আন্তোনিয় হাবাস। —ফাইল চিত্র।
বেশ কয়েক বছর পর কলকাতা ডার্বিতে খাতায় কলমে পিছিয়ে থেকে নামবে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। দলের প্রথম সারির আট জন ভারতীয় ফুটবলার নেই। তাঁদের বাদ দিয়েই সুপার কাপে খেলছে মোহনবাগান। এমন অবস্থায় সুপার কাপের সেমিফাইনাল খেলতে নামছে সবুজ-মেরুন।
গ্রুপে নিজেদের প্রথম দু’টি ম্যাচ জিতে নিয়েছে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল। শুক্রবার এই দুই দলের সমর্থকেরা তাকিয়ে থাকবে জয়ের দিকে। শুধু সেমিফাইনালে ওঠা নয়, ডার্বি মানে মর্যাদার লড়াইও। আর সেই লড়াইয়ে মোহনবাগান দলে চোটের কারণে নেই আশিক কুরুনিয়ান এবং সাহাল আব্দুল সামাদ। যদিও সুস্থ থাকলেও সামাদকে পেত না সবুজ-মেরুন। কারণ ভারতীয় দলে রাখা হয়েছে তাঁকে। সেই সঙ্গে দেশের হয়ে খেলতে যাওয়া মনবীর সিংহ, দীপক টাংরি, অনিরুদ্ধ থাপা, লিস্টন কোলাসো, শুভাশিস বসু এবং বিশাল কাইতকেও পাবে না মোহনবাগান। অর্থাৎ ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে দলের সেরা গোলরক্ষক, ডিফেন্ডার, মিডফিল্ডার এবং স্ট্রাইকারদের বাদ দিয়েই খেলতে হবে সবুজ-মেরুনকে।
তবে সুপার কাপে মোহনবাগানের ডাগ আউটে থাকবেন কোচ অ্যান্তোনিয় হাবাস। আইএসএলে পর পর তিনটি ম্যাচ হারের পরেই ছেঁটে ফেলা হয়েছে জুয়ান ফেরান্দোকে। সুপার কাপের প্রথম দু’টি ম্যাচে দলকে প্রশিক্ষণ দেন ক্লিফোর্ড মিরান্ডা। তিনি দলের সহকারী কোচ। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে যদিও দেখা যাবে হাবাসকে। আইএসএলজয়ী কোচ এর আগেও সবুজ-মেরুনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তাঁকে সরিয়েই ফেরান্দোকে কোচ করেছিল মোহনবাগান। এই মরসুম শুরুর আগে হাবাসকে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর করে তারা। এ বার কোচ হিসাবে প্রত্যাবর্তন করছেন তিনি। প্রথম ম্যাচেই সামনে ইস্টবেঙ্গল। ডাগ আউটের নতুন অভিভাবকই ভরসা দিচ্ছেন মোহনবাগানকে।
আইএসএলে পর পর তিনটি ম্যাচ হেরে সুপার কাপে এসেছিল মোহনবাগান। এখানে প্রথম দু’টি ম্যাচ জিতে নিলেও দাপট দেখা যায়নি জেসন কামিন্স, দিমিত্রি পেত্রাতোসদের খেলায়। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে পিছিয়ে ছিল মোহনবাগান। ৮৭ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে থাকার পরে একটি আত্মঘাতী গোল ও একটি পেনাল্টি থেকে গোলে শেষ পর্যন্ত ২-১ ফলে জিতেছিল সবুজ-মেরুন। শ্রীনিডি ডেকানের বিরুদ্ধেও মোহনবাগান জিতেছিল ২-১ গোলে। সবুজ-মেরুনের দাপট হারানোর পিছনে অবশ্যই বড় কারণ এত জন ফুটবলারের না থাকা।
সুপার কাপের ম্যাচগুলিতে মোহনবাগানের খেলায় বোঝাপড়ার অভাব দেখা গিয়েছে। দুই ডিফেন্ডার ব্রেন্ডন হামিল ও রাজ বাসফোরের মধ্যে ফাঁক তৈরি হচ্ছে। সুহেল ভাট আক্রমণে মনবীরের অভাব ঢাকতে পারছেন না। মোহনবাগানের ছন্নছাড়া ফুটবলের সুযোগ নিয়ে গোল করে যাচ্ছেন বিপক্ষের ফুটবলারেরা। ডার্বিতে সেই ভুল হলে মুশকিল। ভারতীয় ফুটবলারদের সাহায্য না পেয়ে কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলেছেন কামিন্সেরাও। বিদেশিহীন হায়দরাবাদ বেগ দিচ্ছিল মোহনবাগানকে। ইস্টবেঙ্গল দলকে সেখানে অনেক গুছিয়ে নিয়েছেন কোচ কার্লোস কুয়াদ্রত। তাঁর প্রশিক্ষণে ইস্টবেঙ্গলের খেলায় সৌন্দর্য সৃষ্টি হচ্ছে। সেট পিস থেকেও গোল করছে লাল-হলুদ। এই ইস্টবেঙ্গলকে আটকাতে হলে ছন্নছাড়া ফুটবল খেললে হবে না। অভিজ্ঞ হাবাস নিশ্চয়ই সেই হোমওয়ার্ক করেই ভুবনেশ্বর গিয়েছেন।