Kalinga Super Cup

রেসের ঘোড়া ইস্টবেঙ্গল, বদলে গিয়েছে খেলার ধরন, শুক্র ডার্বিতে অ্যাডভান্টেজ লাল-হলুদ, কেন?

আইএসএলের শুরুর দিকে মাঠে অনেক নড়বড়ে দেখাত ইস্টবেঙ্গলকে। কিন্তু সময় যত গড়াচ্ছে তত খেলার ধরন বদলে গিয়েছে তাদের। সুপার কাপের ডার্বির আগে তারা রেসের ঘোড়ার মতো ছুটছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:২৪
Share:

অনুশীলনে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারেরা। —ফাইল চিত্র

মাঠে ফুল ফোটাচ্ছেন ক্লেটন সিলভা, সউল ক্রেসপোরা। আইএসএলের শুরুর দিকে মাঠে অনেক নড়বড়ে দেখাত ইস্টবেঙ্গলকে। কিন্তু সময় যত গড়াচ্ছে তত খেলার ধরন বদলে গিয়েছে তাদের। সুপার কাপের ডার্বির আগে তারা রেসের ঘোড়ার মতো ছুটছে। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে বলা যেতে পারে অ্যাডভান্টেজ ইস্টবেঙ্গল।

Advertisement

সুপার কাপের গ্রুপ পর্বের প্রথম দু’ম্যাচে অনেক ঝলমলে দেখিয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। তারা দু’টি ম্যাচ জিতেছে বলে নয়, অনেক আত্মবিশ্বাসী ফুটবল খেলছেন লাল-হলুদ ফুটবলারেরা। ম্যাচে দাপট দেখাচ্ছেন তাঁরা। রক্ষণ থেকে মাঝমাঠ হয়ে আক্রমণ, প্রতিটি বিভাগে ভরসা দেখাচ্ছেন ফুটবলারেরা। কিন্তু কী ভাবে বদলে গেল ইস্টবেঙ্গলের খেলা? নেপথ্য কারণ কী?

ইস্টবেঙ্গলের খেলা বদলের বড় কৃতিত্ব প্রাপ্য কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের। ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে পরিচিত কুয়াদ্রাত। বেঙ্গালুরু এফসির মতো চ্যাম্পিয়ন দলের কোচ ছিলেন। তাই তিনি জানেন, কী ভাবে দলকে ভাল জায়গায় নিয়ে যেতে হয়। দায়িত্ব নেওয়ার পরে রাতারাতি খোলনলচে বদলে ফেলার চেষ্টা করেননি কুয়াদ্রাত। প্রথমে দেখেছেন, কোথায় কোথায় খামতি রয়েছে। তার পরে সেই খামতি ভরাট করার দিকে মন দিয়েছেন। তাতেই সফল তিনি।

Advertisement

ইস্টবেঙ্গলের দেশীয় ফুটবলারদের মধ্যে মহেশ নাওরেম সিংহ ও লালচুংনুঙ্গা প্রথম থেকেই ভাল খেলছিলেন। সঙ্গে প্রভসুখন গিলের মতো ভাল গোলরক্ষক পেয়েছে তারা। নন্দকুমারও ভাল ফুটবলার। কুয়াদ্রাত দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রথম ডার্বিতে নন্দের করা দুরন্ত গোলেই জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। এই ভারতীয় ফুটবলারদের প্রতি ম্যাচে খেলিয়েছেন কুয়াদ্রাত। তাঁদের উপর ভরসা রেখেছেন। শৌভিক চক্রবর্তীকে ব্যবহার করেছেন রক্ষণের সামনে ব্লকার হিসাবে। এই পরিকল্পনা কাজে লেগেছে।

আইএসএল চলাকালীন ইস্টবেঙ্গলকে সমস্যায় ফেলেছিল দলের রক্ষণ। গোল করলেও তা ধরে রাখতে পারছিল না তারা। এখন দলে দুই বিদেশি ডিফেন্ডার। জোসে পারদো আগেই ছিলেন। সুপার কাপে তাঁর সঙ্গে জুড়েছেন হিজাজি মাহের। প্রথম ম্যাচে গোলও করেছেন তিনি। তাঁদের পাশে দুই প্রান্তে খেলছেন মহম্মদ রাকিপ ও নিশু কুমার। রক্ষণের পাশাপাশি আক্রমণেও উঠছেন তাঁরা।

মাঝমাঠে ভরসা দিচ্ছেন সউল ক্রেসপো ও বোরহা হেরেরা। ক্রেসপো সেট পিস থেকে বেশ ভাল। কর্নার বা ফ্রি কিকে ভয়ঙ্কর হতে পারেন। আর এক জন ফুটবলারের কথা আলাদা করে বলতে হয়। ক্লেটন সিলভা। দলের অধিনায়ক। সত্যিই অধিনায়কের মতো দায়িত্ব নিয়ে খেলেন তিনি। খেলা তৈরি করার পাশাপাশি গোলটাও খুব ভাল চেনেন। ডান পা খুব ভাল চলে। ইস্টবেঙ্গলের পুরনো ফুটবলার ক্লেটন ধীরে ধীরে নিজের ফর্মে ফিরেছেন। তাতে অনেক সুবিধা হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। হাভিয়ের সিভেরিয়ো এখনও তেমন নজর না কাড়লেও সুপার কাপে আগের ম্যাচে গোল করেছেন।

লম্বা বলে খেলার বদলে ছোট ছোট পাসে খেলছে ইস্টবেঙ্গল। বলের দখল নিজেদের কাছে রাখছে। রক্ষণ জমাট করে আক্রমণে উঠছে। কোচের কাছে রয়েছে প্ল্যান এ, বি, সি। প্রান্ত ধরে আক্রমণে সমস্যা হলে থ্রু বল আসছে মাঝমাঠ দিয়ে। নইলে রয়েছে সেট পিস। তাই বিপক্ষ কোচের সমস্যা হচ্ছে পরিকল্পনা করতে। এই দলকে রুখতে। গত কয়েক বছরে ডার্বিতে অনেক বেশি শক্তিশালী দল নিয়ে নেমেছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগান। টানা ১০ ডার্বি না হারার পরে অবশেষে একটি ডার্বি হেরেছে বাগান। যদিও তার পরের ডার্বিতেই জিতেছে তারা। তবে শুক্রবার লড়াই সহজ হবে না মোহনবাগানের। কারণ, শুধু খাতায়-কলমে নয়, মাঠেও অনেক বেশি শক্তিশালী দেখাচ্ছে ইস্টবেঙ্গলকে। ডার্বির আগে রেসের ছটফটে ঘোড়া মনে হচ্ছে ক্লেটনদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement