ়রায়েলের ম্যাক্কাবি হাইফাকে ৭-২ গোলে হারায়! জোড়া গোল করলেন মেসি (১৯ ও ৪৪ মিনিট) ও কিলিয়ান এমবাপে (৩২ ও ৬৪ মিনিট)। গোল পেলেন নেমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়র (৩৫ মিনিট) ও কার্লোস সোলারও (৮৪ মিনিট)। ম্যাক্কাবির বিরুদ্ধে পিএসজি একটি গোল আত্মঘাতী গোলও পায় শন গোল্ডবার্গের সৌজন্যে (৬৭ মিনিট)। ম্যাক্কাবির আবদুল্লা শেকও জোড়া গোল করেন।
মেসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে প্রথম ফুটবলার হিসেবে গ্রুপ পর্বে মোট ৮০ গোল করলেন। তার সঙ্গে এই নিয়ে পিএসজি টানা ১১ বার নক-আউট পর্বে উঠল। গালচিয়ে বলেছেন, “অনেকেই তিন তারকার সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করেছেন আমাকে। সেটা কতটা যথার্থ, তা নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে মাঠে এই তিন ফুটবলারের মধ্যে যে বোঝাপড়া দেখলাম, সেটা আমার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কোচ হিসেবে মনে হচ্ছে চাঁদের বুকে হাঁটছি।”
এ দিকে, মঙ্গলবার ডর্টমুন্ডের বিরুদ্ধে ড্রয়ের রাতে ম্যান সিটি ম্যানেজার পেপ গুয়ার্দিওলার দুশ্চিন্তা বাড়ালেন আর্লিং হালান্ড। পুরনো ক্লাবের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে পায়ে চোট পাওয়ার পরে তাঁকে আর মাঠে নামানোর ঝুঁকি নেননি পেপ। ম্যাচের পরে তিনি বলেছেন, “টানা ম্যাচ খেলার ক্লান্তি ওর চেহারায় দেখতে পেয়েছি। ওর সামান্য জ্বরও ছিল। চোট পাওয়ার পরে তাই ঝুঁকি নিইনি।”
মঙ্গলবার বড় চমক দিয়েছে আরবি লাইপজ়িস। ঘরের মাঠে তারা ৩-২ গোলে হারিয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদকে। জোসকো ভার্দিয়োল ও ক্রিস্টোফার এনকুনুর গোলে (১৩ ও ১৮ মিনিট) ২-০ এগিয়ে যায়। ৪৪ মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়র ব্যবধান কমালেও ৮১ মিনিটে ৩-১ করেন টিমো ওয়ার্নার। করিম বেঞ্জেমাহীন রিয়ালের দ্বিতীয় গোল রদ্রিগো করেন পেনাল্টি থেকে সংযুক্ত সময়ে। রিয়াল ম্যানেজার কার্লো আনচেলোত্তির মন্তব্য, “প্রতিপক্ষ দেখিয়ে দিয়েছে, এই দলের দুর্বলতা এখনও রয়ে গিয়েছে।”
এ দিকে এফসি সালজ়বুর্গকে ২-১ হারিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে চেলসি। গোল করেন মাতেয়ো কোভাচিচ ও কাই হাভার্ৎজ় (২৩ ও ৬৩ মিনিটে)। সালজ়বুর্গের জুনিয়র আদামু ১-১ করেছিলেন। বেনফিকাও শেষ ষোলোয় পৌঁছে গিয়েছে মঙ্গলবার জুভেন্টাসকে ৪-৩ হারিয়ে। ইউরোপের অন্যতম সেরা তুরিনের ক্লাব নক-আউটেই উঠতে পারল না। বেনফিকার গোলদাতা আন্তোনিয়ো সিলভা (১৭মিনিট), জোয়াও মারিয়ো (২৮ মিনিট, পেনাল্টি) ও রাফা সিলভা (৩৫ ও ৫০ মিনিট)। জুভেন্টাসের তিন গোলদাতা মোয়েজ় কিন, আর্কাদিয়াজ় মিলিক ও ওয়েস্টন ম্যাকেনি।
দুরন্ত বায়ার্ন: চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফিরতি পর্বেও পুরনো ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের বিরুদ্ধে গোল পেলেন না রবার্ট লেয়নডস্কি। বুধবার ঘরের মাঠে ০-৩ হারল বার্সেলোনা। অবশ্য খেলা শুরু হওয়ার আগেই নক-আউটে লেয়নডস্কিদের খেলার আশা শেষ হয়ে গিয়েছিল ইন্টার মিলান ৪-০ ভিক্টোরিয়া প্লাজ়েনকে চূর্ণ করায়। বায়ার্নের হয়ে গোল করেন সাদিয়ো মানে, এরিক ম্যাক্সিম চুপো মতিং ও বাঁজামা পাভা।
শেষ ষোলোয় লিভারপুল: আয়াখ্স আমস্টারডামকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেল লিভারপুর। গোল করেন মহম্মদ সালাহ, ডারউইন নুনেজ় ও হার্ভি এলিয়ট। এই গ্রুপ থেকে সেরা হয়ে শেষ ষোলোয় উঠল নাপোলিও। রেঞ্জার্সকে ৩-০ হারাল দিয়েগো মারাদোনার পুরনো ক্লাব। তবে স্পোর্টিং লিসবনের সঙ্গে ১-১ ড্র করল টটেনহ্যাম। আতলেতিকো দে মাদ্রিদ ২-২ ড্র করল বায়ার লেভারকুসেনের সঙ্গে।