যুযুধান: (বাঁ দিকে) সাংবাদিক বৈঠকের আগে লক্ষ্যভেদের চেষ্টায় ইংল্যান্ডের লিউক। নেদারল্যান্ডসের প্রস্তুতিতে জ়াভি ও গাকপো। ছবি: সংগৃহীত।
শেষ ইউরোতে ফাইনালে উঠে ইটালির বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে হারতে হয়েছিল ইংল্যান্ডকে। সামনে গিয়েও অধরা রয়ে গিয়েছিল ট্রফি জয়। চলতি ইউরোতে শেষ আটের লড়াইয়ে টাইব্রেকারে সুইৎজ়ারল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠলেও ইংল্যান্ডের খেলার ধরণ নিয়ে সমালোচনার ঝড় এখনও অব্যাহত। তবে তাতে পাত্তা দিতে চাইছেন না কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। পাশে দাঁড়াচ্ছেন ডিফেন্ডার লিউক শ’ও।
কোচ হিসেবে নিজের শততম ম্যাচ স্মরণীয় করে রেখেছেন সাউথগেট। জানেন ১০১তম ম্যাচে দল হেরে গেলে তাঁর এই কীর্তি কেউ মনে রাখবে না। কিন্তু শেষ চারের লড়াই আরও কঠিন। সামনে রোনাল্ড কোমানের নেদারল্যান্ডস। সাউথগেট বলছেন, “আমরা কখনও ইউরো চ্যাম্পিয়ন হইনি। কখনও ঘরের বাইরে ফাইনালও খেলিনি। এ বারে সব নজির ভেঙে দিতে মরিয়া।”
অন্য দিকে ফাইনালে ওঠার জন্য মরিয়া নেদারল্যান্ডসও। জার্মানির মাটিতে ১৯৮৮ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে হারিয়ে ইউরোতে চ্যাম্পিয়ন হয় নেদারল্যান্ডস। সেই দলের এক জন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন কোমান। ফলে কোচ হিসেবে ৩৬ বছর পরে ফের জার্মানিতেই ইউরো সেরা হওয়ার সুযোগ ডাচ কোচের। কিন্তু তার আগে দলকে ইংল্যান্ডের বাধা টপকাতে হবে। কোমানের কথায়, “বুধবার এক ঐতিহাসিক রাতের সাক্ষী থাকতে চলেছি। সেমিফাইনালের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। ফাইনালে উঠলে আমার পছন্দের প্রতিপক্ষ হবে স্পেন।”
তবে ডাচদের কাজ কিছুটা সহজ করে দিতে পারেন ডাচ ‘গুপ্তচর’ নাথান আকে। ২০২০ সাল থেকে তিনি খেলেন ম্যাঞ্চেস্টার সিটির হয়ে। ফলে অনেক ইংরেজ ফুটবলারের নাড়ি-নক্ষত্র তাঁর নখদর্পণে। আকে বলেন, “ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুবাদে ইংল্যান্ডের অনেক ফুটবলারকে আমি চিনি। ওদের শক্তি-দুর্বলতার জায়গাগুলোও জানি। আরও বলেন, “প্রতিযোগিতার শুরু থেকে আমরা কঠিন পথ পেরিয়ে এসেছি। এগিয়ে থেকে নামব না পিছিয়ে থেকে, তা নিয়ে কোনও ভাবনা নেই। দলের প্রত্যেকে নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।”
শেষ চারের দ্বৈরথের আগে ইংল্যান্ডের জন্য সুখবর লিউক শ এর সুস্থ হয়ে ওঠা। সোমবার ২৮ বছরের ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ফুটবলার বলেছেন, “পুরো ৯০ মিনিট খেলার জন্য প্রস্তুত। তবে শেষ সিদ্ধান্ত কোচ নেবেন।” ফেব্রুয়ারিতে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়ার পরে প্রায় চার মাস লেগে যায় লিউকের সেরে উঠতে। প্রথম চার ম্যাচ বেঞ্চে বসে থাকার পরে শেষ আটের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৭৮ মিনিটে পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নেমছিলেন। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে বলেন, “ডাচদের কোনও দুর্বলতা আমাদের চোখে পড়েনি। ওরা অন্যতম শক্তিশালী দল। আমরা শুধু নিজেদের নিয়েই ভাবছি।”
শুধু ইংল্যান্ডের ফুটবলাররা নয়, সমালোচনা হয়েছে কোচ সাউথগেটের ফুটবল দর্শন নিয়েও। তবে কোচের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন লিউক। বলে দিলেন, “জানি না কেন গ্যারেথের সমালোচনা করা হচ্ছে? উনি কোচ হিসেবে দলকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। দলের খেলা ভাল লাগল কি না তা নিয়ে ভাবতে চাই না। আমরা এখন শেষ চারে এসে পৌঁছেছি। সেটাই আমার কাছে বড় ব্যাপার।”